থানার উদ্বোধন করে তিনি সগর্বে জানিয়েছিলেন, মুর্শিদাবাদের ওই শক্তিপুর থানাতেই তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে খান আটেক জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযোগ। তিনি রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী হুমায়ুন কবীর। এ বার ঘুষ-বিতর্কেও জড়ালেন হুমায়ুন। দিন কয়েক আগেই রেজিনগরের এক কংগ্রেস কর্মীকে ফোনে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল হুমায়ুনের বিরুদ্ধে। এ বারের অভিযোগ, বেশ কয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ‘ঘুষ’ নিয়েছেন তিনি।
বেলডাঙা-২ ব্লকের সাতটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের অভিযোগ, ব্যাঙ্ক ঋণ পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রতিটি গোষ্ঠীর কাছে ৫০ হাজার টাকা করে মোট সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছেন হুমায়ুন। মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ বেলডাঙা-২ পঞ্চায়েত সমিতির অস্থায়ী কর্মী ডালিম শেখ সে টাকা সংগ্রহ করে ছিলেন বলে তাঁদের অভিযোগ। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পক্ষে মেহেরুন্নিসা খাতুন জানিয়েছেন, বেলডাঙা-২ ব্লকের কাটাইকোনা গ্রামের সাতটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে প্রকল্প ঋণ বাবদ ২ লক্ষ টাকা করে পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন হুমায়ুন কবীর। তবে শর্ত ছিল, ঋণ পেলে গোষ্ঠী বাবদ ৫০ হাজার টাকা করে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিতে হবে।
মেহেরুন্নিসার দাবি, ওই টাকা মন্ত্রীর কথা মতো তাঁর ঘনিষ্ঠ ডালিম শেখের হাতে তুলে দিয়েছেন তাঁরা। টাকা না দিলে তাঁদের স্বনির্ভর গোষ্ঠী বাতিল করার হুমকি দিয়েছিলেন হুমায়ুন।
অভিযোগ কানে আসতে রবিবার ভোট প্রচারে গিয়ে মঞ্চ থেকেই হুমায়ুনের পাল্টা অভিযোগ, “ভোটের মুখে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন ওই মহিলারা। মেহেরুন্নিসাকে আমি চিনি। এলাকায় অনেকের সঙ্গে ওর সম্পর্ক রয়েছে। ওই মহিলা তো যৌনকর্মী!” ওই মহিলাদের হয়ে ঋণের জন্য সুপারিশ করার কথা অবশ্য মেনে নিয়েছেন তিনি। মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ ডালিমের বক্তব্য,“ ওই মহিলারা কংগ্রেস সমর্থক। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় ভোটের মুখে এখন আমাদের নামে অপবাদ ছড়াচ্ছে কংগ্রেস।” যা শুনে জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী বলেন, “অভিযোগ আমিও শুনেছি। তৃণমূলের প্রার্থীর চরিত্র নিয়ে আর কী-ই বা বলব!” শক্তিগড় থানার বিতর্কের সময়ে হুমায়ুনের পাশে দাঁড়িয়েছিল তাঁর দল। কিন্তু ক্রমান্বয়ে অভিযোগ আসতে থাকায় দলীয় নেতৃত্বও যে অস্বস্তিতে তা জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা নেতারাও। |