ডার্বি ম্যাচের আঁচ লাগল সীমান্তের ডোমকলেও। মহকুমার তিনটি বিধানসভা থেকে ছয়টি দল এবং করিমপুর বিধানসভার দুটি দল নিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে কামদাকিঙ্কর মুখোপাধ্যায় গোল্ড কাপ। অন্য দিকে, শীতের দুপুরে ডোমকল মহকুমা ক্রিকেট লিগের পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে ছুটির দিন গুলিতে শুরু হয়েছে অফিসিয়াল ক্রিকেট।
নামে অফিসিয়াল হলেও প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য বলছেন খেলার মাঠে কিন্তু নাথিং অফিসিয়াল। সাধারণ মানুষ থেকে পুলিশ এবং প্রশাসনের সর্বস্তরের লোকজনের এখন একটাই আলোচনা খেলা, খেলা এবং খেলা। সব মিলিয়ে শীতের শেষে আবার যেন অকাল উত্সবে মেতে উঠেছে ডোমকল।
ডোমকলের মহকুমাশাসক প্রশান্ত অধিকারী বলেন, ‘‘খেলার জগতে ইতিমধ্যেই ডোমকল একটা জায়গা করে নিয়েছে। জেলা ও রাজ্যে ডোমকল এখন দাপিয়ে খেলছে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে খেলছি আমরাও। তাতে জনসংযোগ বাড়ার পাশাপাশি সামগ্রিক ভাবে মহকুমায় একটা ইতিবাচক প্রভাবও পড়তে শুরু করেছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে তার সুফলটাও আমরা পাচ্ছি। ডোমকলের মতো জায়গায় এটা কিন্তু কম কথা নয়।”
খেলা যে ডোমকলের পুরনো চেহারাকে অনেকখানি পাল্টে দিয়েছে সে কথা কবুল করছেন ক্রীড়া সংস্থার কর্তাদের পাশাপাশি, রাজনৈতিক নেতা ও সাধারণ মানুষও। ডোমকল মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক ধীমান দাশ কোন রাখঢাক না রেখেই বলছেন, “খেলা শুধু একজন মানুষকে নয়, সামগ্রিকভাবে গোটা এলাকাকে কীভাবে পাল্টে দিতে পারে তার বড় নজির আমাদের ডোমকল।” কী রকম? ধীমানবাবুর কথায়, “বছর পাঁচেক আগেও ডোমকলে প্রায়ই ঘটত খুনের ঘটনা। কত জন মারা গেলেন নয়, সাধারণ মানুষ জানতে চাইতেন- কটা উইকেট পড়ল? খুনের ঘটনা এখন প্রায় নেই বললেই চলে। এখন মানুষ সত্যি সত্যিই খেলার মাঠে গোল কিংবা উইকেট নিয়েই বেশি ব্যস্ত। এটা কিন্তু সম্ভব হয়েছে একমাত্র খেলাধূলার জন্যই।”
রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় লোকজনের কথায়, ডোমকল না পাল্টালে কি পুলিশ প্রশাসনের লোকজন মাঠে খেলতে পারত? বছর কয়েক আগে পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা ঠিকঠাক রাখতে খেলার মাঠ তো দূরের কথা ঠিকমত নাওয়া খাওয়ার সময়টুকু পেতেন না প্রশাসনের কর্তারা। এখন অবশ্য সে সব পাট চুকে গিয়েছে। প্রশাসন স্বস্তিতে, হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন সাধারণ মানুষও। ক্রিকেট লিগ, অফিসিয়াল ক্রিকেটের পাশাপাশি ডোমকল এখন দিন গুনছে কামদাকিঙ্কর কাপের প্রথম পর্যায়ের খেলার জন্য। কামদাকিঙ্কর মুখোপাধ্যায় গোল্ড কাপে এবার মোট ২৫৬টি দল অংশগ্রহন করছে। তারমধ্যে বীরভূম জেলার ১৬ টি দল ও মুর্শিদাবাদের ২৪০ টি দল। ১৩ জানুয়ারি জঙ্গিপুরে ওই খেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও হয়েছে।
ডোমকল মহকুমার ডোমকল, জলঙ্গি ও রানিনগর এই তিনটে বিধানসভা থেকে এবারে কামদাকিঙ্কর কাপে অংশগ্রহন করছে বঘারপুর, রমনা, নওজোয়ান ক্লাব, মাণিকনগর পল্লীসেবক সমিতি, সাগরপাড়া ফুটবল অ্যাকাডেমি, কাতলামারি তরুণ সংঘ, চক মহামায়া ক্লাব ও ইসলামপুর মর্নিং ক্লাব। এছাড়া তেহট্ট মহকুমার করিমপুর বিধানসভা থেকে কেচুয়াডাঙা ক্লাব ও সেনপাড়া পল্লীশ্রী ক্লাব ওই খেলায় অংশগ্রহন করছে। চারটি বিধানসভার মোট সাতটি খেলায় এই প্রথম দুটো খেলা হবে মুর্শিদাবাদ লোকসভার অর্ন্তগত করিমপুরে। বাকি পাঁচটি খেলা জলঙ্গির সাদিখাঁরদেয়াড় ফুটবল ময়দানে।
সব মিলিয়ে টানটান খেলার মেজাজে মজে রয়েছে ডোমকল। |