চার গোলের পরেও ডার্বির আগে
চিন্তা যাচ্ছে না মর্গ্যানের
ইস্টবেঙ্গল-৪ (রবিন, বরিসিচ, দীপঙ্কর-আত্মঘাতী, খাবরা)
ইস্টার্ন রেল-১ (বাপন)
ষাট শতাংশ নম্বর নিয়ে টেস্টে পাশ। কিন্তু স্টার মার্কস উঠল কোথায়?
যে ম্যাচ জেতার কথা সাত-আট গোলে, ঘরোয়া লিগের সেই ম্যাচে হল কিনা চার গোল! উলটে ‘হঠাৎই শিথিল’ রক্ষণের সুবিধা নিয়ে দুরন্ত গোল করে গেলেন রেলের বাপন বেরা।
খেলা শেষে তাই হাসতে হাসতে লাল-হলুদ কোচের রসিকতা, “ইউরোপে ফুটবলার ম্যানেজ হয় বলে শুনছি। আজ আমার ফরোয়ার্ডদের কি বিপক্ষ ম্যানেজ করল? না হলে ঠিকঠাক জায়গায় পৌঁছেও ওরা জালে বল জড়াতে পারল না! সত্যিই হতাশার।”
দরজায় কড়া নাড়ছে বড় ম্যাচ। সোমবার এরিয়ানকে ৪-১ হারিয়ে তরতাজা সবুজ-মেরুনের টোলগে-ওডাফা। মঙ্গলবার কল্যাণীতে অ্যান্টনি সোরেনদের বিরুদ্ধেও একই ফলাফলে জয়ী অর্ণব মণ্ডলরা। কিন্তু তার পরেও চিন্তামুক্ত নন লাল-হলুদ কোচ মর্গ্যান।
তবে হতাশার পাশে প্রাপ্তিও রয়েছে। যেমন ফের চেনা ছন্দে পেন ওরজি।
লাল-হলুদ জার্সি গায়ে বরিসিচের প্রথম গোল। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
বড় ম্যাচের আগে আস্তিনে লুকানো তাস দেখে নিতে চেয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। তিন বছর ময়দানে কোচিং করানোর সুবাদে তিনি জানেন, বড় দলগুলোর বিরুদ্ধে ছোট দলগুলো ৪-৫-১ ছকে গোলের সামনে পায়ের জঙ্গল তৈরি করে। এ দিন মাঠেও ঠিক সে ভাবেই খেললেন রেলের বাবুন কর-রা। মর্গ্যান তাই দল সাজিয়েছিলেন ৪-৩-৩-এ। মাঝমাঠে পেনের দু’পাশে ভাসুম, লোবো। যারা বিপক্ষের সাইড ব্যাকদের ভিতরে টেনে আনবেন। কারণ, দুই সাইড ব্যাক ইসফাক এবং খাবরা পালা করে উঠবেন ওভারল্যাপে। লক্ষ্য, প্রথমার্ধেই দু’তিন গোল করে ফেলা। এ দিন সেই সূত্র মেনেই সচল খাবরা-ভাসুমরা। চেনা মেজাজে পেনও সর্পিল গতিতে বিপক্ষের রক্ষণ চুরমার করে বাড়ালেন ঠিকানা লেখা সব পাস। শুরুতেই তার পাস বলজিতের পা ঘুরে রবিনের কাছে আসতেই সূক্ষ্ম টোকায় গোলের দরজা খোলা শুরু। দ্বিতীয়ার্ধে যখন ৪-৪-২ ছকে খেলা শুরু করল ইস্টবেঙ্গল তখন ফের নিজের জায়গায় দুই স্ট্রাইকারের পিছনেও জ্বলজ্বল করলেন মর্গ্যানের ‘ফ্রি-ম্যান’।
কিন্তু সঙ্গে হতাশার তিন কারণও রয়েছে।

নিষ্প্রভ রবিন: তিন ফরোয়ার্ডে মাঝখানে বরিসিচ। তাঁর দু’প্রান্তে রবিন এবং বলজিৎ। উদ্দেশ্য, আক্রমণের সময় উইংয়ের দিকে সরে গিয়ে বিপক্ষ রক্ষণে চাপ বাড়ানো। আর রেলের আক্রমণের সময় নীচে নেমে মাঝমাঠকে ভরসা দেওয়া। সে কাজ করতে গিয়েই রবিন নাজেহাল। বলের কাছে পৌঁছেও এমন সব গোল মিস করলেন যা দেখে গ্যালারির চিৎকার, “কবে গোল করবি?” আসলে লাল-হলুদ স্ট্রাইকারের অভাব মনসংযোগ এবং আত্মবিশ্বাসে। দুটোই হারিয়েছেন তিনি। সহজ বলকে তাই কঠিন করে ফেলছেন। এ দিন গোল করলেও বড় ম্যাচের আগে তাঁর ক্লিশে ফর্ম কপালের ভাঁজ বাড়াল মর্গ্যানের।

আধাফিট বরিসিচ: ২৯ মিনিটে ডান দিক থেকে ভাসুমের ভাসানো বলে হেড করে গোলটা করা ছাড়া তেমন উল্লেখযোগ্য কিছুই দেখা গেল না নবাগত এই বিদেশির কাছ থেকে। ফিটনেসে ঘাটতিও রয়েছে তাঁর। হ্যামস্ট্রিং ঝামেলা করায় দ্বিতীয়ার্ধে তাঁকে তুলে অ্যালভিটোকে নামিয়ে দিলেন কোচ। শনিবারের বড় ম্যাচে আক্রমণে চিডির সঙ্গী বাছা নিয়ে তাই কিছুটা হলেও চাপ বাড়ল।

রক্ষণে আত্মতুষ্টি: দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রেলের দীপঙ্কর আত্মঘাতী গোল করে দেওয়ার পর কিছুটা গা-ছাড়া মেজাজে খেলতে দেখা গেল গুরবিন্দরদের। এই সময় অর্ণবকে তুলে সুনীল কুমারকে দেখে নেওয়ার জন্য নামিয়েছিলেন কোচ। তিনি আবার বহু দিন খেলার মধ্যে নেই। এই সুযোগেই রেলের ব্যবধান কমানো।
শেষ দিকে খাবরার শট রেলের পারভেজের পায়ে লেগে গোলে ঢোকায় চার গোল হল। তা সত্ত্বেও বড় ম্যাচের আগে ‘মিস্টার পারফেক্ট’ মর্গ্যানের খচখচানি থেকেই যাচ্ছে। পেনরা ষাট শতাংশ নম্বর তুলে দিলেও রবিন-বরিসিচরা ‘স্টার মার্কস’ আনতে পারছেন না যে!

ইস্টবেঙ্গল: গুরপ্রীত, খাবরা, গুরবিন্দর, অর্ণব (সুনীল), ভাসুম, পেন, কেভিন লোবো, রবিন, বরিসিচ (অ্যালভিটো), বলজিৎ।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.