মামলার শুনানিতে চাপান-উতোর চলছিল। এক সময় দু’পক্ষের আইনজীবীদের বাদানুবাদ এমনই উচ্চগ্রামে পৌঁছল যে, খোদ বিচারকই এজলাস ছেড়ে নেমে গেলেন। সোমবার ঘটনাটি ঘটে আলিপুরে মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে।
শেয়ার কেলেঙ্কারির অভিযোগে ধৃত এক ব্যক্তির জামিনের আবেদন নিয়ে এ দিন শুনানি ছিল। অভিযুক্ত পবন জৈনের তরফে তৃণমূল সাংসদ তথা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে হাজির ছিলেন। অভিযোগকারীর আইনজীবীদের অভিযোগ, এজলাসে কল্যাণবাবু তাঁদের উদ্দেশে যে-সব মন্তব্য করেছেন, তা মানহানিকর। ওই সব মন্তব্য আদালতের মর্যাদার পক্ষেও হানিকর। তবে কল্যাণবাবু এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, জামিনের আর্জি জানিয়ে সওয়াল শুরুর পরে পরেই অভিযোগকারীর আইনজীবীরা নিজেদের বক্তব্য পেশ করতে শুরু করেন। তাঁকে বাধা দিতে থাকেন।
অভিযোগকারীর এক আইনজীবী বলেন, “উনি (কল্যাণবাবু) আমাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছেন। বলেছেন, সরকারি আইনজীবী থাকতে অভিযোগকারীর আইনজীবীর আবার কী দরকার! আরও কিছু কথা অপমানজনক বলে মনে হয়েছে। তা আদালতের পক্ষেও মর্যাদাহানিকর। আমরা ওঁর মন্তব্যেরই প্রতিবাদ করেছি।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কল্যাণবাবু বলেন, “অভিযোগকারীর আইনজীবীরা সত্যি কথা বলছেন না। আমি কোনও মর্যাদাহানিকর মন্তব্য করিনি। উল্টে আমাকেই আমার বক্তব্য শেষ করতে দেওয়া হয়নি।” এ দিন আদালতে যা ঘটেছে, তাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এক আইনজীবী জানান, কল্যাণবাবুর মন্তব্যের পরেই চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চেলে যাচ্ছে দেখে এজলাস ছেড়ে চলে যান মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সুরতেশ্বর মণ্ডল। তার পরে কল্যাণবাবুও বেরিয়ে যান। বিচারকের সামনে তিনি যে তাঁর পুরো বক্তব্য পেশ করতে পারেননি, সেটা লিখিত ভাবে দাখিল করতে বলে যান তাঁর সহযোগী আইনজীবীদের সেলিম রহমান ও সমীর দাসকে। তাঁরা ওই দরখাস্ত আদালতে পেশ করেন।
শেয়ার কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ২ ফেব্রুয়ারি পবন জৈনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতকে পুলিশি হাজতে পাঠানো হয়। কল্যাণবাবুর মক্কেল অবশ্য এ দিন জামিন পাননি। বিচারক ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অভিযুক্তকে পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। |