বরাতের আশায়
কর্মহীন এইচআইটি
রাত নেই। তাই কাজ নেই হাওড়া ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট-এর (এইচআইটি) ইঞ্জিনিয়ারদের। গত কয়েক বছর ধরেই এমন চলছে।
১৯৫৬-এ হাওড়া শহরের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে এইচআইটি তৈরি করা হয়। তবে সত্তরের দশক থেকে কাজের জোয়ার আসে। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর কাজ, সেতুর অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি, ডুমুরজলায় আবাসন তৈরির মতো নানা কাজের বরাত পায় এইচআইটি। এই সব কাজ তদারকির জন্য এই সময়েই অনেক ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করা হয়। এইচআইটি সূত্রের খবর, এখন এক জন চিফ ইঞ্জিনিয়ার, তিন জন ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার, ১১ জন এগ্‌জিকিউভ ইঞ্জিনিয়ার, ২২ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার, ২৬ জন সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং ৭ জন সার্ভেয়ার আছেন। এইচআইটি-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার মৃন্ময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগে দম ফেলার ফুরসত ছিল না। কিন্তু নব্বুইয়ের দশকের গোড়ায় দ্বিতীয় হুগলি সেতু সম্পূর্ণ হওয়ার পরে কাজে ভাটা পড়ে। ’৯৬-এর পরে কাজ একেবারেই কমে যায়।’’ যদিও হাওড়া শহরে কয়েকটি উড়ালপুল, ছোটখাটো রাস্তা, বাস টার্মিনাস তৈরির মতো কিছু কাজের বরাত পায় এইচআইটি।
—নিজস্ব চিত্র।
এইচআইটি-র ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার তুষার দে বলেন, ‘‘এক সময়ে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পের কিছু কাজ পাওয়া যেত। কিন্তু পরে এই কাজের জন্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর পৃথক একটি বিভাগ খোলে। ফলে এইচআইটি কাজ হারায়।” এইচআইটি সূত্রে খবর, পুর ও নগরোন্নয়ন আইন সংশোধিত হওয়ার পরে হাওড়া পুরসভাও অনেক কাজ করতে শুরু করে। ফলে এইচআইটি-র কাজ আরও কমে যায়। কিছু কাজের বরাত পায় কেএমডিএ-ও।
মৃন্ময়বাবু বলেন, ‘‘যেখানে বছরে একশো কোটি টাকার বরাত পাওয়া দরকার, সেখানে বছরে মাত্র পাঁচ কোটি টাকার বরাত পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। ফলে ইঞ্জিনিয়ারদের হাতে কাজ নেই।’’ যদিও এইচআইটি-র চেয়ারম্যান শীতল সর্দার বলেন, ‘‘হাওড়ার পরিকাঠামো পুনরুজ্জীবনের পরিকল্পনা হচ্ছে। ফলে এইচআইটি-র সামনে নতুন সুযোগ এসেছে। সালকিয়ায় উড়ালপুল, রামরাজাতলা এবং কামারডাঙায় রেলক্রসিংয়ে উড়ালপুল, হাওড়া ড্রেনেজ ক্যানালের কাজ এবং নানা আবাসন তৈরির বরাত পাওয়ার চেষ্টা চলছে।” এইচআইটি সূত্রে খবর, ডোমজুড়ে একটি শিল্পবিকাশ কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা করেছে এইচআইটি। হাওড়া হাট তৈরির পরিকল্পনাও করছে তারা। এইচআইটি-র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বরাত না থাকায় দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ দেওয়া যাচ্ছে না। এটা খুবই দুঃখজনক। বরাত পাওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চলছে।’’ রাজ্যের আর্থিক সঙ্কটের কারণেই কি এইচটিআই-কে কাজ দেওয়া যাচ্ছে না? পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘তা নয়, বিভিন্ন প্রকল্পের পরিকল্পনা জমা পড়েছে। সেগুলির গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রয়োজনে নিশ্চয়ই সেগুলিতে অথর্র্ বরাদ্দ করা হবে।’




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.