চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতাল
নেই শল্য চিকিৎসক, নষ্ট হচ্ছে দু’টি আধুনিক ওটি
দেখতে দেখতে চোদ্দো বছর পার। কিন্তু হুগলির চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালের পরিষেবার এখনও কোনও উন্নতি হল না। আদৌ তা হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বাসিন্দারা।
১৯৯৮ সালে বিশ্বব্যাঙ্কের বেশ কয়েক লক্ষ টাকায় হাসপাতালের নতুন ভবন এবং দু’টি উচ্চমানের ‘ওটি’ (অপারেশন থিয়েটর) নির্মাণ করা হয়। নতুন ভবন চালু করা হলেও শল্য চিকিৎসক এবং অন্যান্য কর্মী নিয়োগ না হওয়ায় চালু হয়নি ‘ওটি’। ফলে, ফিরে যেতে হচ্ছে অস্ত্রোপচার করাতে আসা রোগী এবং প্রসূতিদেরও। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তণিমা মণ্ডল অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, “ওই হাসপাতালে খুব শীঘ্রই শল্য চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে। ওটি-ও পুরোদস্তুর চালু করা হবে।”
স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই হাসপাতালের উপর নির্ভর করে সেখানকার দু’টি ব্লক-সহ আরামবাগ মহকুমার বেশ কিছুটা এলাকা। চণ্ডীতলা-লাগোয়া বেশ কিছুটা এলাকা হাওড়া জেলার মধ্যেও পড়ে। সেখানকার রোগীরাও এই গ্রামীণ হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। ডানকুনি শিল্পাঞ্চলে কোনও সরকারি হাসপাতাল নেই। ওই শিল্পাঞ্চলের রোগীদেরও বড় ভরসা এই হাসপাতাল। তার উপর চণ্ডীতলার খুব কাছ দিয়েই গিয়েছে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কদিল্লি রোড এবং দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে। এই দু’টি রাস্তায় রাস্তায় মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। জখমদের প্রাথমিক ভাবে চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালেই নিয়ে আসা হয়।
কবে কাজে লাগবে এ সব?। ছবি: প্রকাশ পাল।
এ হেন গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালটির পরিষেবার মান বাড়ানোর দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ‘ওটি’ চালু করতে হলে হাসপাতালের মান উন্নীত করা জরুরি। চণ্ডীতলা গ্রামীণ হাসপাতালটি বর্তমানে ৩০ শয্যার। সেটির মানোন্নয়নের জন্য শয্যাসংখ্যাও বাড়াতে হবে। এর আগেই হাসপাতালটিকে যাতে ১০০ শয্যা চালু করা যায়, তার জন্য বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় শয্যাও আসে। কিন্তু এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়ার কাজই শুরু করা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছরের পর বছর পড়ে থাকায় নতুন আনা শয্যা ইঁদুরে কেটে নষ্ট করে দিয়েছে। জলে গিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। হুঁশ নেই স্বাস্থ্য দফতরের। বর্তমান হাসপাতালটিতে পাঁচ জন চিকিৎসক থাকলেও কোনও শল্য চিকিৎসক নেই। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা জানান, হাসপাতালে ওটি চালু করতে গেলে কিছু নিয়োগ জরুরি। যেমন, শল্য চিকিৎসক, অ্যানাস্থেটিস্ট, ওটি-র জন্য অভিজ্ঞ নার্স, প্রসূতিদের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। কিন্তু কোনও নিয়োগই হয়নি বলে ওই হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে। বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির কর্তারা গত সেপ্টেম্বরে এই হাসপাতালটি পরিদর্শনে এসেছিলেন। এলাকার মানুষ তাঁদের কাছে হাসপাতালটিকে বেশি শয্যায় উন্নীত করা এবং ওটি চালু করার আর্জি ফের জানান। প্রতিনিধি দলের থেকে আশ্বাসও মেলে। কিন্তু চার মাস পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য দাবি করেছে, হাসপাতালটির পরিষেবা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি স্থানীয় বিধায়কের তহবিল থেকে পাওয়া ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকায় হাসপাতালে একটি শিশুদের পরিচর্যা ইউনিটের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। পাশাপাশি হাসপাতালে রক্ত সঞ্চয় করে রাখার প্রয়োজনীয় কাজও শুরু হয়েছে। শীঘ্রই ‘সিজার’ চালু করার আশ্বাস দিয়েছেন বিএমওএইচ অমিত সরকার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.