গেলেন তাপস চৌধুরীর বাড়ি
বাহিনীর পাশে দাঁড়ানোর কাজ শুরু নয়া সিপি-র
ক অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে নতুন পদে যোগ দিয়েছেন তিনি। বাহিনীর মনোবল ভেঙে পড়ার প্রশ্নে আলোড়িত পুলিশ মহল। নতুন পুলিশ কমিশনার সুরজিত্‌ কর পুরকায়স্থের কাছে তাই সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, সেই মনোবল যাতে ভেঙে না যায়, তা নিশ্চিত করা।
আর তার প্রথম ধাপ হিসেবে তিনি বেছে নিলেন নিহত পুলিশকর্মী, তাপস চৌধুরীর বাড়ি। কর্তব্যরত অবস্থায় এক দুষ্কৃতীর গুলিতে যাঁর মৃত্যুর ঘটনা অন্য মোড় দিয়েছে গার্ডেনরিচ-কাণ্ডে। যে ঘটনার তদন্তে নেমে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে গিয়ে সরে যেতে হয়েছে আগের পুলিশ কমিশনার রঞ্জিতকুমার পচনন্দাকে।
জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের সময়ে থানা ভাঙচুরের অভিযোগে ধৃতদের ভবানীপুর থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু। এর পরে পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণ-কাণ্ডে দময়ন্তী সেনের বদলি থেকে শুরু করে একের পর এক ঘটনায় শাসকদলের হস্তক্ষেপে পুলিশকর্মীদের মনোবল যে তলানিতে ঠেকেছিল, তা বারবারই প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু গার্ডেনরিচে কর্তব্যরত অবস্থায় দিনেদুপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে তাপস চৌধুরীর মৃত্যুর পরে পুলিশের একটি বড় অংশই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। হাসপাতালেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন পুলিশ কমিশনার পচনন্দা। বিক্ষোভ হয় বডিগার্ড লাইন্সে-ও। পরিস্থতি আঁচ করেই তখন পুলিশ কমিশনার অভিযুক্তদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে শুরু করেন। এর পরে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকেও সরিয়ে দেওয়ায় ফের ধাক্কা লাগে বাহিনীর মনোবলে। পুলিশকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে যে কাজ করা সম্ভব নয়, তা বুঝতে পেরেছেন নতুন সিপি। তাই পদে যোগ দিয়ে বাহিনীর মনোবল ফেরানোকেই প্রথম কাজ বলে মনে করছেন সুরজিত্ বাবু।
গার্ডেনরিচে দুষ্কৃতীর গুলিতে নিহত পুলিশ অফিসার তাপস চৌধুরীর বাড়িতে
তাঁর ছবির সামনে নবনিযুক্ত নগরপাল সুরজিত্ কর পুরকায়স্থ। শুক্রবার।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া হিসেবে প্রথমেই শুক্রবার দুপুরে পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের নিয়ে সুরজিত্‌বাবু পৌঁছে যান নিহত পুলিশকর্মী তাপসবাবুর বাড়িতে। এ দিন তাঁর শ্রাদ্ধশান্তির কাজ ছিল। বাড়িতে গিয়ে তাপসবাবুর ছবিতে মালা দেন পুলিশকর্তারা। তার পরে নতুন পুলিশ কমিশনার কথা বলেন নিহত ওই পুলিশকর্মীর স্ত্রী, ছেলে-মেয়ের সঙ্গে। মন দিয়ে শোনেন তাঁদের সব অভিযোগ।
মেয়ের চাকরির নিয়োগপত্রে কয়েকটি নির্দিষ্ট তথ্য নেই বলে জানিয়েছিলেন তাঁরা। তবে পরিবারের অন্য সদস্যদের দাবি, তড়িঘড়ি করার ফলে তনুশ্রীর চাকরির ক্ষেত্রে ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’ হয়নি। সেটা হয়ে গেলেই পাকা নিয়োগপত্র মিলবে বলে পুলিশ কমিশনার তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন। সংবাদমাধ্যমের কাছে নতুন পুলিশ কমিশনার অবশ্য কোনও বিষয় নিয়েই মুখ খোলেননি।
নিহত তাপস চৌধুরীর ছেলের সঙ্গে দীপা দাশমুন্সি।
তবে দায়িত্ব নিয়েই নিহত অফিসারের বাড়ি যাওয়ার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশের কর্মীরা। এমনই এক পুলিশকর্মীর বক্তব্য, “উচ্চপদস্থ কর্তারা যদি আমাদের সমস্যার কথা মন দিয়ে শোনেন, তা হলে আরও ভাল কাজ করার ইচ্ছে তৈরি হয়।” কর্মীদের একাংশ বলছে, গত কয়েক বছরে উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে নিচুতলার যোগাযোগ ঢিলে হওয়াতেই মনোবলে চিড় ধরছিল। সেই সঙ্গে দক্ষতাও কমছিল পাল্লা দিয়ে। এই অবস্থায় নতুন কমিশনার যদি এমন পদক্ষেপ করতে থাকেন, তা হলে সেই সমস্যা কলকাতা পুলিশ অচিরেই কাটিয়ে উঠবে। লালবাজারের এক কর্তা জানিয়েছেন, যোগাযোগ বাড়ানোর কাজ এ দিন থেকেই শুরু করে দিয়েছেন নতুন কমিশনার। তাই বিভিন্ন দফতরে গিয়ে কথা বলেছেন কর্মীদের সঙ্গে। আজ, শনিবার ওসি থেকে শুরু করে কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্তাকে বৈঠকে ডেকেছেন সুরজিত্‌বাবু।

—নিজস্ব চিত্র
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.