|
|
|
|
উত্তর ২৪ পরগনা |
বসিরহাটকেই পাখির চোখ করছে তৃণমূল |
নির্মল বসু • বসিরহাট |
বসিরহাট মহকুমাকেই এ বার ‘পাখির চোখ’ করে উত্তর ২৪ পরগনায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়তে নামছে শাসক দল। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে রবিবার বসিরহাট স্টেডিয়ামে তৃণমূলের ‘জেলা পঞ্চায়েতিরাজ সম্মেলন’ তেমনই ইঙ্গিত দিল।
তৃণমূলের রাজ্য পঞ্চায়েত সেলের আহ্বায়ক নারায়ণ গোস্বামী সম্মেলনে স্বীকারই করেছেন, “জেলার মধ্যে এই মহকুমায় পঞ্চায়েতের আসন বেশি বলে এখানে সম্মেলন করা হল।”
মহকুমার মোট ১০টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে সাতটি তৃণমূলের এবং তিনটি কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। ৯০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে প্রায় অর্ধেক তৃণমূলের। জেলা পরিষদের ২৪টি আসনের মধ্যে সিপিএমের দখলে রয়েছে ১৫টি, কংগ্রেসের ৫টি এবং তৃণমূলের ৪টি। আটটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে চারটি তৃণমূলের। তবে, এ দিন যে এলাকায় সম্মেলন হয়, সেই বসিরহাট-১ পঞ্চায়েত সমিতি রয়েছে কংগ্রেসের দখলে। এলাকাটি বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এখানকার বিধায়ক সিপিএমের। পাশের বসিরহাট-২ এবং বাদুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতিও কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। কংগ্রেসকে তাদের শক্ত ঘাঁটিতে এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে ধাক্কা দিতেই বসিরহাট স্টেডিয়ামে ‘পঞ্চায়েতিরাজ সম্মেলনের’ আয়োজন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
পঞ্চায়েত ভোটের দিকে লক্ষ্য রেখে বসিরহাটের উন্নয়নে যে জোর দেওয়া হচ্ছে, তার ইঙ্গিত মিলেছে এ দিন সম্মেলনে উপস্থিত খাদ্যমন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বক্তব্যেও। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে বসিরহাট মহকুমার উন্নয়নের জন্য জেলা পরিষদে থাকা সাড়ে চার কোটি টাকা থেকে তিন কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বসিরহাট মহকুমাকে। দু’টি প্রকল্পে জেলায় যে ৪০টি রাস্তার উন্নয়ন হয়েছে, তার মধ্যে বসিরহাটের রয়েছে ২৮টি। আয়লা কবলিত এখানকার সুন্দরবন এলাকার মানুষের জন্য কয়েক লক্ষ টন চাল দেওয়া হয়েছে।”
পঞ্চায়েত ভোটে বসিরহাটে কংগ্রেস যাতে সুবিধা করতে না পারে তার জন্য তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী থেকে মুকুল রায় সকলেই এ দিন কেন্দ্রের সমালোচনায় সরব হন। রেয়াত করা হয়নি বামেদেরও। তৃণমূলের এক নেতা স্বীকার করেছেন, বাম-বিরোধী ভোট যাতে এ বার তাঁদের পক্ষে আসে তাই বসিরহাটে জোর দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, “বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনে জোট থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেস গোঁজপ্রার্থী দেওয়ায় হেরে যেতে হয়েছিল তৃণমূলকে। এ বারে যাতে বাম-বিরোধী তাদের পক্ষে আসে, তাই বসিরহাটে জোর দেওয়া হচ্ছে।” যা শুনে প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি অসিত মজুমদার বলেন, “কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটিতে সভা করে ওরা (তৃণমূল) যদি মনে করে পঞ্চায়েত ভোটে সুবিধা করবে, তা হলে ভুল ভাবছে।” সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য নিরঞ্জন সাহা বলেন, “উন্নয়নের লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ওরা সম্মেলন করতে পারে, কিন্তু এখানে পঞ্চায়েত ভোটে বিশেষ সুবিধা করতে পারবে না। ওদের পায়ের তলার মাটি টলে গিয়েছে।” সম্মেলনের টাকা দলীয় কর্মী-সমর্থকদের থেকেই জোগাড় করা হয়েছে বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের। |
|
|
|
|
|