|
|
|
|
পুলিশি হেনস্থা গিলানির জামাইকে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
আফজল গুরুর ফাঁসির পরে দিল্লি পুলিশের হাতে এক সাংবাদিকের দীর্ঘক্ষণ আটক থাকার ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। শনিবার আফজলের ফাঁসির পরে দিল্লির একটি ইংরেজি দৈনিকের সাংবাদিক ইফতিকার গিলানিকে দীর্ঘ সময় আটক করে রাখা হয়। তাঁর স্ত্রী এবং দুই সন্তানকেও পুলিশ আটক করে রেখেছিল বলে অভিযোগ করেছেন ইফতিকার। তিনি সম্পর্কে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির জামাই। শুধু সেই কারণে কেন স্ত্রী-সন্তান-সহ ইফতিকারকে আটক করে রাখা হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মার্কণ্ডেয় কাটজু স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে কড়া ভাষায় অভিযোগ জানিয়ে দাবি তুলেছেন, দোষী পুলিশ অফিসারদের দ্রুত বরখাস্ত করতে হবে। চাপের মুখে আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত হবে।
ইফতিকার গিলানি সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সাংবাদিক। তাঁর অভিযোগ, শনিবার সকালে বাড়ি থেকে অফিস যাওয়ার সময় দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেলের দু’জন কর্মী তাঁকে আটকান। প্রথমে তাঁর শ্বশুরের (গিলানির) বাড়ি কোথায় জানতে চাওয়া হয়। কাছেই একটি ব্লকে শ্বশুরের বাড়িটি দেখিয়ে ফেরার পথে তাঁকে জোর করে সেখানে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর তাঁর স্ত্রীকেও সেখানে আনা হয়। পরে ইফতিকার বলেন, “শ্বশুরমশাইয়ের রাজনীতির সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। কেন আটকে রাখা হয়েছে, তা জানতে চাইলে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়। পাঁচ ঘণ্টা পরে ছাড়া পাই। বাড়ি ফিরে দেখি, আমাদের ছেলেমেয়েকে ফ্ল্যাটের বেডরুমে তালাবন্ধ করে রেখে বসার ঘরে ৭-৮ জন পুলিশ বসে রয়েছে! আমার মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে, ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে। ওদের দু’জনের এখনও আতঙ্ক কাটেনি।”
দিল্লি পুলিশের তরফে হুরিয়ত-নেতা গিলানি এবং মিরওয়াইজ উমর ফারুখকে গৃহবন্দি করে রাখার কথা স্বীকার করা হলেও ইফতিকার গিলানিকে আটক করে রাখার কথা প্রথমে অস্বীকার করা হয়। পরে আবার বলা হয়, তিনি হুরিয়ত-নেতা গিলানির বাড়িতেই ছিলেন। তাই তাঁকেও সেখানে আটকে রাখা হয়েছিল। পুলিশি হেনস্থা নিয়ে প্রেস কাউন্সিলের কাছে অভিযোগ জানান ইফতিকার। এর পরেই স্বরাষ্ট্রসচিব আর কে সিংহকে চিঠি লেখেন কাটজু।
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট পুলিশ-অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে ইফতিকারের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছেন কাটজু। এডিটর্স গিল্ড এবং দিল্লি ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্ট-ও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। ইফতিকার অবশ্য জানিয়েছেন, এখনও তাঁর কাছে এ বিষয়ে কেউই দুঃখপ্রকাশ করেননি। তাঁর অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত তাঁর বাড়ির সামনে পুলিশি প্রহরা রয়েছে। তাঁর বাড়িতে যাঁরাই আসছেন, তাঁদের দীর্ঘক্ষণ ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রতিবেশীদেরও প্রশ্ন করা হয়েছে, তাঁরা কেন এক জন সন্ত্রাসবাদীকে পাড়ায় থাকতে দিয়েছেন! ছেলেমেয়েদের গৃহশিক্ষকদেরও জেরা করা হয়েছে। চাপের মুখে শিন্দে বলেন, “গিলানিকে ভাল করেই চিনি। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।” |
|
|
|
|
|