মোর্চার সমালোচনায় দুই দল
সর্বদল বৈঠকে যোগ দিতে নারাজ গোর্খা লিগ ও গোর্খাল্যান্ড টাস্ক ফোর্স
গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বিমল গুরুঙ্গের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ দেবে না গোর্খা লিগ ও গোর্খাল্যান্ড টাস্ক ফোর্স। মঙ্গলবার দুই দলের তরফ থেকেই তা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে, এদিনই মোর্চার পক্ষ থেকে পাহাড়ের সমস্ত দলকে চিঠি দিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার জিমখানা হলে সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ দেওয়ার ব্যপারে আবেদন জানানো হয়। সেখানে মোর্চা প্রধান বিমল গুরুঙ্গ উপস্থিত থাকবেন। সিপিআরএমের তরফে জানানো হয়েছে, তারা ওই বৈঠকে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে দলীয় স্তরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনটি দলের তরফে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
গোর্খাল্যান্ড টাস্ক ফোর্সের নেতা অ্যানোস দাস দাবি করেন, সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আগে জিটিএ ছেড়ে বের হওয়া উচিত মোর্চার। তিনি বলেন, “একই সঙ্গে দুটি কাজ চলতে পারব না। সরকারি পদে বসে থাকব। লালবাতি গাড়িতে চড়ব, আবার গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন করব তা হতে পারে না। মোর্চা তথা বিমল গুরুঙ্গ ওই চুক্তি বাতিল করে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলে বিষয়টি ভাবা যেত। তা ছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিটিএ চুক্তির দিনই ঘোষণা করেছিলেন রাজ্য ভাগ হতে দেবে। সে সময় মোর্চা নেতৃত্ব তাঁদের সঙ্গে আনন্দে মেতেছিলেন কেন?” গত ২৯ জানুয়ারি দার্জিলিং ম্যালে উত্তরবঙ্গ উৎসবের সভায় মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেন তিনি। জিটিএফ নেতা বলেন, “সরকারি মঞ্চ মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। তিনি নিজেকে ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ বলে যে আচরণ করেছেন তা পাহাড়ের মানুষ কোনদিন মেনে নেবে না। একজন মুখ্যমন্ত্রী এমন আচরণ করবেন, তা ভাবতে পারি না।” গোর্খা লিগের সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ খাতি মোর্চার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন। মদন তামাং হত্যা মামলায় মোর্চার যে নেতাদের নাম রয়েছে তাঁদের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে গোর্খা লিগ যোগ দেবে না জানিয়েছেন প্রতাপবাবু। তিনি বলেন, “বিমল গুরুঙ্গ মাঝে মধ্যেই নানা কথা বলেন। এর আগেই বহুবার তা প্রমাণিত হয়েছে। গোর্খাল্যান্ড না হলে তিনি আত্মহত্যা করবেন বলেও একবার জানিয়েছিলেন। প্রতি ক্ষেত্রেই পিছিয়ে এসেছেন। এখন বলছেন জিটিএ’তে রোশন গিরি সই করেছেন। এ সবের কোনও মানে হয় না। মোর্চা পাহাড়ের সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। মুখ্যমন্ত্রী ভেবেছিলেন গুরুঙ্গকে রাজি করালেই পাহাড় শান্তিতে থাকবে। তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। গোর্খাল্যান্ড পাহাড়ের মানুষের আবেগ। এই দাবিতে আন্দোলন চলবে।” ২৯ জানুয়ারি ম্যালের সভার সমালোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অগণনান্ত্রিক বলে অভিযোগ করেন গোর্খা লিগ নেতৃত্ব। সিপিআরএমের সম্পাদক নরবুলা লামা বলেন, “মোর্চার চিঠি আমরা এখনও পাইনি। সংবাদপত্রের মাধ্যমে সর্বদলীয় বৈঠকের কথা জানতে পেরেছি। তাদের চিঠি পেলে দলীয় স্তরে আলোচনা করে বৈঠকে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
২৯ জানুয়ারি দার্জিলিংয়ের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার পর মোর্চা ও রাজ্য সরকার বিরোধ ক্রমশ বাড়ছে। মোর্চা সভাপতি জিটিএ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশের পাশাপাশি তৃণমূলকে বিশৃঙ্খল দল বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের উপর চাপ আরও বাড়াতে সর্বদলীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গুরুঙ্গ। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা জিটিএ এগজিকিউটিভ বিনয় তামাং বলেন, “গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলবে। সেখানে আমরা পাহাড়ের সমস্ত দলকে সামিল করার জন্য সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে। প্রত্যেককে চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হবে। বৈঠকে যোগ দেওয়া কিংবা না দেওয়াটা প্রত্যেকটি দলের নিজস্ব ব্যাপার। তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইছি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.