শহিদ বসন্ত বিশ্বাসের নামে মেলা। আর তার খরচ তুলতে চাঁদার দাবিতে সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও চালককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাচক্রে মেলার মূল উদ্যোক্তারা সকলেই জেলা তৃণমূলের তাবড় নেতা কিংবা পঞ্চায়েতের সদস্য। মেলার পৃষ্ঠপোষকের নাম: কারিগরী শিক্ষা মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস।
শনিবার কৃষ্ণনগরের ঝাউতলায় মাজদিয়া-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কের ঘটনা। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই দিন ভূমি রাজস্ব দফতরের একটি গাড়ি আসাননগরের দিকে যাচ্ছিল। তাতে জমি অধিগ্রহণ বিভাগের কর্মীরা যাচ্ছিলেন জনস্বাস্থ্য ও কারিগরী দফতরের অধিগৃহীত জমির টাকা বিলি করতে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “ঝাউতলা মোড়ের কাছে গাড়ি আটকে চাঁদার দাবি করা হয়। চালক চাঁদা দিতে অস্বীকার করেন।” অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) দেবাশিষ সরকার বলেন, “চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় মেলা উপলক্ষ্যে যারা চাঁদা তুলছিল তারা চালকের উপর চড়াও হয়। চালককে মারধরের পাশাপাশি গাড়িটিও ভাঙচুর করা হয়।” তিনি বলেন, “যারা এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশকে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। জেলা পুলিশের ডিএসপি দিব্যজ্যোতি দাস বলেন, “তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বড় লাট হার্ডিঞ্জের উপর বোমা ছোঁড়ার অভিযোগে ১৯১৫-এর ১১ মে পঞ্জাবের অম্বালা জেলে ফাঁসি হয় পোড়াগাছা ঝাউতলার বাসিন্দা বিপ্লবী বসন্ত বিশ্বাসের। ১২ বছর আগে শহিদের জন্মদিনে মেলা শুরু হয়। মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, “চাঁদাবাজরা মেলা কমিটির কেউ নয়। মেলার নাম করে কেউ যদি এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তাহলে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।”
এলাকার মানুষের অভিযোগ, বেশ কয়েক দিন ধরেই গাড়ি থামিয়ে চাঁদা তুলছে মেলা কমিটির লোকজন। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিএম। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এসএম সাদি বলেন, “স্বাধীনতা সংগ্রামী বসন্ত বিশ্বাসের নাম করে মন্ত্রীর নেতৃত্বে তোলাবাজি চলছে। যার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না সরকারি গাড়ি ও কর্মীরা। অথচ প্রশাসন উদাসীন।”
মেলা কমিটির সভাপতি পোড়াগাছা পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য কার্তিক সরকার ছাড়াও কোষাধ্যক্ষ, সহ সভাপতি, সম্পাদক সকলেই এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। সহ-সম্পাদক বাহার আলি মণ্ডল কৃষ্ণনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের কর্মাধ্যক্ষ। তিনি বলেন, “চাঁদা নিয়ে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কিছু বাচ্চা ছেলে চাঁদা তুলছিল। তারাই ভুল করে সরকারি গাড়ি থামিয়ে চাঁদা চেয়েছে মাত্র। মারধর বা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি।” |