জোট বেঁধে গত লোকসভা, বিধানসভা নির্বাচনে লড়ার পরে পঞ্চায়েতে একলা লড়ে সাফল্য পেতে যে এলাকায় সংগঠন দুর্বল সেখানে বাড়তি জনসংযোগের কৌশল নিয়েছে জেলা কংগ্রেস। সেই নীতি মেনেই জলপাইগুড়ির সীমান্তবর্তী মানিকগঞ্জ থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করল জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস। রবিবার দুপুরে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি থেকে শুরু করে জেলার দুই বিধায়ক, প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক, মহিলা শাখার সভানেত্রী সহ জেলা কংগ্রেসের তাবড় শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে মানিকগঞ্জে প্রকাশ্য সমাবশে হয়। সেখানে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান দলের জেলা নেতারা।
রাজনৈতিক মহলের মতে, ফরওয়ার্ড ব্লকের খাস তালুক বলে পরিচিত দক্ষিণ বেরুবাড়ি। আলু কেলেঙ্কারির অভিযোগে সেখানে ফরওয়ার্ড ব্লক অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বলে মনে করছে কংগ্রেস। দক্ষিণ বেরুবাড়িতে ফরওয়ার্ড ব্লকের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সুধাংশু মজুমদারের পুত্র তীর্থব্রতবাবু এদিন কংগ্রেসের প্রকাশ্য মঞ্চে অনুগামীদের নিয়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক গোবিন্দ রায় দক্ষিণ বেরুবাড়ির ভূমিপূত্র। এলাকায় জনপ্রিয় ওই নেতা সম্প্রতি আলু কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত হয়ে ফেরার। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই এলাকায় দলকে শক্তিশালী করতে জেলা কংগ্রেস উদ্যোগী হয়েছে।
সে কারণেই জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোহন বসু বলেন, “সীমান্তবর্তী ওই এলাকায় কংগ্রেসের সংগঠন ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। যে সব এলাকায় সংগঠন তুলনামূলক দুর্বল সেখানে বেশি করে প্রস্তুতি সভা হবে। এদিন থেকে ওই প্রস্তুতি সভার শুরু। জেলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতেই প্রচার চালানো হবে।” দক্ষিণ বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের মধ্যে ৭টি ফরওয়ার্ড ব্লকের দখলে রয়েছে। দলের জেলা সম্পাদক প্রবাল রাহা বলেন, “এ বিষয়ে খোঁজ নেব। তবে কারও দল থেকে চলে যাওয়া মানে মানুষের সমর্থনও চলে যাওয়া নয়। দক্ষিণ বেরুবাড়িতে দল যথেষ্টই শক্তিশালী। আগামী পঞ্চায়েতে মানুষ তার প্রমাণ দেবেন।”
বাম দলগুলির পাশাপাশি এদিনের সভায় প্রাক্তন শরিক তৃণমূলকেও একহাত নিয়েছে কংগ্রেস। বাম এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একলা লড়াই করার ডাক দিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বরঞ্জন সরকার বলেন, “তৃণমূল এখন শাসক দলে রয়েছে। পুলিশ প্রশাসন দিয়ে নিবার্চন করবে। কংগ্রেস সমর্থকদের চোখ কান খোলা রাখতে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সুষ্ঠ ও অবাধ করতে কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার দাবিও জানিয়েছি আমরা।” নাগরাকাটার বিধায়ক যোসেফ মুন্ডা বলেন, “সিপিএম রাজ্যকে দেউলিয়া করে ছেড়েছে। আর তৃণমূল সরকার এসে সেই দেউলিয়ার দোহাই দিয়ে কোনও কাজ করছে না। এভাবে চলতে পারে না। আমরা জেলার উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাব।” |