শিন্দের চিঠি, তবু অনড় বিজেপি
ংসদের বাজেট অধিবেশনের বাকি আর দশ দিন। তার আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হিন্দু-সন্ত্রাস বক্তব্য নিয়ে বিজেপির বিরোধিতার সুর লঘু করতে তাদের সঙ্গে সমঝোতায় উদ্যোগী হলেন খোদ সনিয়া গাঁধী। বিজেপির তরফে অবশ্য এই বিষয়ে নরম হওয়ার ইঙ্গিত এখনও মেলেনি।
সনিয়ার নির্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্দে দূত মারফত ব্যক্তিগত চিঠি পাঠিয়েছেন লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজকে। তাঁকে ফোনও করেছেন শিন্দে। সেই চিঠিতে শিন্দের বক্তব্য, তিনি কোনও ধর্মকে আঘাত করতে চাননি। হিন্দু সমাজকে সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত করার কোনও অভিপ্রায়ও তাঁর নেই। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সন্ত্রাসের কোনও রং হয় না। সেই মতের সঙ্গে তিনি একমত বলেও ওই চিঠিতে জানিয়েছেন শিন্দে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে এই চিঠি পাওয়ার পরেই বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ ও দলের অন্য শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন সুষমা। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, শুধু বিবৃতি পাঠানোই যথেষ্ট নয়। কারণ, শিন্দে তাঁর ‘হিন্দু-সন্ত্রাস’ মন্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেননি। বিজেপির বক্তব্য, গোটা গেরুয়া শিবিরকে সন্ত্রাসবাদী অ্যাখ্যা দিয়ে আসলে হিন্দু ভাবনাকেই আঘাত করেছেন শিন্দে। তাঁরা সংসদ অচল করার পক্ষপাতী নন। অহেতুক বয়কটের রাজনীতিও দল করতে চায় না। তবে শিন্দে তাঁর মন্তব্য পুনর্বিবেচনা করলে বিজেপি তাঁকে বয়কটের অবস্থান থেকে সরে আসতে পারে।
চাপে পড়লেও শিন্দে কিন্তু আজও হিন্দু-সন্ত্রাস মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাননি। বিজেপি-ও জানিয়ে দিয়েছে, শিন্দে সম্পর্কে দলের অবস্থানের কোনও বদল হয়নি। সংসদ শুরুর এক দিন আগে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে শিন্দের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানানো হবে। সংসদের অধিবেশন শুরু হলেই তাঁকে বয়কট করা হবে। শিন্দে লোকসভার নেতাও। ফলে সংসদে তাঁর ডাকা কোনও বৈঠকেই যোগ দেবে না প্রধান বিরোধী দল। শিন্দের বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। যার ভিত্তিতে আজ আদালত দিল্লি পুলিশকে রিপোর্ট দিতে বলেছে।
শিন্দের মন্তব্য নিয়ে বিজেপি যে ভাবে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিচ্ছে, তাতে কংগ্রেসের আশঙ্কা, সংসদের অধিবেশনই ভেস্তে যেতে পারে। এ বারের বাজেট জনমোহিনী করার পাশাপাশি অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশের চেষ্টাও করবে কংগ্রেস, যাতে বিজেপির সমর্থন প্রয়োজন হবে। ওই বিলগুলিকে সামনে রেখেই ভোটে যাওয়ার কৌশল নিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু বিজেপি হিন্দু সন্ত্রাস মন্তব্য নিয়ে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলে প্রচারের অভিমুখটাই বদলে যাবে। তাই শিন্দের মাধ্যমে বিজেপিকে বোঝাপড়ার রাস্তায় এনে তাঁদের বিরোধিতা লঘু করার কৌশল নিচ্ছেন সনিয়া।
কংগ্রেসের ধারণা, সুষমাকে পাঠানো চিঠির মাধ্যমে বিজেপির বিরোধিতার সুর কিছুটা লঘু করা যাবে। আফজলের ফাঁসির পর এমনিতেই জাতীয়তাবাদ নিয়ে বিজেপির হাতিয়ার অনেকটা ভোঁতা করা গিয়েছে। এই অবস্থায় ‘হিন্দু সন্ত্রাস’ মন্তব্য নিয়ে বিজেপি খুব বেশি আক্রমণাত্মক হতে পারবে না। তাই শিন্দের চিঠির পরে তারা অন্তত আলোচনা শুরু করেছে।
তবে বিজেপির বক্তব্য, আফজলের ফাঁসির পরে পরিস্থিতি বিশেষ বদলায়নি। বরং দল প্রচার করবে, কেন এত দেরিতে ফাঁসি হল? আর বিজেপি যে হেতু সংখ্যালঘু ভোটের প্রত্যাশা করে না, তাই আফজলের ফাঁসির পরে ‘হিন্দু সন্ত্রাস’-এর প্রতিবাদ জানিয়ে আক্রমণাত্মক হতে সমস্যা নেই। বরং যে কংগ্রেস নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ বলে দাবি করে ও সংখ্যালঘু ভোট হারাতে চায় না, সমস্যা তাদেরই হবে। বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভড়েকরের মতে, অতীতে কংগ্রেস রামমন্দিরের তালা খুলেছিল, শাহবানু মামলায় মৌলবাদী অবস্থানও নিয়েছিল। দু’দিক সামলাতে গিয়ে লোকসান তাদেরই হয়েছিল। বরং হিন্দুত্ব এজেন্ডায় লাভ হয়েছিল বিজেপির। সেই লাভের পথই খুঁজছেন আডবাণী, সুষমা, জেটলিরা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.