নিজের বাড়িতে খুন হওয়া সত্তর বছরের বৃদ্ধা সাধনা চট্টোপাধ্যায়ের খুনিদের এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তার জেরে রবিবার রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানালেন মন্তেশ্বরের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। সভা চলাকালীন গ্রামবাসীদের একটি প্রতিনিধি দল মন্তেশ্বর থানার ওসি শেখ বখতিয়ার হোসেনের সঙ্গে আলোচনা করতে যান। ওসি জানান, ঘটনাটি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চলছে। ঘটনায় জড়িতদের দিন দশেকের মধ্যে গ্রেফতার করা যাবে।
গত ২৭ জানুয়ারি নিজের বাড়িতে খুন হন মন্তেশ্বরের কুঁড়েপাড়ার বাসিন্দা সাধনাদেবী। তাঁর গলায় লোহার শেকল পেঁচানো ছিল। তিনি সে দিন বাড়িতে একা ছিলেন। যদিও কিছু টাকা ছাড়া তেমন কোনও দামি জিনিসই খোয়া যায়নি বলে পুলিশের দাবি ছিল। তদন্তের জন্য পুলিশ কুকুরও ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও সেই খুনের কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। কালনার এসডিপিও, সিআই, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরুণ হালদার একাধিকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কয়েকজনকে এ ব্যাপারে পুলিশের তরফে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ প্রায় পাঁচশো বাসিন্দা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে মন্তেশ্বর থানার উদ্দেশে মিছিল করে রওনা দেন। একটি সভাও করা হয় সেখানে। তাঁদের বক্তব্য, কাছাকাছি থানা থাকলেও গত দেড় বছরে প্রায়ই চুরি, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটছে। এর বেশিরভাগেরই কিনারা করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। সম্প্রতি কুঁড়েপাড়ার ওই বৃদ্ধার খুনে পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বাসিন্দাদের দাবি, এই খুনের পর থেকেই এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। দিনের আলো নিভে গেলেই বেশিরভাগ বাড়িতে দরজায় খিল পড়ে যাচ্ছে। মন্তেশ্বরের বাসিন্দা উজ্জ্বল রায়, সজল কুণ্ডু, বাবুল সরকারদের কথায়, “এলাকায় অনেক পরিবারের পুরুষ সদস্যদের কাজের জন্য বছরের বেশির ভাগ সময় বাইরে কাটাতে হয়। সেই পরিবারের মহিলারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।”
মহকুমা পুলিশের আধিকারিকদের দাবি, কুঁড়েপাড়ার ঘটনাটি জটিল। ঠান্ডা মাথায় সাধনাদেবীকে খুন করা হয়েছে। ১ জানুয়ারি ধাত্রীগ্রামে পঞ্চান্ন বছর বয়সী এক মহিলাকেও একই ভাবে একই সময়ে খুন করা হয়েছিল। পুলিশের অনুমান, দু’টি ঘটনার পিছনেই একই লোকজনের যুক্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে দোষীদের চিহ্নিত করা গেলে দু’টি ঘটনারই কিনারা হওয়ার সম্ভাবনা। রবিবার মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা চেষ্টার কোনও কসুর করছি না। আশপাশের জেলাগুলিতেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে, এই ধরণের কোনও খুন সেখানে হয়েছে কি না। ইতিমধ্যেই সন্দেহভাজন হিসেবে কয়েকটি নামও মিলেছে। তবে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না।” |