রাজনৈতিক ভাবে বিচ্ছেদ ঘটেনি তৃণমূল এবং মাওবাদীদেরজঙ্গলমহলে শান্তি ফেরার রাজনৈতিক কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বর্তমান শাসকদলকে এ ভাবেই বিঁধলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দাবি করেন, “জঙ্গলমহল শান্ত তার মূল কারণ হলতৃণমূল, মাওবাদী ও তার মাঝখানে সেতুবন্ধনের কাজ করত জনসাধারণের কমিটি। এই তিন জনেরই লক্ষ ছিলাম আমরা। আমরা সরে গিয়েছি বলে অভিযোগ করার কিছু নেই। তাই এখন জঙ্গলমহল শান্ত।” তাঁর সংযোজন, “রাজনৈতিক ভাবে ওই দলগুলির এখনও বিচ্ছেদ হয়ে যায়নি।”
মাওবাদীরা কাদের পক্ষে তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে তরজা চলছে সিপিএম এবং তৃণমূলে। রাজ্য ক্ষমতায় আসার আগে নেপালের মাওবাদীদের সংসদীয় গণতন্ত্রে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ায় সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরির জড়িত থাকার ঘটনা উল্লেখ করে মাওবাদী-সিপিএম ‘আঁতাঁত’ নিয়ে সরব ছিল তৃণমূল। পক্ষান্তরে, মাওবাদী নেতা বিক্রমের একাধিক বিবৃতিতে তৃণমূলের সঙ্গে মাওবাদীদের ‘ঘনিষ্ঠতা’র উল্লেখ রয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বামপন্থীরা। যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্র সরকারের কাছে জঙ্গলমহল থেকে যৌথ বাহিনী তুলে নেওয়ার জন্য নিয়মিত দরবার করতেন, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে তিনিই কেন যৌথ বাহিনী প্রত্যাহারের প্রশ্নে পদক্ষেপ করেননিসে টিপ্পনিও নিয়মিত শোনা যায় সিপিএম নেতাদের মুখে। বুদ্ধবাবুর এ দিনের মন্তব্য অনেকটা সেই ‘ধারা’র অনুসারী বলেই মত রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের।
তবে জঙ্গলমহলের উন্নয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা তথা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদার প্রতিক্রিয়া, “কারও সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই। বাম-জমানার ৩৪ বছরে জঙ্গলমহলে উন্নয়ন হয়নি। এখন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে প্রত্যন্ত এলাকায় রাস্তা হচ্ছে, সেতু হচ্ছে, পানীয় জলের বন্দোবস্ত হচ্ছে। মানুষ খেতে পাচ্ছেন। তাই শান্তি ফিরেছে। বুদ্ধবাবু অভিযোগ করার জন্য অভিযোগ করেছেন। ওঁর উদ্দেশ্য, লোককে বিভ্রান্ত করা। প্রয়োজন হলে উনি জঙ্গলমহলে ঘুরে দেখুন, আসল ছবিটা কী।” |