একুশে জুলাই তদন্ত
জখম পুলিশদের চিকিৎসার নথি নষ্ট করেছে হাসপাতাল
কুশে জুলাইয়ের ঘটনায় আহত পুলিশকর্মীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি কলকাতা পুলিশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নষ্ট করে ফেলেছেন বলে তদন্ত কমিশনকে জানালেন হাসপাতালেরই শল্য চিকিৎসক। তাঁর রেকর্ডের তারিখ অনুযায়ী, একুশে-কাণ্ডের তদন্তে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন গড়ার পাঁচ মাসের মধ্যে কাজটি করা হয়েছে। চিকিৎসকের এ-ও দাবি: হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টারই তাঁকে নথি নষ্ট করার কথা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবারের শুনানিতে কমিশনের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ১৯৯৩-এর ২১ জুলাই মেয়ো রোডে পুলিশের উপরে রাজনৈতিক দলের কর্মীরা যথেচ্ছ হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছিল। কলকাতার তদানীন্তন পুলিশ কমিশনার তুষার তালুকদার তৎকালীন স্বরাষ্ট্র-সচিবকে রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছিলেন, হামলায় পুলিশের আড়াইশো অফিসার-কর্মী জখম হন, এবং কলকাতা পুলিশ হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা হয়। তদন্তে কমিশন আহতদের আঘাতের চরিত্র ও চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি তলব করেছে, কারণ পুলিশ প্রকৃতই আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছিল কি না, তা জানার জন্য সে সব পরীক্ষা করা জরুরি।
কিন্তু হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ জানান, নথি পেশ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই হাসপাতালের প্রতিনিধিকে সমন পাঠিয়েছিল কমিশন। সমনের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক কিংশুক বিশ্বাস এ দিন কমিশনে হাজির হয়ে নথি নষ্ট করার কথা বলেন। নিজের কাছে থাকা রেকর্ড উল্লেখ করে কিংশুকবাবুর বক্তব্য, ২০০০ সালের আগের সব নথি পুলিশের লরিতে চাপিয়ে হাসপাতাল থেকে বার করে দেওয়া হয় ২০১২-র ২৮ মার্চ তারিখে। তাঁর দাবি, কাগজপত্রগুলো যে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে, হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টারই তাঁকে সে কথা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, একুশে জুলাই-কাণ্ডের তদন্তে সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় কমিশন গঠিত হয় মমতা সরকার ক্ষমতার আসার মাস ছয়েক বাদে ২০১১ সালের ৪ নভেম্বর। সেই হিসেবে, কমিশন গঠনের পাঁচ মাস না-পেরোতেই নথিগুলো নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।
কিন্তু কার নির্দেশে তা করা হল?
চেয়ারম্যানের প্রশ্নের উত্তরে কিংশুকবাবু এ দিন একটি ফাইল কমিশনে দাখিল করেন। যা পরীক্ষা করে প্রাক্তন বিচারপতি জানান, পুলিশি মামলা সংক্রান্ত নথিপত্র ব্যতীত ২০০০ সালের আগের বিভিন্ন দস্তাবেজ (হাসপাতালে ভর্তি, ডিসচার্জ, মৃত্যুর শংসাপত্র ইত্যাদি) নষ্ট করতে কলকাতা পুলিশের আইন দফতর নোট তৈরি করেছিল ২০১২-র ১ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু কর্তাদের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, আদালতের অনুমতি ছাড়া পুলিশি মামলার কোনও নথি নষ্ট করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে সেটাই হল কেন? পুলিশ হাসপাতালের ওই সার্জন স্বীকার করেন, তাঁর কাছে এমন কোনও কাগজ নেই, যাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে পুলিশি মামলার নথিও নষ্ট করার নির্দেশ ওয়ার্ড মাস্টারকে দেওয়া হয়েছে। কমিশনের নির্দেশ: ২১শে জুলাই জখম হওয়া পুলিশদের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্রের কী হল, তা তিন সপ্তাহের মধ্যে জানাতে হবে। নথি না-মিললে থানায় এফআইআর-ও দায়ের করতে হবে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.