ড্র ডার্বির পর বিদেশিরা আত্মবিশ্বাসী, স্বদেশিরা আশঙ্কায়
বাড়ছে অবনমন আতঙ্ক কঠিন হচ্ছে শৃঙ্গ জয়
ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের স্বপ্ন-ভাণ্ডারে কি আই লিগ ফের অনিশ্চিত হয়ে পড়ল? করিম বেঞ্চারিফা কি তাঁর দুঃস্বপ্নে ফের অবনমনের ভূত দেখছেন? পুরোপুরি ভাবে না হলেও, ডার্বির ঠেলায় শুরু হয়ে গেল আলো-আঁধারির খেলা।
ইস্টবেঙ্গলের ব্রিটিশ কোচ যেখানে ট্রফির সন্ধানে ব্যস্ত, সেখানে মোহনবাগানের মরক্কান কোচের সামনে অবনমন বাঁচানোর লড়াই। কিন্তু শনিবাসরীয় সন্ধ্যার গোলশূন্য ম্যাচ কী আরও জটিল করে দিল দু’দলের সংগ্রাম?
মোহন-ইস্ট শিবির অবশ্য মানতে রাজি নয়, তাদের আশা শেষ। উলটে তাদের বহিরঙ্গের হাবভাব যেন বলছে, ‘পিকচার আভি ভি বাকি হ্যায়’। মর্গ্যানের যুক্তি, “এক পয়েন্টকে আমি খারাপ বলে মনে করি না। হেরে গেলে হয়তো চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়তাম। হারিনি। লিগে এখনও অনেক ওঠা-নামা হবে।” অবনমনের খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে করিম আবার বলছিলেন, “ভয় পাওয়ার মতো কিছু হয়নি। এখনও অনেক ম্যাচ বাকি আছে।”
কিন্তু পরিসংখ্যানে তো অন্য ছবিই ভেসে উঠছে। ইস্টবেঙ্গল (২০ ম্যাচে ৪০) লিগ তালিকায় এখনও শীর্ষে থাকলেও চ্যাম্পিয়নশিপের আশা জাগিয়ে রাখতে হলে হা-পিত্যেশ করে বসে থাকতে হবে অন্যদের দিকে তাকিয়ে। সুভাষ ভৌমিকের চার্চিল ব্রাদার্স কী করছে? আর্মান্দো কোলাসোর ডেম্পোর কী অবস্থা?
শনিবারের দুই কোচ। ছবি: উৎপল সরকার, শঙ্কর নাগ দাস
চার্চিল (১৭ ম্যাচে ৩৮) এবং ডেম্পো (১৮ ম্যাচে ৩৭) যে তরতর করে এগিয়েই চলেছে! মোহনবাগান আবার সবার নীচে (১৫ ম্যাচে ৬)। অবনমনের অন্ধকূপ থেকে বেরোতে হলে যাদের হোঁচট খাওয়া খুব জরুরি, সেই সালগাওকর (১৯ ম্যাচে ২০) ২-০ গোলে হারিয়ে দিল লাজংকে। রবিবার ওএনজিসি-কে যদি ভাইচুং ভুটিয়ার ইউনাইটেড সিকিম টপকে যেতে পারে, তা হলে বাগানের সমস্যা আরও বাড়বে বই কমবে না! যা দাঁড়াচ্ছে, এক পয়েন্টের প্রাপ্তি নয়, দু’পয়েন্টের ক্ষতি-ই হল দুই প্রধানের।
কোচেরা আশায় বুক বাঁধছেন তো বিদেশি ফুটবলাররা আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছেন। ওডাফা ওকোলি সাফ বলে দিলেন, “অবনমন আমরা বাঁচাবই। এই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট পেলে ভাল হত। তবে যেটা হয়নি, সেটা নিয়ে ভেবে লাভ নেই। পরের ম্যাচে আমাদের তিন পয়েন্ট পেতেই হবে।” তবু ড্রেসিংরুম ছেড়ে বেরোনোর সময় তাঁর চোখে-মুখে একরাশ যন্ত্রণা কেন? নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকার বললেন, “আমার শট পোস্টে না লাগলে আজ তো আমরাই ম্যাচ জিতে যাই।” হতাশ টোলগে ওজবেও। সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে যে তাঁরও প্রথম জয়ের স্বাদ পাওয়া হল না! “পেনাল্টি পেলাম না। তিন পয়েন্ট নিশ্চিত হয়ে গেলে তো আর অবনমন নিয়ে এত প্রশ্নই উঠত না!”
লাল-হলুদ ফুটবলাররাও ফুটছেন। ড্রেসিংরুম থেকে বেরোনোর সময় চিডি বলে গেলেন, “লিগ এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেলে তো হয়েই যেত! ধৈর্য রাখুন, এখনও অনেক খেলা বাকি।” চিডির গাড়িতেই যুবভারতী ছাড়লেন পেন ওরজি। নাইজিরিয়ান গোলমেশিনের মতো তিনিও বলে গেলেন, “আমরা হারিনি, দু’পয়েন্ট হারিয়েছি। অন্যদেরও হতে পারে। কিছুই শেষ হয়ে যায়নি।” বিদেশিরা অনড় থাকলেও, স্বদেশিরা যেন সামান্য আশঙ্কায়! মেহতাব হোসেন বলছিলেন, “লিগ পুরোপুরি হাতছাড়া না হলেও, খুব কঠিন হয়ে গেল। ট্রফি পেতে হলে এখন অন্যদের ভরসায় থাকতে হবে।” আর অবনমন নিয়ে রহিম নবির ব্যাখ্যা, “ম্যাচটা জিততে পারলে ৯ পয়েন্ট হয়ে যেত। মানসিক ভাবেও অনেকটা এগিয়ে যেতে পারতাম।”
টিকিটের চড়া দামে চির-পরিচিত ডার্বির আমেজ উধাও। আর নিরামিষ স্কোরলাইনে আরও ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে দু’প্রধানের আই লিগ ভবিষ্যৎ।
বাগানে অবনমন-আশঙ্কা! শৃঙ্গ জয়ের পথে মশালের আলোও যেন একটু ফিকে!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.