নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্য সম্মেলনে তাঁদের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠলেও আপাতত রাজ্য নেতৃত্বে কোনও রদবদল হচ্ছে না বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকে। প্রবীণতম বাম নেতা অশোক ঘোষ ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক হিসাবে যত বছর আছেন, ভারতের যে কোনও রাজনৈতিক দলের নিরিখেই তা রেকর্ড! ইতিমধ্যে দলের অন্দরে তিনি দায়িত্ব ছাড়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আপাতত ঝুঁকি নিতে চাইছে না ফরওয়ার্ড ব্লক। রাজ্য সম্মেলনে রবিবার রাতে প্রতিনিধি অধিবেশন শেষ হয়ে যাওয়ার পরে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর আলোচনাসভায় ঠিক হয়েছে, অশোকবাবুই এখনকার মতো দায়িত্বে বহাল থাকবেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে পরিবর্তনের কথা চিন্তাভাবনা করা হতে পারে। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জয়ন্ত রায়কে অশোকবাবুর পরে দলের ‘নাম্বার টু’ হিসাবে তুলে ধরার প্রক্রিয়া জারি থাকবে।
বস্তুত, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে কোনও পরিবর্তনই এখন হচ্ছে না বলে ফরওয়ার্ড ব্লক সূত্রের খবর।
দু’টি জায়গা এখন খালি রয়েছে সম্পাদকমণ্ডলীতে। সেই দু’টি জায়গাও আপাতত কাউকে নেওয়া হচ্ছে না। তবে রাজ্য কমিটিতে কিছু নতুন মুখ আনা হতে পারে। ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে
এ দিন রাজ্য সম্মেলনের খসড়া প্রতিবেদন পেশ করেন জয়ন্তবাবু।
এই খসড়া প্রতিবেদন থেকেই দলীয় মহল ইঙ্গিত পাচ্ছে, অশোকবাবুর পরে নির্ভরযোগ্য নেতা হিসাবে তাঁকেই দেখানো হচ্ছে।
সম্মেলনে প্রতিনিধিরা এ দিন অবশ্য রাজ্য নেতৃত্বকে ছেড়ে কথা বলেননি। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর ব্যর্থতার জন্যই জেলায় জেলায় গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব বড়সড় আকার নিচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম বা দিনহাটা-পর্বে অবস্থান বদল দলের বিশ্বাসযোগ্যতার ক্ষতি করেছে বলেও প্রতিনিধিদের একাংশ অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগকারীদের বক্তব্য, সেই সময়ে অন্য রকম ভূমিকা নেওয়ার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগানো যায়নি। এখন সিপিএম-বিরোধিতায় বেশি সরব হতে গেলে তৃণমূলের ‘দালাল’ হিসাবে তকমা লেগে যেতে পারে। জবাবি ভাষণে আজ, সোমবার অশোকবাবু দলের ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়ে কী দিশা দেখান, সেই দিকেই নজর রয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা, কর্মী এবং সমর্থকদের।
|
সংখ্যালঘু বঞ্চনার বিরুদ্ধে কনভেনশন আজ কংগ্রেসের
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সংখ্যালঘু উন্নয়নর প্রশ্নে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনা ও প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে আজ, সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কনভেনশন করছে কংগ্রেস। দলের সংখ্যালঘু শাখা আয়োজিত ওই কনভেনশনে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন।
ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের ভাতা দেওয়ার যে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছিলেন, তা-ও এখন তাঁরা নিয়মিত পান না বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। সংখ্যালঘু শাখার চেয়ারম্যান এসএমএস হায়দারের অভিযোগ, “ইমাম-মোয়াজ্জিনদের ভাতা দেওয়া শুরু হলেও কয়েক দিন পর থেকে আর তা কেউ পাচ্ছেন না। সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের হাতে মুখ্যমন্ত্রী যে অর্থ সাহায্য দিচ্ছেন, তা কেন্দ্রের অর্থ। রাজ্য সরকার সংখ্যালঘুদের জন্য একের পর এক প্রকল্প ঘোষণা করে ধর্ম নিয়ে খেলা করছে।” হায়দার জানান, কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রীর কনভেনশনে আসার কথা। সংখ্যালঘুদের জন্য কেন্দ্রের কী কী প্রকল্প রয়েছে, তার খতিয়ান দেওয়া হবে সেখানে। রাজ্যে পরিবর্তন হলে তৃণমূল সংখ্যালঘুদের জন্য যে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার বাস্তবায়ন হয়নি বলে তথ্য দিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি কনভেনশনে অভিযোগ তুলতে পারেন বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর। কনভেনশনের আগেই রবিবার তৃণমূলের কয়েক’শো সমর্থক কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন বলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য জানান। রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা শাকিল আহমেদের উপস্থিতিতে ওই কর্মীরা কংগ্রেসে যোগ দেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের চিকিৎসক শাখার সদস্য শাকিল আখতার। ক্ষমতায় আসার পরেও প্রতিশ্রুতি পালনে যে মমতা-সরকার ব্যর্থ, তার খতিয়ান তুলে ধরে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ কর্মীদের কংগ্রেসে টানার প্রক্রিয়া যে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে, তার ইঙ্গিত দেন প্রদীপবাবু। তিনি বলেন, “তিনটি কেন্দ্রে আসন্ন উপনির্বাচনের পরে কংগ্রেস কর্মীরা জেলায় জেলায় ঘুরে তৃণমূলের কর্মীদের দলে টানার চেষ্টা করবেন। তাতে আগামী দিনে এ রাজ্যে কংগ্রেসের শক্তি বৃদ্ধি হবে।” |