সংযত হোন রাজনীতির কারবারিরা, বললেন স্পিকার
বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে রাজনীতিকদের সংযত আচরণ করা উচিত বলে মন্তব্য করলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
রবিবার বিকেলে হাবরার বাণীপুর লোক উৎসবের উদ্বোধন মঞ্চ থেকে তিনি যখন এই কথা বলছেন, ঘটনাচক্রে তখন সেই মঞ্চেই বসে খাদ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সিপিএমের বিরুদ্ধে যাঁর ‘বিষোদ্গার’ শালীনতার গণ্ডি ছাড়িয়েছে বলে বার বারই অভিযোগ উঠেছে। তিনি এর আগে সিপিএমের সঙ্গে ‘সামাজিক সম্পর্ক’ ছিন্ন করার পরামর্শও দিয়েছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের। এ দিন বিমানবাবুর বক্তব্যকে জ্যোতিপ্রিয়র প্রতি দলের উপরতলার ‘বার্তা’ বলেই মনে করছেন তৃণমূলের একাংশ।
ঘটনা হল, বিমানবাবুর সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে কিছু না বললেও কয়েক ঘণ্টা আগেই বসিরহাটে ‘স্বমূর্তি’তেই ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। সেখানে তৃণমূলের পঞ্চায়েতিরাজ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, “ঘরে কেউটে-গোখরো ঢুকলে তার সঙ্গে যে ব্যবহার করা উচিত, ওদের (সিপিএম) সঙ্গে তাই করবেন।” কয়েকদিন আগে সিপিএমের প্রতি প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের ‘বিতর্কিত’ মন্তব্যর সমর্থনও করেছেন খাদ্যমন্ত্রী। আবার ওই সম্মেলনেই দলের সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি শুভেন্দু অধিকারীও এ দিন সিপিএম নেতাদের ‘গোখরো সাপে’র সঙ্গে তুলনা করেছেন।
জ্যোতিপ্রিয়, কাকলির সঙ্গে এক মঞ্চে স্পিকার। বাণীপুরে। —নিজস্ব চিত্র
সাম্প্রতিক সময়ে শাসক দলের সভামঞ্চ থেকে বিরোধীদের উদ্দেশে কুৎসা ও কটূক্তির খামতি নেই। কিন্তু রাজ্যের মানুষের কাছে যে এতে ভাল বার্তা যাচ্ছে না, সে কথা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। যে কারণে দলের মহাসচিব তথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও ক’দিন আগে রাজনীতির কারবারিদের সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
রবিবার হাবরার অনুষ্ঠানে বিমানবাবুও বলেন, “আমাদের আরও সংযত আচরণ করা উচিত। বক্তব্য এমন জায়গায় থাকা উচিত, যাতে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি বজায় থাকে। বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে রাজনীতিকদের সংযত মন্তব্য করতে হবে। বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই নয়, এমন কোনও মন্তব্য না করাই ভাল।” ক্ষমতায় থাকাকালীন বাম নেতারাও অবশ্য ‘অশালীন’ মন্তব্য করে বহু বার বিতর্কে জড়িয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ফব নেতা দেবব্রত বিশ্বাসও তৃণমূলের বিরুদ্ধে কটূ মন্তব্য করে পরে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের নেতা-নেত্রীদের মধ্যে সেই দৃষ্টান্ত কার্যত বিরল।
এ দিন নিজের বিধানসভা কেন্দ্র হাবরার অনুষ্ঠানে সংযত থাকলেও, বিমানবাবুর পরে বক্তৃতা করতে উঠে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “লোক-সংস্কৃতি উৎসবে আমি চাই না রাজনীতি ঢুকে পড়ুক।” দলের জেলা নেতৃত্বের একাংশের মতে, স্পিকারের দেওয়া ‘বার্তা’ তিনি যে মানতে পারছেন না, এ ভাবেই তা বুঝিয়ে দিলেন জ্যোতিপ্রিয়। খাদ্যমন্ত্রী নিজে অবশ্য বলেন, “বিমানদার এই বক্তব্য আমি সমর্থন করি। কারণ, কিছু নেতা টিভির পর্দায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কুৎসা করে চলেছেন। তাদের প্রতিই এটা বলেছেন উনি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.