|
|
|
|
সন্ত্রাসের অভিযোগ এসএফআইয়ের |
হাওড়ায় বহু কলেজে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী টিএমসিপি |
নুরুল আবসার • কলকাতা |
হাওড়ায় কলেজগুলির ছাত্র সংসদ দখলের ক্ষেত্রে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাপট অব্যাহত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হচ্ছে তারা। সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে এসএফআই। ঠিক যেমন বাম জমানায় একের পর এক এই কলেজগুলির ছাত্রসংসদে হেরে অভিযোগ শোনা যেত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ-সহ বিরোধীদের মুখে।
গত শুক্রবার জগৎবল্লভপুর শোভারানি মেমোরিয়াল কলেজে ছাত্র সংসদের ২৭টি আসনের সব ক’টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে টিএমসিপি। কয়েক দিন আগে উদয়নারায়ণপুর মাধবীলতা মহাবিদ্যালয়েও ছাত্র সংসদের সব আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করে তারা।
জেলায় মোট কলেজ ২০টি। এর মধ্যে দু’টি হোমিওপ্যাথি কলেজ এবং দু’টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। এ পর্যন্ত মোট ১৪টি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য দিন ঘোষণা করা হয়েছিল। শোভারানি কলেজ এবং মাধবীলতা মহাবিদ্যালয় ছাড়া বাগনান কলেজ, উলুবেড়িয়া কলেজ, জয়পুর পঞ্চানন রায় কলেজ, আমতা রামসদয় কলেজ, পুরাশ-কানপুর হরিদাস নন্দী মহাবিদ্যালয়, ডোমজুড় আজাদ হিন্দ কলেজ, শিবপুর দীনবন্ধু কলেজ এবং রামরাজাতলা আইটিআই-এ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে টিএমসিপি। আন্দুল প্রভু জগদ্বন্ধু কলেজ, বালি লালবাবা কলেজ, এবং এবং পাঁচলা গঙ্গাধরপুর কলেজে আবার টিএমসিপি এবং ছাত্র পরিষদের মধ্যে লড়াই হয়। বালি লালবাবা কলেজ এবং প্রভু জগদ্বন্ধু কলেজে জিতে যায় টিএমসিপি। গঙ্গাধরপুর কলেজে জয়ী ছাত্র পরিষদ।
নির্বাচন বাকি আছে মহেশ ভট্টাচার্য হোমিওপ্যাথি কলেজ, হাওড়া নরসিংহ দত্ত কলেজ, দালালপুকুর আইটিআই, হাওড়া গার্লস কলেজ, কানাইলাল ভট্টাচার্য কলেজ এবং নিতাইচরণ মেমোরিয়াল হোমিওপ্যাথি কলেজে। ওই সব কলেজেও নির্বাচন ঘোষণা করা হলে ফল তাঁদের অনুকূলে যাবে বলেই আশাবাদী টিএমসিপি নেতারা।
দু’বছর আগে পরিস্থিতিটা আবার ঠিক উল্টো ছিল।
জেলায় মাত্র গোটা তিনটি কলেজে টিএমসিপি বা ছাত্র পরিষদের কিছুটা প্রভাব থাকলেও বাকি কলেজগুলিতে রমরমা ছিল এসএফআইয়ের। বিধানসভা নির্বাচনের পরে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে গিয়েছে পরিস্থিতি। শোচনীয় হাল হয়েছে এসএফআইয়ের। ১৪টি কলেজে তারা প্রার্থী পর্যন্ত দিতে পারেনি। এমনকী উলুবেড়িয়া কলেজ, নরসিংহ দত্ত কলেজ বা বালির লালবাবার মতো কলেজেও এসএফআইয়ের অস্তিত্ব কার্যত বিপন্ন, যেখানে এক সময়ে তাদের দাপটে পা রাখতে পারত না বিরোধীরা।
এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে অবশ্য এই পরিস্থিতির জন্য টিএমসিপি-র ‘সন্ত্রাস’কেই দায়ী করা হয়েছে। ঠিক যেমন বাম জমানায় বলে আসত বিরোধীরা। তাদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিল করতে দেওয়া হয়নি বলে এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে অভিযোগও করা হয়েছে। উদাহরণ দিতে গিয়ে এই সংগঠনের নেতারা উলুবেড়িয়া কলেজের ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। তাঁরা জানান, এসএফআই মনোনয়নপত্র তোলার জন্য কলেজে হাজির হয়েছিল। কিন্তু তাদের কর্মীদের মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশকে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি বলে এসএফআইয়ের নেতারা অভিযোগ করেন। এই রকম ঘটনা প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘটেছে বলে এসএফআইয়ের দাবি।
সংগঠনের এক নেতা জানান, বামফ্রন্ট আমলে কলেজগুলিতে টিএমসিপি বা ছাত্র পরিষদ প্রার্থীই দিতে পারেনি এমন ঘটনা ঘটেনি। এই দু’টি সংগঠন হয়তো অনেক কলেজে জিততে পারত না, কিন্তু প্রতিটি ছাত্র সংগঠন ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারত। টিএমসিপি আবার সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। সংগঠনের জেলা সভাপতি অনুপম ঘোষ বলেন, “বামফ্রন্ট আমলে কোনও দিন অবাধ নির্বাচন হত না। বিরোধী ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের মারধর করে তাড়িয়ে দিয়ে জোর করে সংসদ দখল করত এসএফআই। পরিবর্তনের পরে পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে। ফলে নিজের খুশি মতো সংগঠন করতে পারছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। এসএফআইয়ের কবল থেকে তাঁরা স্বেচ্ছায় বেরিয়ে এসেছেন। সেই কারণেই কোনও কলেজে এসএফআই প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না।” |
|
|
|
|
|