নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
পথেঘাটে বিপদের মোকাবিলা করতে ক্যারাটে শিখছে কোচবিহারের মেয়েরা। জেলা শহরের সাতটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এখন ভিড়। স্কুলগুলিতেও ক্যারাটে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। মেয়েদের এমন উত্সাহ দেখে অবাক প্রশিক্ষকরাও।
কয়েক বছর আগে যে মেয়েরা গান শেখা অথবা ছবি আঁকার বাইরে অন্য কিছু ভাবত না এখন ক্যারাটেতে হাত পাকাতে শুরু করেছে। শহরের বিভিন্ন শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫ শতাধিক মেয়ে এ ভাবে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর নেশায় মেতেছে। তাদের বয়স সাড়ে ৪ বছর থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। ক্যারাটে প্রশিক্ষক রাকেশ সরকার বলেন, “শহরের মেয়েদের মধ্যে ক্যারাটে নিয়ে এমন উত্সাহ দেখিনি। ক্রমশ ভিড় বাড়ছে। |
শহরে অন্তত পাঁচটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সাপ্তাহিক রুটিন মেনে ক্যারাটে শিখছে মেয়েরা। এমজেএন ক্লাব প্রাঙ্গন, কোচবিহার ক্লাব চত্বর, চকচকা শিল্পকেন্দ্র লাগোয়া মাঠে ওদের দেখা যায় কসরতে ব্যস্ত থাকতে। এ ছাড়াও রামভোলা হাই স্কুল মাঠে সপ্তাহের শেষ দু’দিন শনিবার ও রবিবার ক্যারাটে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সুনীতি অ্যাকাডেমি, ইন্দিরা দেবী রামকৃষ্ণ বালিকা বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীদের ক্যারাটে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এক ক্যারাটে প্রশিক্ষক জানান, এক বছর আগে সুনীতি অ্যাকাডেমিতে পঞ্চাশ শতাংশ ছাত্রী প্রশিক্ষণ নিতে আসত। এখন সেটা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। অভিভাবকরাও উত্সাহ দেখাচ্ছেন। কেন ক্যারাটে নিয়ে এত মাতামাতি! ছাত্রীরা জানায়, টিউশনি পড়তে যাওয়ার পথে ইভটিজারদের খপ্পড়ে পড়তে হচ্ছে। আবার কখনও স্কুল থেকে ফেরার সময় রকের আড্ডা থেকে ছুড়ে দেওয়া অশ্লীল শব্দ শুনে চুপচাপ চলে যেতে হয়। কিছু বললে বিপদ। কয়েক বছর আগে যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে এক ছাত্রী ছুরির আঘাতে জখম হয়। এ সব আর মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না দেখে তারা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কথা ভেবে ক্যারাটে শিখছে। ছাত্রীদের এমন উত্সাহ দেখে খুশি সুনীতি আক্যাডেমির প্রধানশিক্ষিকা মধুমিতা বন্দোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “এমনটাই চেয়েছিলাম। বিভিন্ন কারণে মেয়েদের ক্যারাটে নিয়ে আগ্রহ কিছুটা বেড়েছে।” অভিভাবকদের অনেকেও মনে করছেন ক্যারাটে প্রশিক্ষণ নেওয়া জরুরি। ম্যাগাজিন রোডের বাসিন্দা রীতা দে বলেন, “মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। ক্যারাটে জানা থাকলে রাস্তায় কেউ উত্যক্ত করলে অথবা ইভটিজিংয়ের মত সমস্যা হলে প্রাথমিক ভাবে পরিস্থিতি সামলে নিতে পারবে।” দেবীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা সোনা দাস বলেন, “মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে। আত্মরক্ষার কথা ভেবে ওকে ক্যারাটে শেখানোর কথা ভেবেছি।” মেয়েরা বলছে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরে আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়েছে। যেমন, অষ্টম শ্রেণির সঞ্চারী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “আগে সাইকেল নিয়ে একা টিউশন পড়তে যাওয়ার সময় ভয় হত। ক্যারাটে শেখার পরে ভয়টা অনেক কমেছে। |