ওকোলি ওডাফার শেখানো মন্ত্রেই ডার্বিতে বাজিমাত ইচের! আর তার পরই জিরো থেকে হিরোর তকমা নাইজিরিয়ান স্টপারের গায়ে!
দু’দিন আগে পর্যন্ত যাঁকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল, গলার কাঁটা হয়ে বিঁধেছিলেন সবুজ-মেরুন সমর্থকদের, সেই ইচেই শনিবার ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে করিম বেঞ্চারিফার আসল তাস ছিলেন। যাঁর ধাক্কায় গোলের মুখই খুলতে পারেননি চিডি-বলজিৎরা।
অথচ তীব্র সমালোচনায় ক্ষত-বিক্ষত হতে হতে একটা সময়ে হতাশা গ্রাস করেছিল এই নাইজিরিয়ান স্টপারকে। সে সময় তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন একমাত্র মোহন-অধিনায়ক। বলেছিলেন, “মাঠেই তোমাকে সব সমালোচনার জবাব দিতে হবে!” ওডাফার কথাতেই উদ্দীপ্ত হয়েছিলেন ইচে। তবে শনিবারের ডার্বিতে দুরন্ত পারফরম্যান্সের ২৪ ঘণ্টা পরও অভিমান ঝরে পড়ছিল ইচের গলায়। “আমি নিজেকে প্রমাণ করতে মুখিয়ে ছিলাম। আর তার জন্য ডার্বির প্ল্যাটফমের্র তুলনায় বড় কিছু ছিল না,” বলছিলেন চিডিদের আটকে রাতারাতি প্রচারের আলোয় চলে আসা বাগানের নাইজিরিয়ান স্টপার। এর সঙ্গেই যোগ করলেন, “আমার খারাপ সময়ে ওডাফা যে ভাবে আমাকে উদ্বুদ্ধ করেছে, তাতে আমি মনে জোর পেয়েছি। তবে আমাকে এখন আরও ভাল খেলতে হবে। দলের অবনমন বাঁচাতে হবে।” |
অবনমনের জাল কেটে বেরোতে এই মুহূর্তে করিমের টেক্কা যদি ইচে হন, তবে আস্তিনের আর একটি তাস হল আইবর। ধারাবাহিক ভাবে ভাল পারফরম্যান্স করে বাগানের রক্ষণকে ভরসা জুগিয়েছেন তিনি। মরক্কান কোচ নিজেও সে কথা স্বীকার করছেন। রবিবার বললেন, “ইচে আর আইবরের ভাল পারফরম্যান্সের কারণেই রক্ষণ নিয়ে আমি এখন অনেকটাই নিশ্চিন্ত।”
এত দিন যে-রক্ষণ রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল অবনমনের আওতায় থাকা মোহনবাগানের, ডার্বিতে সেই রক্ষণই নির্ভরতা জুগিয়েছে। এই মুহূর্তে আই লিগের পরের ম্যাচগুলোতে করিমের অন্যতম প্রধান ভরসা আইবর আর ইচে। সবুজ-মেরুন রক্ষণের নেতৃত্বে যিনি, সেই রহিম নবিও এ দিন বলে দিলেন, “সত্যি ওরা দুজন খুব ভাল খেলছে। দলের অবনমন বাঁচাতে ওরাই তো আমাদের প্রধান অস্ত্র।”
২০০৪-০৫ সালে জাতীয় লিগে (তখনও আই লিগ হয়নি) কোনও মতে অবনমন বাঁচিয়েছিল মোহনবাগান। সে বার মরসুমের মাঝে দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন সুব্রত ভট্টাচার্য। এ বার করিমও মরসুমের মাঝেই ওডাফাদের দায়িত্ব নিয়েছেন। এ বারও অবনমনের ভূত তাড়া করে বেড়াচ্ছে মোহনবাগানকে। এ বারও কি বেঁচে যাবে মোহনবাগান? উত্তরটা মনে হচ্ছে এখন ওডাফা-টোলগেদের সঙ্গে অনেকটাই নির্ভর করবে আইবর-ইচে জুটির উপরও। |