নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মনে করা হচ্ছিল ছাড় পাবে শুধু পরিবহণ। কিন্তু সংগঠনের ভেতরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে ২১ তারিখ ভাষা দিবসের দিন এ রাজ্যে তারা সাধারণ ধর্মঘটে যাচ্ছে না বলে জানিয়ে দিল সিটু। মঙ্গলবার সিটুর রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী এ কথা জানিয়েছেন। তবে ২১ তারিখ রাজ্যে কলকারখানা বন্ধ রেখে তাঁরা শিল্প ধর্মঘট পালন করবেন বলে জানান শ্যামলবাবু। আইএনটিইউসি-ও যাতে ওই দিন ধর্মঘট থেকে সরে আসে, সে জন্য সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি সঞ্জীব রেড্ডির কাছে আর্জি জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, “রাজ্যে সাধারণ ধর্মঘট করার মতো পরিস্থিতি নেই।”
পশ্চিমবঙ্গে যে ২১ তারিখ ধর্মঘট হবে না, প্রকাশ কারাটের নির্দেশ উপেক্ষা করে সোমবারই সেটা জানিয়ে দিয়েছিলেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এ দিন শ্রমিক ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে শ্যামলবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘সোমবার বুদ্ধ কী বলেছে, জানি না। ভাষা দিবসে সাধারণ ধর্মঘট না করার জন্য শঙ্খ ঘোষ-সহ বহু মানুষের চিঠি আমরা পেয়েছিলাম। আমাদের উপরে চাপ ছিল। সাধারণ মানুষও চাইছিলেন না। তাই ওই দিন সাধারণ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হচ্ছে।” শিলিগুড়িতে ১১টি শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠকের পরে কাল, বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে। শ্যামলবাবুর আশা, অন্যরাও ওই মত মেনে নেবেন।
বুদ্ধবাবু এ দিন বলেন, “কিছু মানুষ ধর্মঘট শুনলেই আপত্তি করেন। আমি সেই জায়গায় নেই। কিন্তু ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙালির কাছে একটি বিশেষ দিন। ওই দিনটা মানুষ পালন করতে না পারলে ভুল হবে। সে কারণেই দিল্লির শ্রমিক সংগঠনগুলিকে পুনর্বিবেচনা করতে বলেছিলাম। ২১ তারিখ সব কিছুই খোলা থাকবে।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার এক দিনও বন্ধ করতে দেবে না। এ দিন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত দোকানপাট খোলা রাখার আবেদন জানিয়ে বলা হয়েছে, দোকান খোলা রাখার জন্য বন্ধ সমর্থকদের হাতে কারও ক্ষতি হলে সরকার তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেবে।
২১ তারিখ সাধারণ ধর্মঘট করা হবে কি না, সে ব্যাপারে এ দিন সকালে সিটু অফিসে বৈঠকে বসেন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। শ্যামলবাবু সাধারণ ধর্মঘট প্রত্যাহার করার প্রস্তাব দেন। অন্য শ্রমিক সংগঠনগুলি অবশ্য সে প্রস্তাবে সায় দেয়নি। বামপন্থী ইউটিইউসি, এআইটিউসি, এআইসিসিটিউ ছাড়াও বিএমএস, আইএনটিউসি প্রমুখ সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে শিলিগুড়িতে বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই কার্যকর হবে। এসইউসির শ্রমিক সংগঠন ওই বৈঠক বয়কট করে। তাদের নেতৃত্ব জানান, দু’দিনই সাধারণ ধর্মঘট হবে। |