|
|
|
|
আজ দিল্লিতে মোদী, কুম্ভে সিঙ্ঘলরা |
কংগ্রেসকে বিঁধে হিন্দুত্বের সুর আরও চড়াচ্ছে বিজেপি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
হিন্দুত্বের আন্দোলন ফের জাগিয়ে তুলতে আগামী কাল মহাকুম্ভে সাধু-সন্তদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)। আবার আগামী কালই উন্নয়নের পাঠ পড়াতে দিল্লির এক কলেজে আসছেন মোদী। এর ঠিক এক দিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্দের ‘গেরুয়া-সন্ত্রাস’-এর পাল্টা জবাব দিতে নয়া কৌশল নিল বিজেপি।
সঙ্ঘের নির্দেশে বিজেপি নেতা মুরলী মনোহর জোশীকে দিয়ে দলের সদর দফতরে এক সাংবাদিক বৈঠক হল। যেখানে সঙ্ঘের নির্দেশিত পথে হেঁটেই জোশী দাবি করলেন, সমঝোতা বিস্ফোরণের পিছনে আসলে হাত ছিল পাকিস্তানের মদতপুষ্ট লস্কর-ই-তইবা, আল-কায়দা, সিমি ও ডেভিড কোলম্যান হেডলির। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ২০০৯ সালের প্রস্তাব ও মার্কিন রাজস্ব বিভাগের ঘোষণাতেও তা বলা হয়েছে। পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২০১০ সালে তা কবুলও করেন। তাঁর অভিযোগ, এ সব জানার পরেও কেন্দ্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সাহায্যে ওই ঘটনা নিয়ে গেরুয়া-শিবিরকে আক্রমণ করছে কংগ্রেস।
সমঝোতা বিস্ফোরণের তদন্তে যখন সঙ্ঘের সঙ্গে জড়িত নেতাদের গ্রেফতার করা শুরু হয়, তখন থেকেই আরএসএস-ভিএইচপি নেতারা দাবি করেছেন, এর সঙ্গে সঙ্ঘ কোনও ভাবেই জড়িত নয়। পরে অবশ্য বিজেপি নেতারা এর থেকে দূরত্ব তৈরি করেন। কিন্তু রাজনাথ সিংহ সভাপতি হওয়ার পরেই আরএসএস-বিজেপি-ভিএইচপি-র মহাবৈঠকে ঠিক হয়, বিজেপিকেও হিন্দু ভাবনার প্রচার শুরু করতে হবে। সঙ্ঘ যেমন রামমন্দির আন্দোলন ফের জাগিয়ে তুলতে চাইছে, তেমনই গো-বলয়ে ভোটব্যাঙ্ক বাড়ানোর জন্য বিজেপিও রাজনৈতিক ভাবে হিন্দুত্বকে কাজে লাগাক। সেই পথ ধরেই কুম্ভের বৈঠকের আগে জোশীর মতো নেতা আজ সুর চড়ালেন।
হিন্দুত্বের পাশাপাশি বিজেপি উন্নয়নের মডেলটিকেও তুলে ধরতে চায়। বিজেপির কাছে নরেন্দ্র মোদীই এক মাত্র ব্যক্তি, যিনি একাধারে হিন্দুত্বের ‘পোস্টার বয়’, আবার উন্নয়নেরও প্রতীক। ভিএইচপি নেতা অশোক সিঙ্ঘল ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, গোটা দেশ মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়। কিন্তু ভিএইচপি-র আর এক নেতা প্রবীণ তোগাড়িয়ার সঙ্গে মোদীর সম্পর্ক ভাল নয়। আজ তোগাড়িয়াকে মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি তা এড়িয়ে যান। তোগাড়িয়ার সাম্প্রতিক কিছু মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক বেধেছে সঙ্ঘ পরিবারের অন্দরে। কিন্তু বিজেপির অনেক শীর্ষ নেতাই এ ধরনের উগ্র হিন্দুত্বে ফিরতে চান না। দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, “এটি ঠিক, সংখ্যালঘু ভোটের তেমন প্রত্যাশা আমাদের নেই। কিন্তু রাজনীতির মেরুকরণ হলে আমাদের লাভ না ক্ষতি, সেটিও পর্যালোচনা করা দরকার। কিন্তু সঙ্ঘ এখন হিন্দুত্ব ও উন্নয়নের মধ্যে ভারসাম্য রেখেই এগোনোর দাওয়াই দিচ্ছে।”
উন্নয়নের সেই পাঠ পড়াতেই আগামিকাল দিল্লির শ্রীরাম কলেজে আসছেন মোদী। উন্নয়ন মন্ত্রে গুজরাত জয়ের পর দিল্লিতে এটাই তাঁর প্রথম প্রকাশ্য সভা। রাহুল গাঁধী যখন যুবকদের কংগ্রেসের দিকে টানতে উদ্যোগী হচ্ছেন, তখন মোদীও নিজেকে যুব সম্প্রদায়ের আশার আলো হিসেবে তুলে ধরতে চান। এই লক্ষ্যেই দিল্লির কলেজে গিয়ে তিনি সরাসরি যুবদের মুখোমুখি হবেন। মোদী বিলক্ষণ জানেন, তাঁকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী করা নিয়ে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের ভিতরে-বাইরে কথা চললেও এ নিয়ে দ্বিধা কাটছে না।
এই পরিস্থিতিতে মোদী ধীরে ধীরে গুজরাতের বাইরে নিজেকে প্রচারের মুখ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন। কুম্ভে ভিএইচপি-র বৈঠকে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী করার দাবি ওঠার সম্ভাবনা থাকলেও মোদী সেই বৈঠক এড়িয়ে যাচ্ছেন। কুম্ভযাত্রা আপাতত কিছু দিন পিছিয়ে দিতে চান মোদী। আগামী সপ্তাহে কুম্ভে যেতে পারেন তিনি। |
|
|
|
|
|