|
|
|
|
|
|
মহিলা থানা |
ঠুঁটো জগন্নাথ |
সুপ্রিয় তরফদার |
কখনও ছাত্রীর শ্লীলতাহানি। কখনও মহিলাকে ঝোপে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ। একের পর এক এই ধরনের ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে, হাওড়ায় মহিলাদের নিরাপত্তা শিকেয়। অথচ এই হাওড়াতেই মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গত বছরের মে মাসে তৈরি হয়েছিল মহিলা থানা। অভিযোগ, এই পরিকল্পনা সফল হয়নি। তা ছাড়া মহিলা পুলিশ অফিসারের সংখ্যা কম থাকায় ঠিকমতো তদন্ত হচ্ছে না বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ২০১১-র ২৫ নভেম্বর রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে হাওড়ায় মহিলা থানা তৈরির অনুমোদন মেলে। ২০১২-র ৮ মে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের অধীনে এই থানার উদ্বোধন হয়। উদ্দেশ্য ছিল মহিলাদের নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি ঘটে যাওয়া অপরাধের দ্রুত তদন্ত করা। |
|
পুলিশ সূত্রের খবর, অনেক সময়ে নির্যাতিতারা পুরুষ অফিসারের সামনে অত্যাচারের কথা খুলে বলতে সঙ্কোচ বোধ করেন। তাই মহিলা অফিসারের সামনে তাঁদের কথা বলতে সুবিধা হবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও অবস্থার উন্নতি হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও হাওড়া পুলিশের ডিসি (সদর) নিশাদ পারভেজ বলেন, “মহিলাদের নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের কর্তব্য। সেটা আমরা করছিও।”
হাওড়া পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১১-য় হাওড়া শহরে ধর্ষণ বাদে মহিলা নির্যাতনের সংখ্যা ছিল ৬১৪। ২০১২-য় তা দাঁড়িয়েছে ১০২৯-এ। এই সময়েই ধর্ষণের অভিযোগ ২৪ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩১। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য জগাছা ধর্ষণ-কাণ্ড। জগাছার নিগৃহীতার কথায়: “মহিলা থানা তৈরি হওয়া সত্ত্বেও আমি কোনও সুবিধা পাইনি।’’ হাওড়া বিজয়কৃষ্ণ গার্লস কলেজের এক ছাত্রী বললেন, “কলেজের সামনের মোড়ে মাঝেমধ্যে কিছু লোক ইভটিজিং করে। কিন্তু মহিলা পুলিশ চোখেই পড়ে না।” যদিও হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডের দাবি, “ওই কলেজের কাছে সাদা পোশাকে পুলিশ থাকে।” |
|
মহিলাদের উপরে বাড়তে থাকা অপরাধের কারণে মহিলা থানার কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্তা বলেন, “মহিলা অফিসারের সংখ্যা কম। তাই তদন্তে অসুবিধা হচ্ছে।” নিয়ম অনুযায়ী একটি মহিলা থানায় এক জন ইনস্পেক্টর, আট জন এসআই, আট জন এএসআই এবং ৩০ জন মহিলা কনস্টেবল থাকার কথা। সেখানে হাওড়ার মহিলা থানায় রয়েছেন এক জন আইসি, দু’জন এসআই, এক জন এএসআই ও ১৫ জন কনস্টেবল।
কম মহিলা পুলিশের কথা স্বীকার করে নিশাদ পারভেজ বলেন, “মহিলা থানায় অফিসার পদের পুলিশের সংখ্যা সত্যিই কম। কিন্তু অন্যান্য কর্মীর সংখ্যা ঠিকই আছে।” পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি রাজ্য মহিলা পুলিশের কনস্টেবল পদের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই নিয়োগ শুরু হবে। পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে
অবশ্য দাবি করেন, ‘‘মহিলা থানা ভাল ভাবে কাজ করছে।’’ |
—নিজস্ব চিত্র। |
|
|
|
|
|