বছর তিরিশের রাই অ্যাংরি বার্ডের তুমুল ফ্যান। এতটাই যে, তাঁর টিশার্ট, ব্যাগ, পার্স, ওয়াটার বটল সবেতেই রাগী মুখের পাখিদের ছড়াছড়ি। সাতাশের মৌপর্ণাও অফিসের স্পোর্টসে ছোটদের ট্যাটু-র স্টলে হাতে আঁকিয়ে নেন অ্যাংরি বার্ডের মুখ। দিব্যি খুশি খুশি মুখে দেখান সহকর্মীদের। তাঁর মায়েরও খুবই পছন্দের অ্যাংরি বার্ডের ছবি আঁকা কাপ থেকে টিফিনবক্স।
ব্যস্ত কর্পোরেট অঙ্কিতের সবচেয়ে পছন্দের পোশাক সুপারম্যান টিশার্ট। রবিবার বিকেলের বন্ধুদের আলসে আড্ডায় সেটা পরা চাই-ই চাই। অঙ্কিতের বন্ধু জয়দীপের আবার টিশার্টের ছবিতে পছন্দের তালিকায় টিনটিন থেকে গারফিল্ড, মহারাজা মুসট্যাশ, এমনকী কার্টুনও।
বড়দের ব্যাকপাকেও হামেশাই ঝোলে নানা রকম মুখের স্মাইলি, এমনকী হালফিলের গোঁফওয়ালা স্মাইলিও। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং, সেন্ট জেভিয়ার্সের ইকনমিক্স থেকে কমার্স— সবারই রোজকার দিনযাপনে দিব্যি হাজির অ্যাংরি বার্ড থেকে সুপারম্যান, স্মাইলি কিংবা স্পাইডারম্যান।
সবক’টা জিনিসই কিন্তু প্রথমে তৈরি হয়েছিল ছোট্টদের কথা ভেবেই। অথচ তার প্রেমে এখন হাবুডুবু আঠেরো থেকে আটচল্লিশও। বিভিন্ন দোকানে তাই বড়দের তাকে আর পাঁচ রকম টিশার্টের সঙ্গেই ঠাঁই পায় অ্যাংরি বার্ড, সুপারম্যান বা স্পাইডারম্যান টিশার্ট। ফুটপাথে টিশার্টের দোকানি হাঁক পাড়েন, ‘অ্যাংরি বার্ড!’, ব্যাগ থেকে পার্স, স্যান্ডাল, চাবির রিং, মোবাইল কভার— সবেতেই হানা দেয় রাগী পাখিরা। শপিং মলের তাকে থরে থরে সাজানো সে সব জিনিস কিনতে বড়দের ভিড়টাও চেখে পড়ার মতোই। বড় দোকান থেকে ফুটপাথ, সর্বত্রই স্মাইলি কেনার বয়সটা এখন পৌঁছে গিয়েছে পঁয়ত্রিশেও। আর এই সমস্ত কিছুই অনলাইনে কেনার হিড়িকটাও নেহাত কম নয়।
অ্যাংরি বার্ড কিনছেন কেন? |
“দারুণ লাগে। এক একটা পাখির এক এক রকম চরিত্র। আলাদা আলাদা নাম। পুরো ব্যাপারটাই এত মজার, ছাড়া যায় না। হোক না ছোটদের জিনিস, ক্ষতি কী?” বলছেন রাই। আর যাদবপুরের পড়ুয়া শাওন জানাচ্ছেন, তাঁর সহপাঠীরা বেশির ভাগই অ্যাংরি বার্ড, স্মাইলি বা সুপারম্যানের ভক্ত। তাঁদের ব্যাগে, চটিতে, টিশার্টে, পার্সে সবেতেই এই সমস্ত জিনিসেরই চোখে পড়ার মতো উপস্থিতি।
নতুন কোনও ফ্যাশন ট্রেন্ড?
ডিজাইনার অভিষেক দত্ত বলছেন, “নিশ্চয়ই। ছুটির দিনে, সপ্তাহান্তের রিল্যাক্সড মুডে বড়রা অনেকেই অ্যাংরি বার্ড বা সুপারম্যান, হাল্ক— এ রকম নানা ধরনের চরিত্রের ছবি দেওয়া পোশাক পরছেন। ব্যবহার করছেন এ সবের বিভিন্ন অ্যাকসেসরি। আর স্মাইলি তো চ্যাট, মেল থেকেই চেনা। সব মিলিয়ে বেশ মজাদার ফাংকি লুক-ও হচ্ছে। টলিউড-বলিউডের তারকাদেরও এমন পোশাক বা অ্যাকসেসরি ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে। বড়দের পোশাক-অ্যাকসেসরিতে কার্টুন, কমিক্স স্ট্রিপ, খেলার চরিত্র ঢুকে পড়ার এই চলটা আসলে পাশ্চাত্যের। এখন এখানেও প্রযুক্তি এগিয়ে গিয়েছে। অত্যাধুনিক মোবাইলের সঙ্গে প্লে-স্টেশনেও অভ্যস্ত বড়রা। ফলে অ্যাংরি বার্ড বা সুপারম্যানে যে বড়রাও মজবেন, তাতে আর সন্দেহ কী!”
কিন্তু বড়দের পছন্দের দুনিয়ায় ছোটদের জিনিস এ ভাবে ঢুকে পড়াটা কি শুধুই ফ্যাশন ট্রেন্ড?
মনোবিদ মোহিত রণদীপের মতে, এক এক জনের ক্ষেত্রে এর পিছনে হয়তো এক একটা কারণ থাকে। কারও হয়তো এটা অবচেতনে শৈশবে ফেরার ইচ্ছে। তবে সার্বিক ভাবে এটা ভার্চুয়াল দুনিয়ায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ার ফল। তাঁর কথায়, “এখন বড়রাও অনেকটা সময় কাটান মোবাইল বা কম্পিউটারে গেম্স খেলে। ফলে সে সবের চরিত্রগুলোর সঙ্গে তাঁদের একটা সম্পর্ক বা অ্যাসোসিয়েশন তৈরি হয়। যা তাঁদের অজান্তেই অবসেশনে পরিণত হয়। তাই রোজকার দিনযাপনে পোশাক বা অ্যাকসেসরির পছন্দে ঢুকে পড়ে চরিত্রগুলো। আবার যখন এ ধরনের খেলা বা স্পাইডারম্যান, সুপারম্যানের মতো সিনেমাগুলো জনপ্রিয় হয়, তখন বড়রাও ছোটদের মতোই আকৃষ্ট হন।” তবে এর পাশাপাশি এমন ট্রেন্ড যে সাময়িক, সেটাও জানাতে ভুললেন না তিনি। মোহিত বলেন, “যত দিন ওই গেম্স বা সিনেমা জনপ্রিয় থাকে, এ ধরনের জিনিসপত্র ব্যবহারের হুজুগটাও তত দিনেরই।”
|
তারার আলো |
|
নারী নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক আলোচনাসভায় শাবানা আজমি,
রানি মুখোপাধ্যায় ও করিশ্মা কপূর। মঙ্গলবার, মুম্বইয়ে। ছবি: পিটিআই |
|
ললিত কলা অ্যাকাডেমির নতুন সভাপতি
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
ললিত কলা অ্যাকাডেমির নতুন সভাপতি হলেন কল্যাণ কুমার চক্রবর্তী। ১৯৭০ সালের আইএএস অফিসার দীর্ঘদিন মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিভিন্ন পদের দায়িত্বে ছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে প্রথম হওয়া কল্যাণবাবুর প্রত্নতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, রক আর্টের উপর একাধিক গবেষণাপত্র রয়েছে। অধিকর্তা হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন জাতীয় মিউজিয়ামেরও। উপাচার্য হন ন্যাশনাল মিউজিয়াম ইনস্টিটিউটের। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ললিত কলা অ্যাকাডেমির সভাপতি পদে তাঁর নিয়োগে সবুজ সঙ্কেত দেন। মন্ত্রক জানিয়েছে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কল্যাণবাবু সভাপতি হিসাবে দায়িত্বে থাকবেন। |