ভরে উঠছে খুনের খাতা, প্রশ্নের মুখে আইনশৃঙ্খলা
ফের দু’টি হত্যা, উত্তপ্ত এলাকা
মদম স্টেশন এলাকায় জোড়া খুনের রেশ না মিটতেই ফের জোড়া খুন ওই অঞ্চলে। মঙ্গলবার সকালে দমদম পার্কের কাছে শ্যামনগরে দুষ্কৃতীরা বাড়িতে ঢুকে গোরা দাস (৩২) ওরফে ফুপা নামে এক যুবককে ঘুমন্ত অবস্থায় খুন করে পালায়। সোমবার রাত থেকেই উত্তপ্ত ছিল ওই অঞ্চল। স্থানীয় হরিহর কলোনিতে হয় বোমাবাজি, চলে গুলিও। দুষ্কৃতীদের হামলায় শীলা দাস নামে এক মহিলা গুরুতর জখম হন। মঙ্গলবার রাতে মৃত্যু হয় তাঁর। তদন্তে পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, তোলাবাজি ও এলাকা দখলকে কেন্দ্র করেই বোমাবাজি এবং এই খুনের ঘটনা। এ দিকে, দমদম এলাকায় পরপর এ রকম খুনের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলার হাল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন ঘটনাটি ঘটে সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ। শ্যামনগরে একটি বাড়ির তিনতলায় ভাড়া থাকেন গোরা। তাঁর স্ত্রী সোমা বলেন, “সকালে ঘরের দরজা খোলাই ছিল। হঠাৎ হুড়মুড় করে দু’জন ঢুকল। আমার স্বামী তখন লেপমুড়ি দিয়ে ঘুমোচ্ছিল। বন্দুক বার করে ওর মাথায় গুলি চালাল ওরা। তার পরে ওরা আমাকে ধাক্কা মেরে পালায়।”
ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী। পুলিশ জেনেছে, হরিহর কলোনিতে রাতের বোমাবাজি, মারধর এবং পরদিন সকালে শ্যামনগরে খুনের মধ্যে যোগ আছে। পুলিশ জানিয়েছে, গোরার খুনের ঘটনায় মৃতের বাড়ির লোকেরা যে ক’জনের নামে অভিযোগ করেছেন, তারা সকলেই এলাকার দুষ্কৃতী। তাদের নাম হল: জগা, শঙ্কু, সানি, কটা রাজু, দীনেশ ও গুড্ডু। সোমা পুলিশকে জানান, যারা গোরাকে খুন করেছে, তাদের তিনি চেনেন। তারা হল জগা ও শঙ্কু। গোরার দাদা খোকন বলেন, “গুলি চালানোর পরে এলাকায় বোমা মারতে মারতে পালায় সানি, কটা রাজু, দীনেশ ও গুড্ডুরা। ওদের সকলের নামেই খুনের অভিযোগ দায়ের করেছি।” পুলিশ জানায়, গোরার ফাস্ট ফুডের দোকান থাকলেও তিনি ইদানীং ইট, বালি, সিমেন্ট সরবরাহ করতেন। পাড়ায় জনহিতকর কাজেও যুক্ত থাকতেন। আগে সিপিএম করলেও ইদানীং তৃণমূলকর্মী বলেই পরিচিত ছিলেন। এ দিনের ঘটনার পরে এলাকায় আসেন বিধায়ক সুজিত বসু। তিনি বলেন, “গোরা আমাদের দলের কর্মী ছিল। মিটিং-মিছিলে যেত। খুনিদের শাস্তি দাবি করছি।” রাতে সল্টলেকের পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় সিংহ এলাকায় যান।
পুলিশ জেনেছে, যাদের নামে অভিযোগ, সেই জগা ও তার দলবলের সঙ্গে গোরার ঘনিষ্ঠতা ছিল। পুরনো খুনের মামলায় গোরার নামও ছিল। সম্প্রতি সাপ্লাই ও প্রোমোটারিকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে কয়েক বার বিরোধ ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, জগা ও তার সঙ্গীরা এলাকায় এক সময়ের ত্রাস ও দাগি আসামী রাজেশ নায়েকের দলের লোক। সম্প্রতি রাজেশ এলাকা ছাড়া। তবে তার হয়ে জগারা এলাকায় তোলাবাজি চালাচ্ছিল। অভিযোগ, গোরার কাছে জগার দল টাকা চায়। না পেয়ে গোরাকে খুনের হুমকিও দেয় তারা। এই নিয়ে দমদম থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।
পুলিশ জেনেছে, গোরা সম্প্রতি নতুন দল তৈরি করছিল। এলাকায় ঘুরে গোরার সম্পর্কে নানা কথা শোনা গেলেও বিধায়ক সুজিতবাবু বলেন, “গোরা ভাল ছেলে বলেই জানি।” তবে তিনি আরও বলেন, “গোরা আমাদের কর্মী ছিল ঠিকই তবে আইন আইনের পথেই চলবে।” পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতে হরিহর কলোনিতে যে বাড়িতে হামলা হয়, সেটি জগার। জগাকে না পেয়ে দুষ্কৃতীরা তার মা শীলাদেবীকে বেধড়ক মারধর ও বোমাবাজি করে। জখম শীলাদেবীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ জানায়, শীলাদেবীকে খুনের অভিযোগে যাদের নাম উঠেছে, তারা সকলেই গোরার ঘনিষ্ঠ। সোমবার মাকে মারধরের বদলা হিসেবেই জগা পরদিন গোরার বাড়িতে হামলা করে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।” অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে মঙ্গলবার যশোহর রোড অবরোধ হয়।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.