মেলা শেষ, বই ছাপিয়ে
দেদার বিকোল বিরিয়ানি
য় নয় করে অন্তত দশটা মোটরবাইকের বুকিং হয়েছে। আলুর বন্ড বিক্রি হয়েছে আরও অনেক বেশি। সবচেয়ে বেশি বিক্রি বিরিয়ানির। অসমর্থিত সূত্রে খবর, বিরিয়ানি বিক্রি হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ প্যাকেট। স্ক্র্যাচ কার্ডের অফার থাকায় কেকও বিকিয়েছে দেদার। মেদিনীপুর থেকে আসা পটুয়ারা পটের পাশাপাশি টিশার্টে ছবি এঁকে বিক্রি করছেন। তার বিক্রিও খারাপ নয়। সরাসরি বিক্রি নয়, তবে প্রতিদিনই তাঁদের সিরিয়াল আর বিভিন্ন শো-র প্রচারে সবচেয়ে বেশি লোক জড়ো করেছে দু’টি বিনোদন চ্যানেল। মিলনমেলা প্রাঙ্গণে ষোলো দিন ধরে ‘কলকাতা পুস্তক মেলা’ নামে যে মেলাটি হয়ে গেল সেখানে এই সমস্ত পণ্যের পাশাপাশি বইও বিক্রি হয়েছে। সংগঠকদের দাবি, বইয়ের বিক্রি গত বছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। তবে এ বছর প্রকাশনা বহির্ভূত পণ্যের স্টল অনেক বেশি। এক নম্বর গেটের কাছে পুলিশ প্যাভিলিয়নের পাশেই রাজ্য সরকারের ‘ওয়েবরেডা’র স্টল। সামনে দাঁড় করানো পাঁচটি বাইক। দাম এবং বুকিংয়ের বিস্তারিত বিবরণ লেখা লিফলেট মিলছে স্টলেই। সেখানেই এক বিক্রেতার থেকে জানা গেল, বইমেলায় গোটা দশেক বাইকের বুকিং হয়েছে। খোঁজ নিয়েছেন কয়েক হাজার লোক।
এই সব নিয়েই তো বইমেলা! মানুষের মেলা। সেখানে সবই থাকবে সংস্কৃতির শাখা হিসেবে। রবিবার ৩৭তম বইমেলার শেষ দিনে এমনটাই জানালেন পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলাসর্র্ গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। বললেন, “ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় কয়েক বার গিয়ে দেখেছি, বিষণ্ণতায় ছেয়ে আছে। ই-বই আর সিডি, ডিভিডির দাপটে সেখানে বই পিছু হঠছে। ভিড়ও নেই।” আর এখানে তারুণ্যে, প্রাণের স্ফুর্তিতে জমজমাট বইমেলা ত্রিদিববাবুর এমনই মত।
এ বইমেলাকে জমজমাট না বলে সত্যিই উপায় নেই। কারণ গিল্ডের সভাপতি সুধাংশু দে-র হিসেব মতো শনিবার, এক দিনেই মেলায় ঢোকেন ছ’লক্ষেরও বেশি মানুষ। টিকিট বা আমন্ত্রণপত্রের ব্যবস্থা ছাড়াই শনিবার পর্যন্ত মোট ১৬ লক্ষ ৪৫ হাজার মানুষ আসার যে হিসেব তিনি দিয়েছেন, তা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে।
সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও ভিড় নিয়ে দ্বিমত নেই। সেই ভিড়কে সফল ভাবে কাজে লাগিয়ে হরেক রকমের প্রচারে নেমেছে প্রচুর সংগঠন। সংসদ আক্রমণের দায়ে আফজল গুরুর ফাঁসির প্রতিবাদ এবং ফাঁসি বন্ধের আবেদন জানাতে রবিবার এপিডিআরের বিরাট মিছিল বেরোয় মেলায়। পরে মেলার মাঠে তারা সভাও করে। সন্ধ্যার পরে ইসকনের কৃষ্ণভক্তেরা রীতিমতো খোল করতাল নিয়ে কীর্তন করে মেলা পরিক্রমা করেন। এ হেন বইমেলায় যত্রতত্র খাবার স্টল, বাইক বিক্রি, মিছিল এবং কীর্তন কোনওটাই খুব বেমানান লাগেনি।
তবে বইমেলা ফেরত মানুষের ঘরে ফেরার হয়রানি যে একই আছে, তা মানতে নারাজ ত্রিদিববাবু। তাঁর বক্তব্য, কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন ঠিকই, কিন্তু বাস না পেয়ে রাতে বাড়ি ফিরতে পারেননি, এমন অভিযোগ তিনি পাননি। বইমেলা থেকে সবাই রোজই বাড়ি ফিরছেন। তবে সত্যিই অসুবিধা হয়ে থাকলে আগামী বছর আরও বাসের ব্যবস্থা নিশ্চয়ই তিনি করবেন, আশ্বাস দিয়েছেন ত্রিদিববাবু। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী বছর বইমেলা সাত দিন বাড়ানোর কথা বললেও ত্রিদিববাবু নিশ্চিত করে তারিখ জানাতে পারেননি। কারণ তিনি এখনও জানেন না আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডার মেনে মেলার নির্দিষ্ট দিনের আগে সাত দিন বাড়বে, নাকি পরে। অন্য বছরের মতো এ বার তাই মেলার শেষ দিনে আগামী বছরের মেলার দিন ঘোষণা করতে পারলেন না ত্রিদিববাবু। এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই ঘণ্টা বাজিয়ে হাততালি দিয়ে এ দিন রাত ৯টায় শেষ হয়ে গেল ৩৭তম কলকাতা বইমেলা।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.