সরকারি খরচে ছাত্রীনিবাসে থেকে পড়াশোনা করার কথা। কিন্তু ছাত্রীনিবাসের ঘর ঝাঁট দেওয়া, রান্না করা, বাসন মাজতে গিয়ে ফাঁক পড়ছে পড়াশোনাতেরবিবার এমনই অভিযোগে বিক্ষোভ দেখাল সিউড়ি থানা এলাকার নগরী আশ্রমিক বালিকা বিদ্যালয়ের আবাসিক ছাত্রীরা। ১৮০ জন আবাসিকের মধ্যে প্রায় শ’খানেক এ দিন ছাত্রীনিবাস ছেড়ে চলেও যাচ্ছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের বুঝিয়ে-সুজিয়ে ফিরিয়ে আনেন। বিক্ষোভও থামে। তবে ঘটনা শুনে মহকুমাশাসককে (সিউড়ি) তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছেন বীরভূমের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা।
ওই ছাত্রী আবাসে তফসিলি ও আদিবাসী সম্প্রদায়েরছাত্রীরাই থাকে। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেড়িতে পড়ে তারা। এ দিন বিক্ষোভ দেখাতে স্কুল চত্বরে জড়ো হয়েছিল শতাধিক ছাত্রী। তাদের ক্ষোভ, “আমরা পড়াশোনা করতে এসেছি। কিন্তু বছরখানেক ধরে হোস্টেলের কাজেই বেশির ভাগ সময় নষ্ট হয়ে যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।” কী ধরনের কাজ? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রী বলে, “পালা করে ঘর ঝাঁট দেওয়া কিংবা বাসন মাজা তো আছেই। এমনকী, রান্নাটাও আমাদেরই করতে হয়।” |
এই অবস্থা কেন? স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, বছরখানেক আগেই অবসর নিয়েছেন ওই ছাত্রীনিবাসের রাধুঁনি, ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন তাঁর সহকারী। দু’বছর ধরে নেই সাফাইকর্মী ও নৈশপ্রহরী। যে করণিক ওই ছাত্রীনিবাসের কাজকর্ম দেখতেন, আট দিন আগে অবসর নিয়েছেন তিনিও। প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন করা হলেও ওই সব শূন্য পদে লোক আসেনি। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কবিতা সিংহ রায় বলেন, “ছাত্রীনিবাস যাতে উঠে না যায়, তাই আমরা নিজেরাও সেখানকার অতিরিক্ত নানা রকম কাজ করি। ছাত্রীদেরও হয়তো কোনও কোনও কাজে হাত লাগাতে হয়।” তাঁর সংযোজন, “ওই কাজের জন্য পড়াশোনায় ব্যাঘাত হওয়ার কথা নয়। বাড়িতে থাকলেও তো পড়াশোনার পাশাপাশি, বাড়ির কাজেও ছেলেমেয়েদের হাত লাগাতে হয়।”
বিক্ষোভের খবর পেয়ে এ দিন ওই ছাত্রীনিবাসে যান সিউড়ি ১ ব্লক অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ পরিদর্শক সোমনাথ দাস। তিনি বলেন, “আবাসিকদের অভিযোগ শুনেছি। স্কুল কর্তৃপক্ষ কর্মীর সমস্যার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা নির্দিষ্ট জায়গায় ওই আবেদন জানাননি। যাতে সমস্যার সমাধান হয়, তার চেষ্টা করব।” জেলাশাসক বলেন, “মহকুমাশাসককে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছি। রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কর্মী নিয়োগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হবে।” |