|
|
|
|
সল্টলেক ও ব্যারাকপুর কমিশনারেট |
নড়বড়ে পরিকাঠামো নিয়েই বছর পার |
কাজল গুপ্ত • কলকাতা |
এক বছর পার হল। তবু ছবিটা বদলায়নি। আজও পথ-দুর্ঘটনা হলে পথচলতি গাড়ি অথবা পুলিশের গাড়িই সম্বল। আহতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য নেই কোনও ট্রমা কেয়ার অ্যাম্বুল্যান্স। আবার বোমাতঙ্কের ঘটনা ঘটলে জেলা, রাজ্য পুলিশ কিংবা কলকাতা পুলিশের বম্ব স্কোয়াডই ভরসা। এটাই ব্যারাকপুর বা সল্টলেক পুলিশ কমিশনারেটের রোজনামচা। অভিযোগ, ওই দুই কমিশনারেট কার্যত ‘নিধিরাম সর্দার’ ছাড়া কিছু নয়।
সম্প্রতি ডানলপের কাছে বি টি রোডে দুর্ঘটনায় আহত হয়ে রাস্তায় পড়ে ছিলেন এক মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি। স্থানীয় বাসিন্দারা তখন অ্যাম্বুল্যান্সের খোঁজ করছেন। আহতের অবস্থা সঙ্কটজনক দেখে জোর করে পথচলতি একটি গাড়িতে তাঁকে তুলে হাসপাতালে ছুটলেন কয়েক জন প্রত্যক্ষদর্শী। তারও কিছুক্ষণ পরে পুলিশের গাড়ি এল। কিন্তু পাওয়া গেল না কোনও অ্যাম্বুল্যান্স। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বি টি রোডে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। ফলে ট্রমা কেয়ার অ্যাম্বুল্যান্স খুব জরুরি। কিন্তু আজও তা পাওয়া গেল না।
আবার, সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে কিছু দিন আগেই বোমাতঙ্কের জেরে গোটা দিনটাই কার্যত নষ্ট হয় এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার। দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কর্মীদের বার করে অফিস খালি করেছিল। বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড আসে আরও পরে। আরও নিশ্চিত হতে এসেছিল কলকাতা পুলিশের বম্ব স্কোয়াডের দলও। কিন্তু ঘণ্টা চারেকের তল্লাশিতেও কিছু মেলেনি। সে দিনের মতো সেই অফিসের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের অভিযোগ, প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ শিল্পতালুকে যাতায়াত করেন। দিনরাত কাজ হয়। কিন্তু স্রেফ হুমকি ফোনে এ ভাবে কাজ বন্ধ থাকলে ক্ষতি অনেক। কিন্তু দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকাঠামো নেই।
বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তার অবশ্য দাবি, গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ট্রমা কেয়ার অ্যাম্বুল্যান্স না থাকলেও অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা রয়েছে। আছে বম্ব স্কোয়াডও। যদিও পুলিশের একটি সূত্র বলছে, বোমা নিষ্ক্রিয় করার কোনও আলাদা দল নেই।
কিন্তু কেন হল না? মেলেনি সদুত্তর। এক বছর আগে কিন্তু পরিকাঠামোর বিভিন্ন দিকগুলি মজবুত করা হবে বলে জানিয়েছিল প্রশাসন। ছবিটা কিন্তু এখনও বদলায়নি। বিধাননগর (সল্টলেক) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, “এমন সমস্যা থাকবে সে কথা অভিজ্ঞ পুলিশ আধিকারিকেরা জানেন। তা সত্ত্বেও এক বছরে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে কার্যকরী কোনও পদক্ষেপ করতে দেখিনি। দুর্ভোগ সাধারণ মানুষের।”
অভিযোগের জবাবে অবশ্য দু’টি কমিশনারেটই পদক্ষেপ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় সিংহ বলেন, “ট্রমা কেয়ার অ্যাম্বুল্যান্স দ্রুত পথে নামানো হবে। বম্ব স্কোয়াড তৈরি নিয়ে নির্দিষ্ট প্রস্তাব আছে। তবে বম্ব স্কোয়াড তৈরির ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগবে।” বিধাননগরের ডিসি (ট্রাফিক) রণেন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আগেই পরিকল্পনা হয়েছিল। সেগুলি কার্যকর হওয়ার পথে।” পাশাপাশি, বিধাননর কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তা জানান, এখন বম্ব স্কোয়াডের যে ইউনিটটি আছে সেটিকেই আরও শক্তিশালী করা হবে। |
|
|
|
|
|