নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ব্লক সভাপতি বদলের অভিযোগ নিয়ে শিলিগুড়িতে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে। সোমবার শিলিগুড়ি জার্নালিস্ট ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে দলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি (সমতল) শঙ্কর মালাকারের বিরুদ্ধে খুশি মতো কাজ করার অভিযোগ করেন জেলা কংগ্রেসের দুই সাধারণ সম্পাদক। এদের মধ্যে এক জন সুজয় ঘটক। যিনি জেলা রাজনীতিতে শঙ্করবাবুর বিরোধী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। সুজয়বাবুরা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং এআইসিসি নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করে স্মারকলিপি দেন। এখানেই থেমে না থাকে, ব্লকে ব্লকে সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সুজয়বাবুরা।
শঙ্করবাবু অবশ্য বিষয়টিকে খুব বেশি গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি দাবি করেন, এআইসিসি এবং প্রদেশের অনুমতি নিয়েই তিনি সমস্ত কাজ করছেন। তিনি বলেন, “যার যেটা কাজ তা করা উচিত। এআইসিসি এবং প্রদেশের অনুমতি নিয়েই ব্লক সভাপতি বদল হয়েছে। যারা এইসব কথা বলছেন তাঁরা নিজেদের কাজ ঠিকমতো করছেন না।”
সুজয়বাবু বলেন, “প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। তিনি কিছু জানেন না। এআইসিসি কিছু জানে না। আর এআইসিসি যাদের নির্বাচনের মাধ্যমে নিয়োগ দিয়ে দায়িত্ব দিয়েছেন তাঁদের জেলা সভাপতির সরিয়ে দেওয়ার এক্তিয়ার নেই। ব্লক সভাপতিদের সরিয়ে নিজের পছন্দমতো কিছু লোককে তিনি বসিয়ে দিয়েছেন। সমর্থকদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।”
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে সুজয়বাবুরা দাবি করেন, এআইসিসির অনুমোদনে প্রায় দুই বছর ধরে শিলিগুড়ি-২ নম্বর নগরের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন রামকুমার অগ্রবাল, শিলিগুড়ি-৩ নম্বর নগরের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন জয়ন্ত কর এবং মাটিগাড়ার ব্লক সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শঙ্কর জোশীকে। তাঁদের অভিযোগ, সম্প্রতি ওই তিনটি পদ থেকে জেলা সভাপতি দায়িত্বপ্রাপ্তদের সরিয়ে দিয়েছেন। শিলিগুড়ি-২ নম্বরে বিমলেশ ভৌমিক, শিলিগুড়ি-৩ নম্বরে তপন পাইন এবং মাটিগাড়ায় অর্ধেন্দু বিশ্বাসকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলা সভাপতির তরফে বিষয়টি বিভিন্ন জায়গায় প্রচার করা হয়েছে। এদের মধ্যে জয়ন্তবাবুকে জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাকে জেলার সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। নগর কংগ্রেসের সভাপতির পদে তপনবাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু সে সংক্রান্ত কোনও কাগজ আমি পাইনি।”
অর্ধেন্দুবাবু’রা অভিযোগ করেন, এতদিন যারা ব্লক কংগ্রেসের দায়িত্বে ছিলেন তারা সংগঠনের কাজ করেননি। ফলে বিভিন্ন জায়গায় সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া জমি কেনাবেচা সংক্রান্ত ব্যপারেও অনেকে জড়িয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন। অর্ধেন্দুবাবু বলেন, “এতদিন ব্লকের দায়িত্বে থাকা শঙ্করবাবু সংগঠন বিস্তারে কোনও কাজ করেননি। ব্লকের বৈঠকগুলি পর্যন্ত ঠিকমতো হয়নি। ফলে সংগঠন ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছিল। সে কারণেই দল আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। এখানে গোষ্ঠীর কোনও ব্যপার নেই। যারা এসব বলছেন তাঁদের জেলা রাজনীতিতে সেরকম কোনও অস্তিত্ব নেই।” শঙ্করবাবু বলেন, “মন দিয়ে দলের কাজ করছিলাম। সেই জন্যই তো এআইসিসি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। এখন জোর করে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।”
এ দিনের বৈঠকে জেলা কংগ্রেসের আর এক সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস ঘোষ, সম্পাদক রাজকুমার থাপা, যুব কংগ্রেসের শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে সভাপতি পিন্টু ঘোষ উপস্থিত ছিলেন। |