|
|
|
|
অবশেষে মিলল বিচার, খুশি নিহতদের পরিজন |
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
দেরিতে হলেও অবশেষে দিনটা এল।
মিলল বহু প্রতীক্ষিত ‘সুবিচার’। ২০০৫ সালেই ঘোষণা হয়েছিল মৃত্যুদণ্ড। দীর্ঘ সাত বছরেরও বেশি সময় কেটে যাওয়ার পর শেষমেশ তা কার্যকর হল।
শনিবার সকাল আটটা। ফাঁসি হয়ে গেল ২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর সংসদে জঙ্গি হানার অন্যতম ষড়যন্ত্রী জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি আফজল গুরুর। সংবাদমাধ্যমে ফাঁসির খবর প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন সংসদ হামলায় নিহতদের পরিবারবর্গ।
“কতটা যে নিশ্চিন্ত লাগছে, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।” বললেন শহিদ জে পি যাদবের বিধবা স্ত্রী প্রেম। রাজ্যসভার নিরাপত্তা সহকর্মী হিসেবে সংসদে কর্মরত থাকাকালীন জঙ্গি হামলায় নিহত হন রাজস্থানের সিকার জেলার বাসিন্দা জে পি যাদব।
মৃত্যুর পর, ২০০২ সালে সরকারের পক্ষ থেকে সাহসিকতার জন্য মরণোত্তর অশোক-চক্র সম্মানে ভূষিত করা হয় জে পি যাদবকে। |
|
এক নিহতের পরিবারের সদস্যকে মিষ্টি মুখ করাচ্ছেন ‘অল ইন্ডিয়া
অ্যান্টি টেরোরিস্ট ফ্রন্ট’-এর প্রেসিডেন্ট এম এস বিট্টা। ছবি: পি টি আই |
কিন্তু ২০০৫ সালে বিচার শেষে ফাঁসির রায় ঘোষণার পরেও স্থগিত থাকে আফজলের ফাঁসি। রাষ্ট্রপতির কাছে বার বার আবেদন করেও কোনও ফল হয়নি। সরকারি দীর্ঘসূত্রতার কারণে ফাঁসি না হওয়ার ক্ষোভে সে সম্মান ফিরিয়ে দেন যাদবের পরিবার।
কিন্তু আজ ফাঁসির খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই ২০০৬ সালে বর্জন করা অশোক-চক্র সম্মান ফিরে পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন প্রেম। পেশায় শিক্ষিকা এবং দুই সন্তানের মা প্রেম বলেছেন, “আমি এবং আমার পরিবার সুবিচার পেয়ে খুবই খুশি। কোনও রকম অনুকম্পা পাওয়ার যোগ্য ছিল না আফজল। তার ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত ওই সম্মানের মাধ্যমে শহিদের প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব হত না।”
জে পি যাদবের ভাই মোহন বলেছেন, “শুধু আমরাই নই। ২০০১ হামলায় যাঁরা প্রিয়জনদের হারিয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই এই সিদ্ধান্তে খুশি হয়েছেন।”
আফজলের ফাঁসির পর প্রায় একই প্রতিক্রিয়া জানালেন আর এক নিহত সংসদ কর্মচারী মতবর সিংহ নেগির পরিবার। তাঁর ছেলে গৌতম বলেছেন, “এই ফাঁসির সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার একটা ভাল পদক্ষেপ করল। যে জঙ্গি-গোষ্ঠীগুলি ভারতে সমস্যা তৈরির চেষ্টা করছে, তাদের কাছে একটি কড়া বার্তা পৌঁছল এই ফাঁসির মাধ্যমে। আরও অনেক দিন আগেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়া উচিত ছিল। সরকার কেন এত দিন ধরে ব্যাপারটা আটকে রেখেছিল, সেটা সরকারই বলতে পারবে। কিন্তু দেরিতে হলেও অবশেষে শাস্তি হল, আমরা খুশি। এ বার হয়তো সংসদ হামলা নিয়ে সব রাজনীতির অবসান হবে।”
সুবিচার পেয়ে খুশি মতবর নেগির স্ত্রী কল্পা দেবীও। “আজ আমাদের খুশির দিন। শেষ পর্যন্ত সুবিচার পেলাম। হামলার ঘটনার পর থেকে প্রত্যেক বছরই আফজল গুরুর ফাঁসির দাবিতে আবেদন জানিয়ে এসেছি আমরা। কখনও মনে হয়েছে, ওর হয়তো আর সাজাই হবে না। কিন্তু অবশেষে আজ এই দিনটা এল।”
সে দিনের হামলায় নিহত সাব-ইনস্পেক্টর নানক চন্দের স্ত্রী গঙ্গা দেবীও বলেন “আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। কিন্তু কসাবের ফাঁসি হওয়ার পর বিশ্বাস ফিরে এসেছিল। মনে হয়েছিল, আফজলেরও নিশ্চয় এই দিনটা আসবে। আজ আমি সত্যিই খুব খুশি।”
|
|
|
|
|
|