পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ৩১ জন সহায়িকাকে। ঘটনাটি পুরুলিয়ার পুঞ্চা ব্লকের। গত বছর মার্চ মাসে সহায়িকার পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন ওই ৩১ জন। কিন্তু, তাঁদের পদ থেকে সরানো হয়েছে জানিয়ে চলতি ২ ফেব্রুয়ারি নির্দেশ জারি করেন ব্লকের সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিক (সিডিপিও) সুভাষ মাহাতো। এই ৩১ জনের নামের তালিকা ঝোলানো হয়েছে সিডিপিও-র অফিসে। এ ছাড়াও পদচ্যুত সহায়িকারা শুক্রবার থেকে ডাকযোগেও ওই নির্দেশ পেতে শুরু করেছেন।
কেন সরানো হল ৩১ জনকে?
২০১২ সালের মার্চে পুঞ্চা পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সভাপতি মিথিলা মুর্মু, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রমেশ কিস্কু এবং মানবাজারের প্রাক্তন বিধায়ক সাম্যপ্যারী মাহাতো একযোগে জেলা সিডিপিও-র কাছে লিখিত অভিযোগে দাবি করেন, পুঞ্চায় আইসিডিএস কেন্দ্রে সহায়িকা পদে নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। মিথিলাদেবী আদালতেও মামলা করেন। এ প্রসঙ্গে সুভাষবাবুর সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, “আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পালন করেছি।” আদালত না বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, কার নির্দেশে ওই সহায়িকাদের পদ থেকে সরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে মুখ খোলেননি জেলা প্রকল্প আধিকারিক সূর্যকুমার জানাও। তাঁর কথায়, “এখনই বিশদে বলতে পারছি না। কাগজপত্র দেখতে হবে।” মিথিলাদেবী অবশ্য বলেন, “আদালতের নির্দেশেই এটা হয়েছে। আমাদের অভিযোগের যে সত্যতা রয়েছে, সিডিপিও-র এই নির্দেশই তার প্রমাণ।”
এই সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন পদচ্যুত ৩১ জন সহায়িকা। পুঞ্চার টাটাড়ি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকা কল্যাণী সিং সর্দার, পশ্চিম পুঞ্চা কেন্দ্রের কমলা মাহাতো, হাড়গড়া কেন্দ্রের ভানুমতি দত্তরা বলেন, “কেন আমাদের পদ থেকে সরানো হল, কিছু বুঝতে পারছি না। আমরা ১১ মাস ধরে কেন্দ্রে কাজ করে আসছি।” কমলাদেবীর দেওর, পুঞ্চা ব্লক তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণপদ মাহাতো বলেন, “এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আমরা আদালতে যাব।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১০ সালের জুন মাসে পুঞ্চা এলাকায় ৩১ জন সহায়িকা পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। কিন্তু, বিভিন্ন কারণে ওই পদগুলিতে নিয়োগ সম্ভব হয়নি। গত বছর মার্চে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী ও সহায়িকা পদে নিয়োগের জন্য ছ’জনের একটি কমিটি থাকে। সিডিপিও, স্থানীয় বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের প্রতিনিধি এবং স্থানীয় বিধায়ক এই কমিটির সদস্য হন। পদাধিকার বলে বিধায়ক কমিটির চেয়ারম্যান। সম্প্রতি স্থানীয় বিধায়কের পরিবর্তে জেলার এক মন্ত্রীকে কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। |