প্রসঙ্গ: চেয়ারম্যানের অপসারণ |
হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে পুর-অধিবেশন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে দলত্যাগী চেয়ারম্যান নান্টু পাল আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পুরসভার বিশেষ অধিবেশন ডাকার কথা জানালেন। সোমবার তৃণমূলের কাউন্সিলরদের নিয়ে এ ব্যাপারে পুরসভায় বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গৌতম দেব। ওই বৈঠকের পরে মন্ত্রী বলেন, “বিচার ব্যবস্থা প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও আস্থা আছে। সে জন্য ডিভিশন বেঞ্চে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও আমরা যাচ্ছি না। নান্টুবাবুকে উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে বৈঠক ডাকার কথা বলা হয়েছে।” সেই মতো এ দিন নান্টুবাবু লিখিতভাবে পুর কমিশনার প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধানকে বিষয়টি জানান। নান্টুবাবু বলেন, “আমি কমিশনারকে চিঠি দিয়েছি।” পুর কমিশনার বলেন, “১৪ ফেব্রুয়ারি বেলা ১টায় ওই সভা ডাকা হয়েছে।”
কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের ক্ষমতাসীন শিলিগুড়ি পুর বোর্ডে বিরোধী বামেরা জানিয়েছে, দলত্যাগের পরেও পদে থাকায় চেয়ারম্যানের অনৈতিক কাজ নিয়ে তাঁরা অনাস্থা প্রকাশ করেন। তার পরেও নিয়ম মেনে চেয়ারম্যান বিশেষ সভা না ডাকায় তারা নভেম্বর মাসে আদালতের দ্বারস্থ হন। ওই দাবিতে গত ৪ মাস ধরে পুরসভার কোনও বোর্ড মিটিংয়েও বাম কাউন্সিলররা যোগ দিচ্ছেন না। গত ১ ফেব্রুয়ারি আদালত নির্দেশ দেয় ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চেয়ারম্যানকে বিশেষ অধিবেশনের দিন ঘোষণা করতে হবে। বিষয়টি তাঁদের নৈতিক জয় বলেই দাবি করেন বিরোধী দলনেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম।
বর্তমানে পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে কোনও কাউন্সিলর নেই। ৪৬ জন কাউন্সিলররের মধ্যে ১৭ জন বাম কাউন্সিলর অধিবেশনে চেয়ারমানের পদত্যাগ চাইবেন বলে জানান বিরোধী দলনেতা। কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্কর মালাকার বলেন, “চেয়ারম্যান পদ থেকে নান্টুবাবুকে সরানো হোক আমরাও চাই। তবে কংগ্রেস ওই অধিবেশনে কী ভূমিকা নেবে তা সকলের সঙ্গে আলোচনা করে ১২ ফেব্রুয়ারি জানিয়ে দেওয়া হবে।” নান্টুবাবু দলত্যাগ করার পর কংগ্রেসের ১৪ জন কাউন্সিলর। তৃণমূলের ১৫ জন। স্বাভাবিক ভাবে বিশেষ অধিবেশনে নান্টুবাবুকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে যেতে হচ্ছে।
এর পরই নতুন চেয়ারম্যান কে হবেন সেই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। চেয়ারম্যান অপসারণ নিয়ে ভোটাভুটিতে বামেরা অংশ নেবেন। তবে চেয়ারম্যান নির্বাচনে বামেরা অংশ নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। মেয়র, ডেপুটি মেয়র, চেয়ারম্যান এবং মেয়র পারিষদরা মিলিয়ে মোট ১০ টি পদ রয়েছে। জোটের পুর বোর্ড গঠনের সময় ঠিক হয় কংগ্রেস, তৃণমূল উভয়েই ৫ টি করে পদ নেবে। চেয়ারম্যান নান্টু পাল তৃণমূলে চলে যাওয়ায় এখন কংগ্রেসের ৪টি পদ রয়েছে। তাই চেয়ারম্যান বা আরও একটি পদের দাবিদার তারা। কিন্তু কংগ্রেসের চেয়ে ১ জন কাউন্সিলর বর্তমানে তাদের বেশি থাকায় তৃণমূল এখন তা মানতে নারাজ। এই পরিস্থিতিতে চেয়ারম্যান পদ নিয়েও কংগ্রেস, তৃণমূলের মধ্যে মতানৈক্য শুরু হয়েছে। নুরুলবাবু বলেন, “মানুষ নির্বাচনে জোটের পক্ষে রায় দিয়েছেন। তাই আমরা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব না। অংশগ্রহণও করব না।” |