আদালতে বারবার সাক্ষ্য না দিতে আসায় কাটোয়ার প্রাক্তন ওসি দেবজ্যোতি সরকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল কাটোয়া আদালত। সোমবার বিচারক উদয় রানা জেলার পুলিশ সুপারকে ৯ এপ্রিল ওসি-কে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারি আইনজীবী কল্যাণ কর বলেন, “প্রায় সাত বছর আগের একটি মামলায় ওই ওসি আদালতে এসে সাক্ষ্য দিচ্ছেন না বলে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর তৎকালীন ওসি দেবজ্যোতিবাবু কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে দু’টি গুমটি থেকে প্রায় ২৭০০ জাল সিডি উদ্ধার করেন। তিনিই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কাটোয়া থানায় মামলা রুজু করেন। গুমটির মালিক কেশিয়া মাঠপাড়ার আলিম শেখ ও খাজুরডিহি গ্রামের জামশেদ আলি শেখকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এই ঘটনার শুনানি চলছে কাটোয়া আদালতের দ্বিতীয় বিচারকের এজলাসে। শুনানি চলাকালীন অভিযোগকারী অর্থাৎ দেবজ্যোতিবাবুকে বিচারক বারবার সাক্ষ্য দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু তিনি আসেননি। |
কাটোয়ার চাণ্ডুলি স্কুলে পরিচালন সমিতির নির্বাচন চলাকালীন কংগ্রেস নেতা, কান্দি বিমলচন্দ্র ল কলেজের শিক্ষক তুহিন সামন্তকে নিজের সার্ভিস রিভলবার থেকে গুলি করে খুনের অভিযোগ রয়েছে দেবজ্যোতিবাবুর বিরুদ্ধে। সেই মামলার বিচার প্রক্রিয়া কাটোয়া থেকে সরানোর জন্য বর্ধমান আদালতে আবেদন করেছিলেন তিনি। তাঁর দাবি ছিল, কাটোয়ায় মামলা লড়ার জন্য তিনি আইনজীবী পাচ্ছেন এবং আদালতে হাজিরা দিতে গেলে প্রাণ সংশয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। সম্প্রতি জেলা জজ আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। এই মামলার সরকারি আইনজীবী আজিজুল হক মণ্ডল জানিয়েছিলেন, কোন আইনজীবী তাঁর হয়ে মামলা লড়তে চাননি তা আবেদনে উল্লেখ করেননি দেবজ্যোতিবাবু। হাজিরা দিতে গিয়ে হামলার মুখে পড়ার কোনও অভিযোগ থানা বা আদালতে দায়ের করেছেন, এমন কোনও নথিও তিনি দেননি। তাই আদালত মামলা সরানোর আবেদন খারিজ করে। দেবজ্যোতিবাবু এখন সল্টলেকে রাজ্য ক্রাইম ব্যুরোতে কর্মরত। সোমবার জাল সিডি উদ্ধারের মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানার কথা জানার পরে তাঁর দাবি, “পর দিন শুনানি রয়েছে, এ কথা জানতে পারি রবিবার রাতে। তাই সোমবার সল্টলেক থেকে কাটোয়া যাওয়া সম্ভব হয়নি। সরকারি আইনজীবীকে সেটাই বুঝিয়ে বলব।” |