খেলার নাম করে ডেকে নিয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রের উপরে যৌন অত্যাচার চালিয়ে শ্বাসরোধ করে টিপে খুনের অভিযোগে ৪ প্রতিবেশী তরুণকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সোমবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণপল্লি এলাকা থেকে তাদের ধরা হয়। পুলিশের দাবি, ধৃতরা জেরায় অপরাধ কবুল করেছে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম সমীর মাহালি, সুধীর মাহালি, কুড়ানু মাহালি এবং জিতেন সরকার। বয়স ১৮ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে। জিতেন প্রথম বর্ষের ছাত্র। বাকিদের তিন জনের কেউ গ্যারেজ কর্মী, কেউ হোটেলকর্মী। এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের আপত্তিকর কাজকর্মের অভিযোগ রয়েছে। এর আগেও পাড়ার এক ছোট ছেলেকে যৌন নিগ্রহের চেষ্টার অভিযোগে ধৃতরা ধরা পড়ে।
গত রবিবার সকালে গঙ্গারামপুর স্টেডিয়াম চত্বর থেকে ১২ বছর বয়সী মিলন মহালির দেহ উদ্ধার হয়। সে সেন্ট জোসেফ হাই স্কুলের ছাত্র ছিল। পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নিহত কিশোরের পরনের প্যান্ট খোলা ছিল। গালে কামড়ের দাগ মিলেছে। শ্বাসরোধ করে মারার চিহ্ন স্পষ্ট ছিল। ফলে তার উপর যৌন অত্যাচারের বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ ছিলই। নিহত কিশোরের মায়ের তরফে গত দুদিন ধরে কোনও অভিযোগ না করায় সমস্যা হয়। তবে তদন্ত চালিয়ে বিশেষ সূত্র থেকে খবর পেয়ে রাতে খুনে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।” হতদরিদ্র পরিবারের মিলনের বাবা নেই। তাকে অনেক কষ্ট করে তার মা ভ্যালেনটিনা দেবী পড়াচ্ছিলেন। তিনি হোটেলে কাজ করে সংসার চালাতেন। বিকৃত যৌনমনস্কতা থেকে এই ঘটনা বলে পুলিশ সুপার মনে করেন। এদিন ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় মামলা রুজু করে। পুলিশ গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে পাঠালে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। গঙ্গারামপুর থানার আইসি অসীম গোপ বলেন, “অভিযুক্ত ৪ জন মদ গাঁজা সহ নানা ধরনের নেশায় আসক্ত বলে জানা গিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এর আগেও ছোট ছেলেদের উপর যৌন হেনস্থার অভিযোগ ছিল।” আইসি জানিয়েছেন, গত শনিবার সন্ধ্যার পর একটা ‘ভাল খেলা খেলব’ বলে ফুঁসলে কিশোর মিলনকে স্টেডিয়ামে নিয়ে গিয়ে ধৃতরা যৌন অত্যাচার শুরু করে। পরে ঘটনার প্রতিবাদ করে বিষয়টি সকলকে বলে দেবে বলে ওই কিশোর জানালে তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে পুলিশের সন্দেহ। ধৃত জিতেনের বাবা তুলসীবাবু বলেন, “জানতাম না ছেলে কুসঙ্গে মেশে। বন্ধুরা ওকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।” কুড়ানু মাহালির বাবা সুশীলবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। |