আশঙ্কাই সত্যি হল। দেশের সেরা এগারো টেনিস প্লেয়ারের সঙ্গে মিটমাটের চেষ্টায় এআইটিএ যে কমিটি গড়েছে, আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে তাকে কার্যত খারিজ করে দিল বিদ্রোহী জোট। সঙ্গে ফের জানিয়ে দিল, নিজেদের দাবিতে তারা অনড় থাকছে। ফেডারেশনের অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা বক্তব্য, সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে তারা যে পদক্ষেপ নিয়েছে তার থেকে সরে যাওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। ফলে সব মিলিয়ে ভারতীয় টেনিসের বৃহত্তম সঙ্কটের জট আরও পাকাল। |
সোমদেব দেববর্মন এত দিন জোটের মুখপাত্র ছিলেন। মঙ্গলবার আসরে প্রকাশ্যে অবতীর্ণ হলেন বিদ্রোহী জোটের আসল মগজাস্ত্র মহেশ ভূপতি। সাফ বলে দিলেন, “মূল সমস্যার দিক থেকে সকলের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ফেডারেশন এই কমিটি গড়েছে। রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য চার মাস সময় দেওয়া হয়েছে কমিটিকে। অথচ ভারতের পরের ডেভিস কাপ দু’মাস পরেই। কমিটির তিন জন সদস্যের মধ্যে দু’জনের টেনিসের কোনও ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। তৃতীয় জন নরেশ কুমার টেনিসের লোক। তাঁর প্রতি আমার যথেষ্ট শ্রদ্ধা রয়েছে। কিন্তু তাঁরও সম্প্রতি কয়েকটি লেখা অনেকের ভাল লাগেনি। এই কমিটির নিরপেক্ষতা বজায় রাখা নিয়ে আমাদের সংশয় আছে। আশা করেছিলাম সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব ফেডারেশনের কোনও কর্মকর্তা নেবেন। কিন্তু সব দেখে মনে হচ্ছে, ফেডারেশেনর কোনও তাড়া নেই। ওরা আমাদের সঙ্গে বসতে চায় না। এ রকমই যদি চলতে থাকে, পরের ডেভিস কাপে ইন্দোনেশিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের আরও লজ্জা অপেক্ষা করে রয়েছে। ফেডারেশনের সিইও সম্প্রতি সাংবাদিক সম্মেলনে আমাদের সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, আমরা না কি ব্ল্যাকমেল করছি ভারতীয় টেনিসকে। এ ধরনের মন্তব্য আমাদের মোটেই ভাল লাগেনি। বরং আমাদের কয়েকটা দাবি মেনে নিলেও অন্য দাবিগুলোর ব্যাপারে এআইটিএ-ই পরিষ্কার করে কিছু বলছে না।” মহেশের বিস্ফোরণের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ফেডারেশনের সিইও হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় এ দিন বললেন, সমস্যা সমাধানের জন্য এআইটিএ যে পদক্ষেপ নিয়েছে, সেই প্রক্রিয়াতেই এগোবে। তিনি বললেন, “মহেশ ভূপতির আসল টার্গেট তো যে ভাবে হোক এআইটিএ-র ক্ষমতা দখল করা। ফেডারেশন এখন ওর কথাবার্তায় আর কিছু মনে করে না। আমরা প্লেয়ারদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টায় যেটাই করি না কেন, যে সিদ্ধান্তই ফেডারেশন নিক না কেন, ওরা সেটাকে খারাপ বলবেই। যে কমিটিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রয়েছেন। একটি রাজ্যের প্রাক্তন চিফ সেক্রেটারি আছেন, সেই কমিটিকেও মহেশদের পছন্দ নয়! ওরা তো দেখা যাচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকেও অবিশ্বাস করছে! নরেশ কুমারের মানের টেনিস ব্যক্তিত্বের নিরপেক্ষতা নিয়েও সন্দেহ করছে! কী বলব, দেশের একঝাঁক তরুণ টেনিস প্লেয়ারের ভবিষ্যৎ জলাঞ্জলি দিতেও ওদের জোটের নেতার যেন আপত্তি নেই! |