কতটা পথ হাঁটলে পরে বাস পাওয়া যায়! বইমেলার যদি কোনও ঘরে ফেরার গান থাকে তবে তা হয়তো এটাই। কারণ, পৌঁছে যেতে পারলেও ঘরে ফেরার ব্যবস্থা নেই। কাছাকাছি দেখা নেই বাস বা অন্য কোনও যানের। ফলে প্রতিদিন বইমেলা ফেরত হাজার হাজার মানুষ রাস্তার পাশ দিয়ে আধো অন্ধকারে অনেকটা পথ হাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন। যদিও তাঁরা জানেন না, কতটা হাঁটার পরে বাস পাবেন। সুযোগ বুঝে ট্যাক্সিও ইচ্ছে মতো দর হাঁকছে।
অথচ কথা ছিল, রাজ্য পরিবহণ দফতর পর্যাপ্ত বাস দেবে। বইমেলার উদ্যোক্তা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডও দেবে ৩৫টা বাস। যাতে বইমেলা থেকে ফিরতে কারও কোনও অসুবিধা না হয়। রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে সে কথা জানিয়েছিলেন গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু বইমেলা ফেরত মানুষ জানেন, সেই বাসের দেখা মেলেনি।
পর্যাপ্ত বলতে ঠিক কত বাস বোঝায় তা পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র নিজেও বলতে পারেননি। বলেছেন, “শুরুর দিকে একটু অসুবিধে হচ্ছে। কর্পোরেশনগুলোকে বলেছি সোমবার থেকে আরও অন্তত পঞ্চাশটা বাস দিতে।” কিন্তু মঙ্গলবারও চরম দুর্ভোগ হয়েছে। অথচ বইমেলা যত শেষের দিকে যাচ্ছে, ভিড় ততই বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বইমেলা থেকে ফেরার ভোগান্তি। তবে মদনবাবু তাঁর অপারগতার একটা সাফাইও দিয়ে রেখেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, “আমাদের সামর্থ্য কম। তার মধ্যেও যতটা পারা যায় করেছি।”
সরকারি বাসের মতোই দেখা নেই গিল্ডের বাসের। এক গিল্ডকর্তা বলেন, “আসলে যানজটের কারণে বাসগুলোর ফিরতে দেরি হচ্ছে। তাই এত ভোগান্তি।” তবুও মেলায় ভিড়ের কমতি নেই। ক্লান্তি নেই লাইন দিয়ে স্টলে ঢোকায়। সেই সঙ্গে চলছে বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে আলোচনা সভা, গানের অনুষ্ঠান এবং বই প্রকাশ।
মেলায় প্রকাশিত হল প্রসেনজিৎ পোদ্দারের ছোটদের গল্পের বই ‘এক ঝলক আলো’, বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের ‘কালো ফসল’ এবং ‘দূষণ নিয়ন্ত্রণে আইনের চালচিত্র’, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ও সিদ্ধার্থ সিংহের সম্পাদনায় ‘ছোটদের সেরা ৫১’, ফারুক আহমেদের কাব্যগ্রন্থ ‘বিশ্বপ্রেম’। পঁচাত্তর বছর পরে পুনর্মুদ্রিত হয়ে বেরলো দীনেশচন্দ্র সেনের মুখবন্ধ-সহ অবিনাশচন্দ্র ঘোষাল সম্পাদিত ‘নগ্নতার ইতিহাস’। |