পার্কে বিয়েবাড়ি আয়োজন নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল আগেই। এ বার দুর্গাপুর সিটিসেন্টারে সেই পার্কে বিয়েবাড়িতে আসা তিন ব্যক্তিকে প্রশাসনের সংরক্ষিত এলাকায় মদ্যপানের জন্য গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিয়েবাড়ির লোকজনের ওই পার্কের বাইরে এসে বাজি ফাটানোয় কেঁপে উঠল এলাকা। সোমবার রাতে মহকুমাশাসকের হস্তক্ষেপে পুলিশ গিয়ে শেষ পর্যন্ত বাজির উপদ্রব বন্ধ করে।
প্রায় তিন দশক আগে পার্কটি গড়ে ওঠে সিটিসেন্টারে। এডিডিএ সেটি একটি বেসরকারি সংস্থাকে লিজ দিয়েছে। টিকিট কেটে পার্কে ঢোকেন সাধারণ মানুষ। ভিতরের ব্যাঙ্কোয়েট হল ভাড়া দেওয়া হয় নানা অনুষ্ঠানে। মাস দুয়েক আগে গভীর রাত পর্যন্ত পার্কে বাজি ফাটিয়ে, হুল্লোড় করে একটি বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান হওয়ায় বিতর্ক শুরু হয়। এডিডিএ কর্তৃপক্ষ পার্ক কর্তৃপক্ষকে জানান, এ ধরনের অনুষ্ঠান করতে হলে এডিডিএ-র কাছে আগাম অনুমতি নিতে হবে। তা ছাড়া অনুষ্ঠানের জন্য যাতে সাধারণের সমস্যা না হয়, তা-ও খেয়াল রাখতে হবে। |
এডিডিএ সূত্রে জানা যায়, রবিবার থেকে ফের ওই পার্কে বিয়েবাড়ির আসর বসেছে। বুদবুদের এক ব্যবসায়ী পার্ক ভাড়া নিয়েছেন। মহকুমাশাসকের অফিস ও দুর্গাপুর আদালতের পাশেই রয়েছে পার্কটি। অভিযোগ, বিয়েবাড়ির লোকজন রবিবার গভীর রাতে পার্কের বাইরে প্রশাসনের সংরক্ষিত এলাকায় গিয়ে মদ্যপান করছিলেন। পুলিশ গিয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করে। একটি গাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়। এর পরে সোমবার রাতে বিয়েবাড়ির বাজির শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দারা মহকুমাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর হস্তক্ষেপে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পার্কের বাইরের রাস্তায় বাজি ফাটানো হচ্ছিল। পুলিশ এসে প্রথমে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চায়নি। পুরসভার ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক তথা তৃণমূল নেতা পরিমল অগস্তির বক্তব্য, “সবাই চেপে ধরতে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়।” পুলিশ অবশ্য এই অভিযোগ স্বীকার করেনি।
পার্ক কর্তৃপক্ষের তরফে পবন শাহের বক্তব্য, “পার্কে মদ্যপান বা বাজি ফাটানো যায় না। কিন্তু বাইরে কেউ এ ধরনের কাজ করলে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক। আমরা পূর্ণ সহযোগিতা করব।” এডিডিএ-র সিইও অন্তরা আচার্য জানান, আগাম অনুমতি না নিয়ে পার্ক এ ভাবে ভাড়া দেওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছিল কর্তৃপক্ষকে। তা-ও ফের কী ভাবে পার্ক ভাড়া দেওয়া হল তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন তিনি।
পার্ক কর্তৃপক্ষের আরও একটি কাজে বিতর্ক বেধেছে। পার্কটি যে জলাশয় ঘিরে, তার উপরে ডাঙা থেকে বেশ কিছুটা ভিতরে কর্তৃপক্ষ একটি গোলাকৃতি ভবন নির্মাণ করেছেন। তা নানা কাজে ভাড়া দেওয়া হয়। মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ইনল্যান্ড ফিসারিজ অ্যাক্ট ১৯৮৪’-এর ১৭এ ধারা মতে এই কাজ বেআইনি। গত ৬ মাস ধরে যেখানে জল রয়েছে, তেমন কোথাও এ ধরনের নির্মাণকাজ করা যায় না। জেলা মৎস্য আধিকারিক সজল ঘোষ বলেন, “আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এর ব্যাখ্যা চেয়েছি।” পার্ক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। |