সম্পত্তি হাতাতে গিয়ে বাধা পেয়েই রিষড়ায় খুন প্রৌঢ়া |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীরামপুর |
নলি কেটে, কুপিয়ে মাস চারেক আগে রিষড়ার সুভাষনগর আবাসনের বাসিন্দা রুক্মিনী সিংহ নামে এক প্রৌঢ়াকে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা। সেই খুনের কিনারা হয়েছে বলে দাবি করল পুলিশ। গত ১ ফেব্রুয়ারি ওই মহিলার ছোট ভাই অরুণ সিংহ এবং ভাইয়ের বন্ধু রাজকুমার যাদবকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, ওই প্রৌঢ়ার বাধায় অরুণ বাবার সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে পারেনি। সেই কারণে বন্ধুর সাহায্য নিয়ে রুক্মিনীদেবীকে খুনের ছক কষেছিল অরুণ।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারেন, খুনের পরে রুক্মিনীদেবীর আলমারি থেকে তাঁর বাবার চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু নথিপত্র খোয়া যায়। পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের পিছনে পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের ধারণা দৃঢ় হয় তদন্তকারীদের। এসডিপিও (শ্রীরামপুর) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই প্রৌঢ়ার খুনের কিনারা হয়ে গিয়েছে। যাবতীয় সাক্ষ্যপ্রমাণ ধৃতদের দিকেই অঙ্গুলিনির্দেশ করছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সে দিনের ঘটনায় জড়িত বাকিদের চিহ্নিত করারও চেষ্টা চলছে।” শনিবার ধৃতদের শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক দু’জনকেই ন’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
রুক্মিনীদেবীর বাপেরবাড়ি জামশেদপুরের বিষ্টুপুর থানার বেলদি শিবমন্দির এলাকায়। তাঁরা ছিলেন তিন বোন, দুই ভাই। সেখানে তাঁদের পারিবারিক কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। পুলিশ জানায়, সম্পত্তি নিয়ে চার দাদা-দিদির সঙ্গে বিবাদ চলছিল অরুণের। চার ভাইবোনের পক্ষে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন রুক্মিনীদেবীই। তদন্তকারীরা জানান, ২০১০ সালে বাবার মৃত্যুর পরেই অরুণ পরিবারের লোকজনকে একটি ‘উইল দেখিয়ে জানায়, বাবা যাবতীয় সম্পত্তি তার নামে লিখে দিয়েছেন। কিন্তু জামশেদপুরের আদালতে ওই উইলকে ‘চ্যালেঞ্জ’ করেন রুক্মিনীদেবীরা। দেখা যায়, যে সময় ‘উইল’টি তৈরি হয়েছে, সেই সময় রুক্মিনীদেবীর তত্ত্বাবধানেই তাঁর বাবা কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেই চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিপত্র আদালতে দাখিলও করেন রুক্মিনীদেবী। কিন্তু রুক্মিনীদেবীর খুন হওয়ার পরে দেখা যায়, সেই নথি লোপাট হয়েছে। ওই নথিপত্র যাতে ফের আদালতে জমা না পড়ে সেই কারণেই অরুণের উপরে খুনের সন্দেহ দৃঢ় হয় পুলিশের। তাদের দাবি, ঘটনার দিন রাজকুমার রুক্মিনীদেবীর ফ্ল্যাটে গিয়েছিল। চেনা হওয়ায় তাকে সন্দেহ করেননি প্রৌঢ়া। পুলিশের ধারণা, রাজকুমারের সঙ্গে আরও দু’জন পেশাদার খুনি ছিল। তারাই খুন করে।
|