শিক্ষায় দলতন্ত্র নাপসন্দ, তবে বুদ্ধ চুপ অনিলায়ন নিয়ে
লিমুদ্দিন থেকে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করাটা এক সময় সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের নামের সঙ্গে সমার্থক হয়ে গিয়েছিল। সেই অনিলায়নের সামনে এক সময় বেশ অসহায় ছিলেন তিনি। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ যে তাঁর পছন্দ নয়, বামফ্রন্ট সরকারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য স্পষ্টই জানালেন সে কথা।
মঙ্গলবার এবিপি-আনন্দকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বুদ্ধদেববাবু বলেন, “শিক্ষাক্ষেত্রে দলতন্ত্র থাকা উচিত নয়। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।” প্রসঙ্গ ছিল, কলেজ পরিচালন সমিতিতে আরাবুল ইসলামের মতো নেতার প্রবল উপস্থিতি। রাজ্যে শিক্ষানুরাগীদের অনেকেই মনে করেন, শিক্ষায় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণকে সিপিএম প্রায় শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল। প্রাথমিক স্কুলই হোক বা বিশ্ববিদ্যালয় যে কোনও কাজেই আলিমুদ্দিনের ছাড়পত্র প্রয়োজন হত। উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রেও যোগ্যতার থেকে দলীয় আনুগত্যকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রাজনীতিমুক্ত করার স্লোগান তুললেও ক্ষমতায় আসার পরে তৃণমূল সিপিএমের দেখানো পথই অনুসরণ করছে বলে অভিযোগ। একই ভাবে চলেছে স্কুলের পরিচালন সমিতি দখল, কলেজে পরিচালন সমিতির মাথায় দলের নেতা-মন্ত্রীদের বসানো। আরাবুলের মতো নেতা এই প্রক্রিয়াতেই ভাঙড় কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হয়েছেন। উপাচার্য বাছাইয়ের সার্চ কমিটিতেও সরকারি প্রতিনিধি রেখেছে বতর্মান সরকার। বুদ্ধদেববাবু অবশ্য অনিলায়নের প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন। তবে শিক্ষাক্ষেত্রে দলতন্ত্র তাঁর পছন্দ নয়, নির্দ্বিধায় তা জানান। অনেকেরই ধারণা, দলের আপত্তি সত্ত্বেও বুদ্ধদেববাবু প্রাথমিকে ইংরেজি ফিরিয়ে আনতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। বলেছিলেন, এ রাজ্যের ছেলেমেয়েদের প্রথম শ্রেণি থেকেই ইংরেজি শেখা দরকার। প্রেসিডেন্সিকে কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার ক্ষেত্রেও তাঁর মতই নির্ণায়ক হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালন সমিতিতে তাঁর দলের নেতাদের উপস্থিতি যে আখেরে শিক্ষার মান বাড়াতে সহায়ক হয়নি, শিক্ষানুরাগীদের তেমনই মত। এই নিয়ে শিক্ষিত সমাজে সিপিএম এবং বর্তমানে তৃণমূল যে খুবই সমালোচিত, সে কথা মাথায় রেখেই তিনি বলেন, “দলীয় নেতারা কলেজে ঢুকবেন কেন?” বর্তমান জমানার সঙ্গে তাঁদের আমলের একটা পার্থক্যও তিনি করতে চেয়েছেন। জানান, বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকতেই সিপিএমের নেতাদের কলেজ পরিচালন সমিতি থেকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল। বলেন, “প্রশান্ত শূর, নকুল মাহাতোর মতো কিছু নেতা নাড়ির টানে কিছুটা সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু দলীয় ভাবে সবাইকে সরে যেতে বলা হয়েছিল।” ‘নাড়ির টান’ কথাটির ব্যাখ্যাও তিনি দেন। কলেজ গড়ার ব্যাপারে সিপিএমের বেশ কিছু জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী নেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। কালক্রমে তাঁদের অনেকেই পরিচালন সমিতিতে থেকে গিয়েছেন। পরক্ষণেই বলেন, “দলের পদ ব্যবহার করে অনেকে পরিচালন সমিতিতে থেকেছেন। এটা আমার পছন্দ নয়।” এই উপলব্ধি কেবল তাঁর নিজের, নাকি আলিমুদ্দিনও অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে চায়, ভবিষ্যৎই তা স্পষ্ট করবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.