খেলা
লক্ষ্যে অবিচল
টিভির পর্দায় দেখে খেলাটা ভাল লেগে যায় ছোট্ট রাহির। বাবা-মায়ের অনুমতিতে চর্চা শুরু। এর পরে প্রতিযোগিতায় নামা। সাফল্যও আসতে থাকে। আজ রাহি রাজ্য ও জাতীয় জিমন্যাস্টিকসে পরিচিত মুখ।
“তখন ওর আট বছর। এক দিকে, জিমন্যাস্টিকসের প্রতি ওর ভালবাসা। অন্য দিকে, শরীর সুস্থ রাখার চিন্তা। তাই হাওড়ার ব্যাতড় ব্যায়াম সমিতির জিমন্যাস্টিকস সেন্টারে ভর্তি করে দিই”, বলছিলেন রাহির মা মিতালি মণ্ডল। রাহি ব্যাতড় ব্যায়াম সমিতির দুই কোচ নীলমণি দে ও সঞ্জীব পাত্রর কাছে বছর দুয়েক অনুশীলন করে। এর পরে আন্তঃজেলা মিটে নামার সুযোগ পায়। প্রথম বার নেমেই ভল্টিং আর ফ্লোর ইভেন্টসে রুপো জেতে।
পাশাপাশি সে বছরই রাজ্য মিটে অনূর্ধ্ব দশ বিভাগে একটি রুপো একটি ব্রোঞ্জ জেতে রাহি। এর পরে ধারাবাহিক সাফল্য আসতে থাকে। মুম্বইতে ২০১০ ন্যাশনাল মিটে সাব জুনিয়রে একটি রুপো জেতে। ২০১১-এ হায়দরাবাদে সাব জুনিয়র ন্যাশনাল মিটে একটি সোনা, একটি রুপো পায়। ২০১২-য় জুনিয়র জাতীয় প্রতিযোগিতার ভল্টিং আর ফ্লোর ইভেন্টে জোড়া সোনা জিতে রেকর্ড করে।
জাতীয় ও রাজ্যস্তর মিলিয়ে সাঁত্রাগাছি মালিকপাড়ার ১৩ বছরের রাহির সংগ্রহে আছে ১৫টি পদক। রাহির বাবা স্বপনকুমার মণ্ডল স্কুলের শিক্ষক। তাঁর কথায়: “পরিবারে সকলেই খেলাধুলো ভালবাসে। কিন্তু রাহি যে এতটা এগিয়ে যাবে তা ভাবতে পারিনি। এই সাফল্যের সিংহভাগ কৃতিত্বই বেতড় ব্যায়াম সমিতির কোচ ও কর্মকর্তাদের।” রাহির বিষয়ে খুবই আশাবাদী কোচ নীলমণি দে ও সঞ্জীব পাত্র। তাঁরা জানালেন, রাহি প্রতিভাবান। পরিশ্রম করলে ও জাতীয় এমনকী আন্তর্জাতিক পদকও জিততে পারবে। মেচেদা উত্তর জিয়াদা হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী রাহি মণ্ডলের লক্ষ্য আন্তর্জাতিক সাফল্য। তাই সকালে দু’ঘণ্টা টানা অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে রাহি। তবে আন্তর্জাতিক সাফল্যের জন্য পরিশ্রমের পাশাপাশি দরকার উন্নত মানের পোশাক ও সরঞ্জামের। রাহির কথায়: “দামী পোশাক বা সরঞ্জাম কেনার সামর্থ্য নেই। শুধু এক বার জাতীয় খেতাবের জন্য চার হাজার টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। সাহায্য পেলে আরও ভাল অনুশীলন করতে পারতাম।”
ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.