|
|
|
|
বিদ্যুদয়নের দাবিতে অবরোধ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
গ্রামে বিদ্যুদয়নের দাবি তুলে ব্যস্ত রাজ্য সড়কে কাঠের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করলেন তৃণমূল সমর্থকরা।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থানার দরবার মোড়ের কাছে ময়না-মেদিনীপুর সড়কে স্থানীয় ভাণ্ডারচক গ্রামের কয়েকশো তৃণমূল সমর্থক অবরোধ-বিক্ষোভ দেখান। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নাকাল হন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পড়ুয়া-শিক্ষক, নিত্যযাত্রী-সহ কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ। প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরোধ চলে।
তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত। জেলা পরিষদ ও রাজ্যেও ক্ষমতায় তৃণমূল। তা সত্ত্বেও তৃণমূলেরই সমর্থকেরা এই ভাবে বিক্ষোভ দেখানোয় গুঞ্জন ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। খবর এ-ও, ময়নার বাসিন্দা তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সভাধিপতি গান্ধী হাজরা এই পথেই জেলা পরিষদ অফিসে যান। এ দিন মূলত তাঁর গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা ছিল বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর। কিন্তু সভাধিপতি এদিন মেদিনীপুরে গিয়েছিলেন বলে ওই রাস্তা ব্যবহার করেননি। ফলে অবরোধকারীদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। |
|
ময়না-মেদিনীপুর রাস্তায় অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র। |
অবরোধে দলের একাংশের জড়িত থাকার কথা মেনে নিয়ে সভাধিপতি গান্ধী হাজরা বলেন, ‘‘ওই অবরোধে সিপিএমের লোকজনের সঙ্গে আমাদের দলীয় সমর্থকদের একাংশ ছিল। বিদ্যুতের দাবি নিয়ে যাতায়াতের পথে ওরা আমার গাড়ি আটকানোর পরিকল্পনা করেছিল বলে শুনেছি।” সভাধিপতির কথায়, “ঠিকাদার সংস্থা বদল হওয়ায় ওই গ্রামে বিদ্যুদয়নের কাজ নিয়ে কিছু সমস্যা হয়েছিল। নতুন ঠিকাদার শীঘ্রই কাজ করবে বলে গ্রামবাসীদের বোঝানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও কিছু লোক এ দিন সড়ক অবরোধ করেন। এই ভাবে রাস্তা আটকানো ঠিক হয়নি।”
বস্তুত জেলায় বিদ্যুদয়নের কাজও যথেষ্টই এগিয়েছে বলে দাবি জেলা পরিষদের। জেলার ৩০৬৪টি মৌজার মধ্যে ২৭০০টিতেই বিদ্যুৎ পৌঁছে গিয়েছে বলে দাবি জেলা প্রশাসনের। তবে, নিবিড় বিদ্যুদয়ন অর্থাৎ সর্বত্র বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কাজ এখনও বাকি।
ময়না-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ভাণ্ডারচক গ্রামে প্রায় ২০০টি পরিবার রয়েছে। ওই গ্রামে সার্বিক বিদ্যুদয়নের জন্য রাজীব গাঁধী গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন যোজনায় দু’টি ট্রান্সফর্মার-সহ বিদ্যুতের খুঁটি পুঁতে কাজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু গত কয়েকমাস সেই কাজ আর এগোয়নি।
অবিলম্বে বিদ্যুদয়নের দাবি তুলে এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ ময়না-মেদিনীপুর সড়ক অবরোধ করেন ভাণ্ডারচক গ্রামের পুরুষ-মহিলা মিলিয়ে প্রায় শ’দুয়েক বাসিন্দা। ব্যস্ত ওই রাজ্য সড়কে তৃণমূল সমর্থকদের অবরোধের জেরে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সাড়ে ১২টা নাগাদ স্থানীয় ময়না-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান চন্দন মণ্ডল অবরোধকারীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য লিখিত প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ ওঠে।তৃণমূল পরিচালিত ময়না পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাধানাথ গাঁতাইত জানান, ব্লকের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে বাকচা বাদে অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুদয়নের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ভাণ্ডারচক গ্রামে বিদ্যুদয়নের কিছুটা কাজ হয়েছিল। ঠিকাদার সংস্থা বদল হওয়ার কারণে কাজে দেরি হচ্ছে ওই গ্রামে। তিনি বলেন, “এই নিয়ে গ্রামবাসীদের বোঝানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও ওঁরা অবরোধ করেন। গ্রামবাসীদের মধ্যে আমাদের দলের সমর্থকরাও ছিলেন। তবে আমাদের না জানিয়েই তাঁরা গিয়েছিলেন।” |
|
|
|
|
|