সুপ্রিয় মুখোপাধ্যায় • নয়াদিল্লি |
প্রত্যাশিত ভাবেই কোরিয়া ম্যাচ শেষ হওয়া মাত্র এআইটিএ বিদ্রোহী প্লেয়ারদের জোটের সঙ্গে মিটমাটের লক্ষ্যে তিন সদস্যের কমিটি গড়ল। যাতে আছেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দীপক বর্মা, প্রাক্তন ডেভিসকাপার নরেশ কুমার এবং অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার, হরিয়ানা সরকারের প্রাক্তন চিফ সেক্রেটারি এম সি গুপ্ত। তিন জনের কেউই টেনিস ফেডারেশনের সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত নন, এই কারণ দেখিয়ে এআইটিএ সদ্য গঠিত কমিটিকে ‘নিরপেক্ষ’ বলেছে। পাশাপাশি আবার জানা যাচ্ছে, খন্না টেনিস কমপ্লেক্সে আজ ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটির জরুরি বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এই কমিটি শুধুই প্লেয়ারদের ব্যাপারে সব খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবে এআইটিএ-কে। নন-প্লেয়িং ক্যাপ্টেন, কোচ এবং সাপোর্ট স্টাফের ব্যাপারে এই কমিটির মতামত দেওয়ার ক্ষমতা থাকছে না। এমনকী প্লেয়ারদের ব্যাপারেও কমিটির পরামর্শ এআইটিএ-কে যে মেনে নিতেই হবে সে রকমও কিছু বাধ্যবাধকতা নেই।
এতে কী করে কমিটির নিরপেক্ষতা থাকল জানতে চাইলে এআইটিএ-র সিইও হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় বললেন, “আশা করি, এমন কোনও পরামর্শ কমিটির রিপোর্টে থাকবে না যেগুলো কাজে প্রয়োগ করতে এআইটিএ-র অসুবিধে হবে। প্লেয়ার আর ফেডারেশন দু’তরফের কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে, সে রকম পরামর্শই আশা করি এই কমিটি তাদের রিপোর্টে দেবে।”
সোমদেবদের এগারো প্লেয়ারের জোটের দাবি মতোই পেমেন্ট, বিমানের ভাড়া দিতে এআইটিএ রাজি হয়ে যাওয়ার পরেও এই কমিটি গড়ার দরকার পড়ল কেন প্রশ্ন উঠলে হিরণ্ময়বাবু বলেন, “এ সব নিয়ে ব্ল্যাকমেলিংয়ের মতো ব্যাপার অনেক দিন ধরে চলছে। ফেডারেশন চায়, প্লেয়ারদের সঙ্গে যাবতীয় সমস্যা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মিটিয়ে ফেলতে। তার জন্য একটা সুষ্ঠু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য এই কমিটি গড়া হয়েছে।” সেটা যে ঠিক, তা বোঝা যাচ্ছে। কারণ, চার মাস সময় এই কমিটিকে তাদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য দিয়েছে এআইটিএ। কিন্তু তার আগেই এপ্রিলের গোড়ায় ভারতের পরের ডেভিস কাপ ম্যাচ আছে। সে জন্য চলতি ফেব্রুয়ারিতেই নরেশ কুমার-দীপক বর্মারা একসঙ্গে মিলিত হয়ে খুব তাড়াতাড়ি একটা অন্তর্বর্তীকালীন রিপোর্ট এআইটিএ-র কাছে জমা দেবেন। যাতে ইন্দোনেশিয়া ম্যাচের আগেই বিদ্রোহী প্লেয়ার জোটের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারে ফেডারেশন।
কিন্তু গোটা ব্যাপারটা কি এতটাই সহজ-সরল? কারণ ভারতীয় টেনিসমহলের কেউ কেউ এ দিনই রাতে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন, সোমদেবরা না এ বার আরও বেঁকে বসেন! প্রথমত ক্যাপ্টেন-কোচ পছন্দের ব্যাপারটা সেই পুরোপুরি ফেডারেশনের হাতেই থাকছে। যা নিয়ে বিদ্রোহী জোটের তীব্র আপত্তি। দ্বিতীয়ত, কমিটি যে সব পরামর্শ দেবে সেগুলো যে ফেডারেশনকে মানতেই হবে সে রকম বাধ্যবাধকতাও থাকছে না। তৃতীয়ত, প্রাক্তন নন-প্লেয়িং ক্যাপ্টেন নরেশ কুমারের কাছে লিয়েন্ডার পেজ যে অতিপ্রিয়, সেটা টেনিসমহলে সবার জানা। ফলে নরেশ কুমারকে নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে বিদ্রোহী জোট। এআইটিএ-র সিইও অবশ্য আশাবাদী, “এই কমিটি নিয়ে অন্তত আপত্তি তুলবে না প্লেয়াররা।”
নরেশ কুমারকে যোগাযোগ করা হলে তিনি শুধু বললেন, “আগে এআইটিএ থেকে আমাকে সব জানানো হোক। তার পর মন্তব্য করব। এখন আমার কিছু বলার নেই।” আর বিদ্রোহী প্লেয়ার জোটের মুখপাত্র সোমদেব দেববর্মন গভীর রাতে এসএমএসে শুধু লিখে জানান, ‘নো কমেন্টস। গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।’ |