আদ্রায় উড়ালপুলের আশ্বাস রেল প্রতিমন্ত্রীর
রেলের ভাঁড়ার শূন্য। এই অবস্থায় রাজ্যগুলির সঙ্গে যৌথ ভাবে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ করতে চাইছে রেল। পুরুলিয়ায় জয়চণ্ডীপাহাড় স্টেশনের নতুন ভবনের উদ্বোধন করতে এসে সোমবার এ কথা জানান রেল প্রতিমন্ত্রী অধীররঞ্জন চৌধুরী।
কেন এই সিদ্ধান্ত? অধীরবাবু জানিয়েছেন, রেলকে আর্থিক সঙ্গতির কথা মাথায় রেখে এগোতে হয়। রেল আর্থিক দিক দিয়ে এখন সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। ২৫ হাজার কোটি টাকা রেলের ঘাটতি। আজকের দিনে রেলের যে প্রকল্পগুলির কাজ চলছে, তা শেষ করতে ১ লক্ষ ৮৯ হাজার কোটি টাকা লাগবে। মন্ত্রীর কথায়, “রেল যা চাইছে তা সম্পন্ন করতে গেলে রাজ্যগুলির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়, তামিলনাড়ু-সহ দশটি রাজ্যের সরকার রেলের প্রস্তাবে সম্মত হয়ে তাদের রাজ্যে রেলের প্রকল্পগুলিতে ‘কস্ট শেয়ারিং’ করতে রাজিও হয়েছে।”
সোমবার নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন অধীর চৌধুরী। ছবি: প্রদীপ মাহাতো।
রেলের নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকসভায় সিপিএমের দলনেতা বাসুদেব আচারিয়া। তাঁর বক্তব্য, “অনেক আগে কিছু প্রকল্পে ‘কস্ট শেয়ারিং’ করত কিছু রাজ্য। কিন্তু রেল কখনওই রাজ্যগুলিকে লভ্যাংশ দেয় না। ফলে রাজ্যগুলি রেলের প্রকল্পে যৌথভাবে কাজ করতে রাজি হবে কেন।”
আদ্রার পাশেই জয়চণ্ডীপাহাড় স্টেশনের নতুন ভবনটি প্রায় দু’কোটি টাকা ব্যয়ে কোচবিহারের রাজবাড়ির আদলে নির্মাণ করা হয়েছে। বাসুদেববাবু রেলের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান থাকার সময়েই জয়চণ্ডীপাহাড়কে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে নতুন ভাবে স্টেশন ভবন নির্মাণে উদ্যোগী হয়েছিলেন। এ দিন অনুষ্ঠানেও বাসুদেববাবু আদ্রা ও জয়চণ্ডীপাহাড় রেলগেটের কাছে উড়ালপুল নির্মাণে রেলকে উদ্যোগী হওয়ার দাবি জানান মন্ত্রীকে। অনুষ্ঠানের আগে রেলকর্মী সংগঠন দক্ষিণ-পূর্ব মেন্স কংগ্রেসও মন্ত্রীকে একই দাবিতে স্মারকলিপি দেয়। আদ্রায় রেলের তরফেই উড়ালপুল (আরওবি) নির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রেল প্রতিমন্ত্রী। বলেছেন, “আদ্রার ক্ষেত্রে অন্তত রাজ্য সরকারের সাহায্য লাগবে না। কারণ, আদ্রায় রেলের নিজস্ব জমি রয়েছে।” ঘটনা হল, এ বারের রেল বাজেটে উড়ালপুল নির্মাণের ঘোষণা থাকলে বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে চলেছে রেলের বিভাগীয় সদর এই রেলশহরে।
আদ্রা-গড়ধ্রুবেশ্বর বা আদ্রা-শাঁকা ডাবল লাইন করা, জয়চণ্ডীপাহাড় থেকে হাওড়া যাওয়ার সরাসরি ট্রেন চালু, ঝাড়গ্রাম-আদ্রা রেলপথ, আদ্রার ওয়াগন মেরামত কেন্দ্রকে ওয়াগন উৎপাদন কেন্দ্রে রূপান্তর, আদ্রায় বন্ধ থাকা লোকো শেডকে মেমু রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা-সহ একাধিক দাবি মন্ত্রীর কাছে করেন সিপিএম সাংসদ।

সৌজন্য-বিতর্ক
রেলের বিরুদ্ধে অসৌজন্যের অভিযোগ তুললেন রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরি। সোমবার যে জয়চণ্ডীপাহাড় স্টেশনের নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন রেল প্রতিমন্ত্রী, সেটি রঘুনাথপুর বিধানসভার মধ্যে পড়ে। অনুষ্ঠানে সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া, বিধায়ক সুমিতা বাউরি, পাড়ার কংগ্রেস বিধায়ক উমাপদ বাউরি উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না পূর্ণচন্দ্রবাবু। তৃণমূল বিধায়কের অভিযোগ, অনুষ্ঠানের দু’দিন আগে রেলের তরফে তাঁকে ফোন করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছিল। কোনও আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়নি। বিধায়ক বলেন, “আমন্ত্রণ জানানোর পদ্ধতি আমার কাছে অসৌজন্যমূলক বলে মনে হওয়ায় অনুষ্ঠানে যাইনি। কংগ্রেসের হাতে রেল মন্ত্রক থাকায় রেলের অনুষ্ঠানে ওরা ‘আমরা-ওরা’র রাজনীতি করছে।” দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সৌমিত্র মজুমদার বলেন, “সদর দফতর থেকে আমরা বিধায়কদের আমন্ত্রণপত্র আদ্রার ডিআরএমের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।” ডিআরএমের দাবি, পুরুলিয়া,বাঁকুড়াদুই জেলার সব বিধায়ককেই আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.