আসন্ন গ্রীষ্মের পর্যটন মরসুমে পাহাড়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কেন্দ্র ও রাজ্যের উপস্থিতিতে সর্বদল বৈঠকের দাবি তুলল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। রবিবার গোর্খা লিগ, সিপিআরএম, গোর্খাল্যান্ড টাস্ক ফোর্সের তরফে ওই দাবি তোলা হয়েছে।
এ দিনই গোর্খা লিগের তরফে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পক্ষান্তরে সর্বদল বৈঠক প্রসঙ্গে মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেছেন, “পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। এখনই এই বিষয়ে কিছু বলছি না। সময়মতো সব বলা হবে।” আর উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা গৌতম দেব বলেছেন, “রাজ্য সরকারের তরফে যখন যা জানানোর, জানানো হবে।”
শনিবার ১২ ঘণ্টার বনধের
পরে এ দিন পাহাড়ের ঘটনাক্রম কোনও নতুন মোড় নেয়নি। মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ এ দিন ম্যাল চৌরাস্তায় একটি নাচের অনুষ্ঠানে দিনভর সময় কাটান। নতুন কোনও মন্তব্য করেননি। অন্য দিকে, লেপচা’রা কালিম্পঙে তাঁদের অনশন জারি রেখেছেন।
পর্যটনের মরসুমে পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখার গুরুত্ব মনে করিয়ে দিয়ে গোর্খা লিগের সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ খাতি বলেন, “পাহাড়ে বর্তমানে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা কাম্য নয়। আবার পাহাড় অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গ্রীষ্মের পর্যটনের মরসুমে এমন অবস্থা থাকলে পাহাড়বাসীর আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সর্বদল আমরা বৈঠক চাইছি।” এক ধাপ এগিয়ে সিপিআরএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অরুণ ঘাটানি বলেন, “সর্বদল বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি থাকাটা জরুরি। কারণ, দিল্লির জানা দরকার আদতে পাহাড়ে কী চলছে।” প্রায় একই সুরে গোর্খাল্যান্ড টাস্ক ফোর্সের সভাপতি এনোস দাস বলেন, “পাহাড়ের রাজনীতিতে বরাবর একটি দলকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অন্য দলগুলিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। বাম আমলেও এটা হয়েছে। তৃণমূল সরকারও তা-ই করছে। তাতেই শান্তি প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধির উপস্থিতিতে সর্বদলীয় বৈঠক হওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।”
সর্বদল বৈঠকের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মানলেও, রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। তাদের বক্তব্য, লেপচাদের বিষয়টি নিয়ে মোর্চার সঙ্গে রাজ্য সরকার কেন সংঘাতে গেল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সিপিএমের অভিযোগ, ওই সংঘাতের জেরে পাহাড়ের শান্তির পরিবেশে বিঘ্ন ঘটেছে। দলের নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “এ অবস্থায় সর্বদল বৈঠক হতেই পারে। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারও থাকতে পারে। কিন্তু রাজ্যের রাজনৈতিক সদিচ্ছা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।” |