রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিঁধতে গিয়ে শালীনতা বিসর্জন দেওয়ার যে ঐতিহ্য দেখতে রাজ্যবাসী অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন, রবিবার তাতে জুড়ল নতুন পর্ব। বিরোধীদের কটূক্তি করা মন্ত্রীদের তালিকায় নাম উঠল রাজ্যের জলসম্পদমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রর। এ ব্যাপারে নিজের ‘ভাবমূর্তি’ বজায় রাখলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। একই দিনে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের ‘কুকথা’র জবাব দিতে গিয়ে দলের নেতা-কর্মীরা যাতে সংযত থাকেন, সেই বার্তা দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু।
পাঁশকুড়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বিক্রি বিতর্ক নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে সৌমেনবাবু এ দিন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা গৌতম দেবের নাম করে কুৎসিত মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে খাদ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও। দিন কয়েক আগে হাবরায় এক অনুষ্ঠানে জ্যোতিপ্রিয়বাবুর সঙ্গে একই মঞ্চে বসে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, বিধানসভার ভিতরে-বাইরে রাজনীতির কারবারিদের ‘সংযত’ থাকা উচিত। জ্যোতিপ্রিয়বাবুর বক্তব্যে ‘রাশ টানতেই’ সে দিন বিমানবাবু ওই মন্তব্য করেছিলেন বলে জেলা তৃণমূলেরই একটি অংশের মত। যদিও জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানিয়ে দেন, সিপিএমের নেতা-নেত্রীদেরই ‘সংযত’ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিমানবাবু। তাঁর এই ব্যাখ্যায় ‘বিস্মিত’ দলের জেলা নেতৃত্বের একটি অংশ সে দিনই বুঝে গিয়েছিলেন, নিজের ‘মেজাজ’ থেকে এখনই সরবেন না জ্যোতিপ্রিয়। এ দিন হাবরাতেই এক অনুষ্ঠানে সিপিএম নেতা অমিতাভ নন্দী, মজিদ (আলি) মাস্টার, গৌতম দেবকে নিয়ে খাদ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ফের বিতর্ক তৈরি করেছে। যা শুনে অমিতাভবাবুর প্রতিক্রিয়া, “কুৎসিত ভাষার কোনও জবাব দেব না। রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে গেলে ব্যক্তি আক্রমণ শুরু হয়।” সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুও শহিদ মিনার ময়দানে কলকাতা জেলা সিপিএমের সমাবেশে এ দিন বলেন, “শাসক দলের নেতা-মন্ত্রী-সাংসদেরা যে ভাবে কথা বলছেন, যে সব মন্তব্য করছেন, তার বিচার মানুষ করবেন। কিন্তু বিচার করতে গিয়ে আমাদের কিছু অত্যুৎসাহী নেতা-কর্মী-কমরেড এমন কিছু ভাষা ব্যবহার করেন, যা ঠিক নয়। এ সব একদম করবেন না। সতর্ক থাকবেন। আর ব্যক্তি আক্রমণে যাবেন না।” এর আগে রাজ্য কমিটির বৈঠকেও নেতাদের মন্তব্যের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিমানবাবু।
দক্ষিণ কলকাতায় জাতীয়তাবাদী যুব সমিতির মিছিলে পা মিলিয়ে এ দিনই মহাশ্বেতাদেবী বলেন, “রাজনৈতিক দল তাদের মঞ্চ থেকে কথা বলে। এমন কোনও শব্দ, ভঙ্গি ব্যবহার করা উচিত নয় যাতে ভুল বার্তা যেতে পারে। ভাষার মানও যেন কখনও বিচ্যুত না হয়।”” |