রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ ‘মিথ্যে মামলা’ করেছেএই অভিযোগে এবং তার প্রতিবাদে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি ওই জেলা জুড়ে ১২ ঘণ্টার বন্ধের ডাক দিল কংগ্রেস। বনধে সামিল হচ্ছে দক্ষিণ দিনাজপুরও।
দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসও পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাত করার অভিযোগ তুলে ওই দিনই বনধ ডাকার কথা ভাবছে বলে জানা গিয়েছে। মালদহের ইংরেজবাজারে উপনির্বাচন আসন্ন। নির্বাচন সংক্রান্ত কর্মসূচি ঘোষিত হয়ে যাওয়ায় ওই দিন বনধ পালন না করা হলেও জেলায় ধিক্কার দিবস পালন করা হবে বলে মালদহ জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আলম আগাম জানিয়ে দিয়েছেন। ফলে, আগামী বুধবার বৃহত্তর উত্তরবঙ্গ জুড়ে বনধের আবহই তৈরি হতে চলেছে বলে প্রশাসনিক মহলের অনুমান।
প্রদেশ নেতৃত্ব অবশ্য মুর্শিদাবাদ ছাড়া উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বনধের ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য রবিবার বলেন, “কংগ্রেসকে আঘাত করলে প্রতিবাদের ঝড় যে উঠবে, সেটাই বোঝাতে চাই। প্রত্যেক জেলা সভাপতিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ওই দিন দুপুর ১২টা থেকে এক ঘণ্টার পথ অবরোধ করতে। দিনভর মিছিল করার কর্মসূচিও নেওয়া হয়েছে।” মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অধীর অবশ্য এ দিন বলেন, “মুর্শিদাবাদে জেলা কংগ্রেস নয়, অপমানিত হয়েছে জাতীয় কংগ্রেস। শুধু আমি নয়, প্রদেশ সভাপতি এবং পরিষদীয় নেতার সঙ্গেও ওই দিন দুর্ব্যহার করা
হয়েছে। আমি সব জেলা সভাপতির কাছেই তাই বন্ধের পক্ষে নৈতিক সমর্থন চেয়েছিলাম।”
সেই সূত্রেই দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকারের মন্তব্য, “বনধ ডাকার ব্যাপারে আমরাও চিন্তা-ভাবনা করছি।” উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত জানান, ওই দিন জেলা জুড়ে ধিক্কার মিছিল হবে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় বলেন, “ওই দিন আমাদের জেলা জুড়েও বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে।”
দিনকয়েক আগে জেল হেফাজতে মারা গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার এক কংগ্রেস কর্মী শফিকুল শেখ। অভিযোগ, পুলিশের অত্যাচারই শফিকুলের মৃত্যুর কারণ। তারই প্রতিবাদে ৭ ফেব্রুয়ারি জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে গিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য-সহ জেলা কংগ্রেস নেতারা। অভিযোগ, সময় দিয়েও জেলাশাসক কংগ্রেসের স্মারকলিপি নিতে চাননি। তার পরেই ভাঙচুর হয়। ওই দিন বহরমপুর সার্কিট হাউসে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের ঘটনায় অধীর চৌধুরী, প্রদেশ
কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য-সহ প্রায় ১,২০০ কংগ্রেস কর্মীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। তারই প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদ বনধের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস।
অধীর দাবি করেন, “ওই দিন জেলাশাসক স্মারকলিপি নিতে অস্বীকার করে জনপ্রতিনিধিদের অপমান করায় কংগ্রেস কর্মীরা কিছু ফুলের টব ভাঙচুর করেছিলেন। বুঝিয়েসুঝিয়ে আমিই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছিলাম। পুলিশ
অবশ্য তৃণমূল নেত্রীকে খুশি করতে আমার বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করেছে। মজার ব্যাপার আমি স্মারকলিপি দিতেই যাইনি।” মন্ত্রীর দাবি, আসন্ন উপ-নির্বাচনে কংগ্রেস কর্মীদের উপরে চাপ দিতেই তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। |