শনিবারের ডার্বি নিয়ে চর্তুদিকে প্রচুর কথা শুনছি। কোথাও আলোচনা চলছে, ওডাফার ফ্রিকিক নিয়ে। কেউ বলছেন, গোল না হলেও ভাল ফুটবল হয়েছে।
আমার কথা শুনলে অনেকের ধাক্কা লাগবে নিশ্চয়ই। কিন্তু কী করব? এর চেয়ে খারাপ ফুটবল ম্যাচ আমি দেখিনি অনেক দিন। ব্যক্তিগত স্কিল, পাসিং ফুটবল, থার্ড ম্যান মুভ, ওয়াল পাস কিছুই নেই। খুব সহজে, ম্যাচ থেকে মনে রাখার মতো কিছুই পেলাম না। ওডাফার ফ্রি কিক মিস নিয়ে এত যে হইচই হচ্ছে, ও রকম কিন্তু ফ্রিকিক বাঙালি ছেলেরাও মারে।
ম্যাচ থেকে লাভ বলতে দুটো টিমেরই কিছু নেই। ডার্বিতে ড্র হওয়ার ফলে মোহনবাগানের হাতে ম্যাচ আরও একটা কমল, পয়েন্টও মাত্র ৬। প্রশ্ন হচ্ছে, মোহনবাগান অবনমন বাঁচিয়ে ফেলতে পারবে কি না? ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, পারবে। কারণ যে টিমে ওডাফা-টোলগের মতো স্ট্রাইকার আছে, তাদের পক্ষে ম্যাচের পর ম্যাচ খারাপ খেলে যাওয়া সম্ভব নয়, আর ওরা ফিট যখন, মোহনবাগানের অবনমনের আশঙ্কাও কম। তা ছাড়া এখন দেড় মাস আই লিগ বন্ধ। মোহনবাগান আরও নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার সময় পাবে। তা ছাড়া ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ড্র করায় ওদের আত্মবিশ্বাসটাও ভাল জায়গায় থাকবে। |
বরং ঝামেলা বাড়ল ইস্টবেঙ্গলের। শনিবারের ডার্বি থেকে ওদের প্রাপ্তি বলতে শুধু হতাশা। একটা জিনিস বুঝে পেলাম না, যারা চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য লড়ছে তারা কেন এমন ডিফেন্সিভ ফুটবল খেলল? ইস্টবেঙ্গল প্রচুর পাস খেলেছে ঠিক। কিন্তু ওগুলো কোনও কাজের নয়। স্কোয়্যার পাস বা ব্যাক পাস খেলে কোনও লাভ হয় না। মর্গ্যানের টিম ম্যাচে সেটাই করছিল। স্কোয়্যার পাস খেলে সামনে চিডির জন্য বল তুলে তুলে ফেলা। এর নাম ফুটবল নাকি?
ম্যাচে দেখছিলাম, মোহনবাগান ফুটবলাররা অহেতুক দৌড়ে বেড়াচ্ছে। একটা কারণ হতে পারে যে ওরা ইস্টবেঙ্গলকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলেছিল। ভয় পাচ্ছিল। তাই ছুটোছুটি করে বল কাড়ার রাস্তায় যাচ্ছিল। ইস্টবেঙ্গল আবার নিজেদের অতীব শক্তিশালী ভেবে অর্থহীন পাস খেলেছে। আমি বুঝে পাচ্ছি না এই ফুটবল দেখার জন্য কেন কোটি-কোটি টাকা খরচ করে বিদেশি কোচ রাখতে হবে? স্টেডিয়ামে বসে ম্যাচটা দেখেছেন পঁচিশ হাজার দর্শক। কিন্তু টিভিতে তো দেখলেন লক্ষ-লক্ষ। কিছুই তো পেলেন না ওঁরা। একটা উদাহরণ দিই। ম্যাচের ১৬ থেকে ৩২ মিনিট এর মাঝে যে দু’টো জিনিস দেখেছি, সেটাই পুরো ম্যাচের প্রাপ্তি। ওডাফার ফ্রিকিক। আর টোলগের একটা শট। কলকাতা লিগে রেলওয়ে এফসি বনাম কালীঘাট ম্যাচে এমন ফুটবল হতে দেখা যায়! করিম আর মর্গ্যান দু’জনেই মনে হয় মানসিক চাপে ছিল ম্যাচ নিয়ে। যে চাপ কাটিয়ে ওদের পক্ষে বেরোনো সম্ভব হয়নি। মর্গ্যানকে আবার এখন নিজের টিম নিয়ে ভাবতে হবে। চার্চিল কী করল না করল, সেটা দেখতে হবে। সুভাষের টিম আজ ড্র করেছে। কিন্তু ঘটনা হল, ইস্টবেঙ্গলকে যদি ফিরে আসতে হয় তা হলে পরের দু’টো ম্যাচ জিতে ছ’পয়েন্ট তুলতেই হবে। দেখা যাক, পারে কি না। |