অঙ্গনওয়াড়ির হাল ফেরাতে বৈঠকে মন্ত্রী
কোথাও প্রশিক্ষক নেই। কোথাও নেই কর্মী, পরিদর্শক। বাড়িও নেই বেশিরভাগ কেন্দ্রের। পশ্চিম মেদিনীপুরের অঙ্গনওয়াড়িগুলিতে নেইয়ের তালিকা খুবই দীর্ঘ। সোমবার এ সব নিয়েই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করলেন বিভাগীয় মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে মন্ত্রী জানান, “কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। বাড়ি তৈরিরও ব্যবস্থা হচ্ছে। প্রশাসন যাতে আরও সক্রিয় ভাবে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি পরিচালনা করে তা জানানো হয়েছে।”
জেলায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে ৯০০৯টি। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন প্রশিক্ষক ও একজন কর্মী থাকার কথা। প্রশিক্ষকেরা বাচ্চাদের পড়াবেন। আর কর্মীরা রান্না করে শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টিকর খাবার দেবেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, জেলার ৫৪৮টি কেন্দ্রে প্রশিক্ষক নেই। ফলে ওই সব কেন্দ্রে পড়াশোনা ব্যবস্থা নেই। শিশু ও গর্ভবতী মায়েরা শুধু খাবারটুকু পান। ৮৮১ কেন্দ্রে নেই কর্মী। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে প্রশিক্ষকেরাই রান্নার দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু এক দিকে রান্না ও অন্য দিকে পড়ার দায়িত্ব তিনি সামলাবেন কী করে? প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই কেন্দ্রেও পড়াশোনার পাঠ নেই। প্রশিক্ষকেরা রান্না করে খাবার দিয়েই বাড়ি চলে যান।
জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বিভাগীয় মন্ত্রী। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
এই সব কেন্দ্রগুলি কেমন চলছে, পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হচ্ছে কিনা, পড়াশোনা করানো হচ্ছে কিনা তা দেখভাল করার জন্য পরিদর্শকও থাকার কথা। জেলায় এরকম ৩৯৪টি পরিদর্শকের পদ রয়েছে। কিন্তু তার বেশিরভাগ পদই শূন্য! মাত্র ১৩১ জন পরিদর্শক রয়েছেন? অর্থাৎ এক একজন পরিদর্শকের দায়িত্ব ছিল গড়ে ২২টি করে কেন্দ্র পরিদর্শনের। কিন্তু কর্মী সংখ্যার অপ্রতুলতার কারনে সেই সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৬৬টিতে! কারণ, পরিদর্শক রয়েছেন তো মাত্র এক তৃতীয়াংশ। ফলে পরিদর্শনও নিয়মিত দুরের কথা, হয়নি বললেই চলে। এই পরিস্থিতিতে আদৌ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি কেমন চলছে সে বিষয়ে সঠিক তথ্যও জেলা প্রশাসনের কাছে আসে না। কর্মী সংখ্যা কম থাকায় প্রশাসনও কর্মীদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে না।
এছাড়াও বাড়ির সমস্যা তো রয়েছেই। ৯ হাজার ৯ টি কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ২ হাজার ৮৭৩ টির নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। ১ হাজার ৮৩ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলে খোলা আকাশের নীচে বা গাছতলায়! ১ হাজার ৯৯৮ টি বেসরকারি জায়গায় অর্থাৎ ক্লাব, আটচালাতে। ২ হাজার ৩০৮ টি অন্যান্য সরকারি জায়গায় চলে। শহরাঞ্চলে ৩৩১ টি কেন্দ্র চলে ভাড়া বাড়িতে। এভাবেই চলছে কেন্দ্রগুলি। মন্ত্রী অবশ্য এ বার আশ্বাস দিয়েছেন যে, কর্মী নিয়োগ থেকে শুরু করে বাড়ি তৈরির জন্য পদক্ষেপ করবে সরকার। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে রাজ্যস্তরে বৈঠকও রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, “কর্মী নিয়োগের সঙ্গে সঙ্গে আগামী দু’বছরে কতগুলি বাড়ি তৈরি করা যাবে তা নিয়ে শীঘ্রই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।” এ দিনের বৈঠকে জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম দত্ত সহ জেলা প্রশাসনিক কর্তারা ও মহকুমাশাসকেরাও উপস্থিত ছিলেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.